বায়ুর উষ্ণতা ও চাপ
Contents
বায়ুর উষ্ণতা ও চাপ

বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতার কারণ কী
ভূগর্ভস্থ তাপ আগ্নেয়গিরি ও প্রস্রবণের মাধ্যমে নিঃসৃত হয়ে বায়ুমণ্ডলে মিশে গেলেও এবং ইউরেনিয়াম , থােরিয়াম , রেডিয়াম প্রভৃতি তেজস্ক্রিয় পদার্থের বিকিরণের জন্য ভূপৃষ্ঠ থেকে সামান্য তাপ নির্গত হলেও বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতার জন্য এই তাপের বিশেষ কোনাে অবদান নেই । বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতার প্রধান উৎস সূর্য । সূর্য থেকে পৃথিবী প্রায় ১৫ কোটি কিমি দূরে থাকলেও পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল প্রধানত সূর্য তাপেই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উষ্ণ হয় ।
পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে বায়ুর উষ্ণতার কি কি বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়
পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে বায়ুর উষ্ণতার কতকগুলি উল্লেখযােগ্য বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায় , যেমন —
( ১ ) নিরক্ষীয় অঞ্চলে বায়ুর উষ্ণতা সবচেয়ে বেশি এবং মেরু অঞ্চলে সবচেয়ে কম ।
( ২ ) নিরক্ষীয় অঞ্চলে সারা বছর উষ্ণতা প্রায় সমান থাকে , কিন্তু মেরু অঞ্চলে শীতকাল ও গ্রীষ্মকালের মধ্যে পার্থক্য খুব দেখা যায় ।
( ৩ ) পৃথিবীর বার্ষিক গতির জন্য জানুয়ারি মাসে দক্ষিণ গােলার্ধে এবং জুলাই মাসে উত্তর গােলার্ধে উষ্ণতা বেশি হয় ।
( ৪ ) উচ্চতার তারতম্যের জন্য বায়ুর উষ্ণতার তারতম্য ঘটে । সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে গড়ে প্রতি ১ কিমি উচ্চতায় প্রায় ৬.৫° সে হারে উষ্ণতা কমে যায় ।
বায়ুর উষ্ণতা পরিমাপ করা হয় কীভাবে
বায়ুর উষ্ণতা পরিমাপ করা হয় থার্মোমিটার বা তাপমান যন্ত্রের সাহায্যে । এই তাপমান যন্ত্রে ফারেনহাইট স্কেল এবং সেলসিয়াস স্কেল — দু-ভাবেই উষ্ণতা পরিমাপ করা যায় । ফারেনহাইট থার্মোমিটারের হিমাঙ্ক ৩২°F এবং স্ফুটনাঙ্ক ২১২°F । সেলসিয়াস থার্মোমিটারের হিমাঙ্ক ০°C এবং স্ফুটনাঙ্ক ১০০°C ।
দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উষ্ণতা পরিমাপ করার জন্য সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমান যন্ত্র ব্যবহার করা হয় । কোনাে দিনের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন উষ্ণতা থেকে ওই দিনের গড় উষ্ণতা নির্ধারণ করা যায় । একইভাবে , বিভিন্ন দিনের গড় উষ্ণতা থেকে মাসের গড় উষ্ণতা এবং বিভিন্ন মাসের গড় উষ্ণতা থেকে বছরের গড় উষ্ণতা নির্ধারণ করা যায় ।
বায়ু উত্তপ্ত হয় কী কী পদ্ধতিতে
বায়ুমণ্ডলের উত্তপ্ত হওয়ার প্রধান উৎস সূর্য হলেও সূর্যরশ্মিতে সরাসরি বায়ুমণ্ডল বিশেষ উষ্ণ হয় না । সূর্যতাপে প্রথমে ভূপৃষ্ঠ উষ্ণ হয় এবং উষ্ণ ভূপৃষ্ঠের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডল তিনটি পদ্ধতিতে উত্তপ্ত হয় । যেমন ー ( ১ ) বিকিরণ পদ্ধতি , ( ২ ) পরিবহন পদ্ধতি এবং ( ৩ ) পরিচলন পদ্ধতি ।
ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলে উষ্ণ মরুভূমি সৃষ্টির কারণ
আফ্রিকার সাহারা ও কালাহারি , দক্ষিণ আমেরিকার আটাকামা , ভারত-পাকিস্তানের থর , আমেরিকার সােনােরা , আরবের মরুভূমি প্রভৃতি পৃথিবী বিখ্যাত উষ্ণ মরুভূমিগুলি ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলে সৃষ্টি হয়েছে । এর কারণ — এই অঞ্চলগুলি উপক্ৰান্তীয় ( কর্কটীয় ও মকরীয় ) উচ্চচাপ বলয়ের অন্তর্গত । যেহেতু এইসব অঞ্চলে বায়ু ওপর থেকে নীচে নামে , তাই উষ্ণতা ও জলীয় বাষ্প ত্যাগ করার পরিবর্তে বায়ুর এগুলি গ্রহণ ও ধারণ করার ক্ষমতা বেড়ে যায় । এজন্য এইসব অঞ্চলে বৃষ্টিপাত বিশেষ হয় না । উষ্ণমণ্ডলে অবস্থিত এবং বৃষ্টিহীন হওয়ায় এইসব অঞ্চলে বিস্তৃত উষ্ণ মরুভূমি সৃষ্টি হয়েছে ।
উচ্চস্থান শীতল হয় কেন
ভূমির উচ্চতা অনুসারে বায়ুর তাপমাত্রা হ্রাস পায় । একে বলে ‘ তাপমাত্রা স্বাভাবিক হ্রাসের হার ’ ( normal temperature lapse rate ) । তাপমাত্রা হ্রাসের এই হার হল প্রতি ১,০০০ মিটারে প্রায় ৬.৫° সে. । এজন্য একই অক্ষাংশে অবস্থিত হলেও সমতল স্থানের তুলনায় উঁচু স্থানের তাপমাত্রা কম হয় । যেমন — উগান্ডার রাজধানী কাম্পালা ( উচ্চতা ১,১৯২ মি ) এবং ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটো ( উচ্চতা ২,৮১৯ মি ) প্রায় একই অক্ষাংশে অবস্থিত হলেও উচ্চতা বেশি বলে কাম্পালার চেয়ে কুইটোর গড় তাপমাত্রা ৮° সে কম । উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা কমে যায় । কারণ —
( ১ ) সূর্যতাপে বায়ুমণ্ডল সরাসরি বিশেষ উষ্ণ হয় না । সূর্যতাপে প্রথমে ভূপৃষ্ঠ উষ্ণ হয় এবং পরে ওই উষ্ণ ভূপৃষ্ঠের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডল উষ্ণ হয় । এজন্য ভূপৃষ্ঠ থেকে ক্রমশ ওপরের দিকে তাপমাত্রা কমে যায় ।
( ২ ) ওপরের বায়ুস্তরের চাপ কম , ফলে ঘনত্বও কম । ঘনত্ব কম হলে তাপমাত্রা কম হয় ।
( ৩ ) ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকীর্ণ তাপের খুব কম অংশই ওপরে পৌঁছােয় ।
( ৪ ) ওপরের বায়ুতে ধূলিকণা ও জলীয় বাষ্প কম বলে ওই বায়ুর তাপ শােষণ ও সংরক্ষণ ক্ষমতাও কম ।
( ৫ ) ক্রমশ ওপরের দিকে বায়ুস্তর পাতলা হয়ে যায় । তাই তাড়াতাড়ি তাপ বিকিরণ করে শীতল হয় । এইসব কারণে উচ্চস্থান শীতল হয় এবং সুউচ্চ পর্বত শিখর তুষারাবৃত থাকে ।
বায়ুর উষ্ণতার সঙ্গে বায়ুর চাপের সম্পর্ক কি
বায়ুর উষ্ণতার ওপর বায়ুর চাপ নির্ভর করে । কারণ —
( ১ ) বায়ু যখন উষ্ণ হয় তখন তার আয়তন বাড়ে বা প্রসারিত হয় । বায়ু যখন প্রসারিত হয় তখন তার চাপ কমে । সুতরাং , বায়ু যখন উষ্ণ হয় তখন তার চাপ কমে । নিরক্ষীয় অঞ্চলের বায়ু উষ্ণ বলে এখানে বায়ুর চাপও কম । আবার ,
( ২ ) বায়ুর উষ্ণতা কমলে বায়ু সংকুচিত হয় । বায়ু যতই সংকুচিত হয় , তার ঘনত্ব তথা চাপ বাড়ে । সুতরাং , বায়ুর উষ্ণতা কমলে বায়ুর চাপ বাড়ে । তাই দুই মেরু অঞ্চলে অত্যধিক ঠান্ডার জন্য বায়ুর চাপ বেশি হয় ।
উষ্ণ মরু অঞ্চলে দিনের বেলা খুব উত্তাপ ও রাতে কম উত্তাপ থাকে কেন
আকাশে মেঘের আবরণ ভূপৃষ্ঠে কম্বলের মতাে কাজ করে । কম্বল যেমন বাইরের বাতাস ভেতরে ঢুকতে এবং ভেতরের বাতাস বাইরে বের হতে দেয় না তেমনি মেঘের আবরণ দিনের বেলা সৌরশক্তিকে ভূপৃষ্ঠে পৌঁছােতে বাধা দেয় এবং রাত্রিবেলা ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকীর্ণ তাপকেও মহাশূন্যে পৌঁছােতে দেয় না । ফলে , মেঘের আবরণ থাকলে দিনের বেলা উত্তাপ কমে এবং রাত্রিবেলা উত্তাপ বাড়ে । এজন্যই মেঘশূন্য রাতের তুলনায় মেঘাচ্ছন্ন রাত্রি অনেক গরম হয় । আবার , আকাশে মেঘের আবরণ না থাকলে এর বিপরীত অবস্থা হয় অর্থাৎ দিনের বেলা উত্তাপ বাড়ে এবং রাত্রিবেলা উত্তাপ কমে । যেমন — উষ্ণ মরু অঞ্চলের আকাশে মেঘ থাকে না বলে দিনের বেলা বায়ুমণ্ডল প্রচণ্ড উষ্ণ হয় এবং রাত্রিবেলা খুব কম উত্তাপ থাকে । এর কারণ一 ( ১ ) আকাশে মেঘ না থাকার জন্য দিবাভাগে সূর্যরশ্মি সরাসরি ভূপৃষ্ঠে চলে আসে । ফলে মরুভূমির বালিপূর্ণ ভূমি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে যে তাপ বিকিরণ করে তাতে বায়ুমণ্ডল প্রচণ্ড উষ্ণ হয়ে যায় । আবার , ( ২ ) সূর্যাস্তের পর বালি ঢাকা ভূমি দ্রুত তাপ বিকিরণ করে ঠান্ডা হয় এবং আকাশে মেঘ না থাকার জন্য ওই বিকীর্ণ তাপ সরাসরি মহাশূন্যে চলে যায় । ফলে রাত্রিকালে খুবই কম উত্তাপ থাকে এবং ঠান্ডা অনুভূত হয় ।
শীতকালে মুম্বাইয়ের রাতের তুলনায় দিল্লির রাত অধিকতর শীতল হয় কেন
দিল্লি ও মুম্বাই — দুটি শহরই ভারতে অবস্থিত । তা সত্ত্বেও শীতকালে মুম্বাইয়ের তুলনায় দিল্লির রাত্রি অধিকতর শীতল হয় । এর কারণ —
( ১ ) স্থলভাগের তুলনায় জলভাগ দেরিতে গরম হয় এবং দেরিতে ঠান্ডা হয় । তাই সমুদ্র সংলগ্ন স্থানের আবহাওয়া সমভাবাপন্ন হয় এবং সমুদ্র থেকে দূরে আবহাওয়ার চরমভাব লক্ষ করা যায় অর্থাৎ গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড গরম এবং শীতকালে তীব্র ঠান্ডা হয় । মুম্বাই আরব সাগরের তীরে অবস্থিত , কিন্তু দিল্লির অবস্থান সাগর থেকে বহুদূরে । এজন্য মুম্বাইয়ের তুলনায় দিল্লির শীতকাল অনেক তীব্র ।
( ২ ) মুম্বাইয়ের অক্ষাংশ ১৯° উত্তর এবং দিল্লির অক্ষাংশ ২৮° ৩৬’ উত্তর অর্থাৎ অক্ষাংশ অনুসারে মুম্বাইয়ের তুলনায় দিল্লি কিছুটা উত্তরে অবস্থিত । সূর্যের আপাতগতি অনুসারে যেহেতু এই সময় সূর্য নিরক্ষরেখার দক্ষিণে লম্বভাবে কিরণ দেয় তাই উত্তর গােলার্ধের যে স্থান নিরক্ষরেখা থেকে যত দূরে থাকে সেখানে সূর্যতাপও তত কম পাওয়া যায় । মুম্বাইয়ের তুলনায় দিল্লি কিছুটা উত্তরে অবস্থিত হওয়ায় শীতকালে স্বাভাবিকভাবেই দিল্লিতে সূর্যতাপ কিছুটা কম পাওয়া যায় , তাই শীতকালে ঠান্ডাও বেশি । এই দুই কারণে শীতকালে মুম্বাইয়ের তুলনায় দিল্লির রাত অধিকতর শীতল হয় ।
মেঘাচ্ছন্ন রাত্রি অপেক্ষা মেঘমুক্ত রাত্রি শীতল কেন
আকাশে মেঘের আবরণ ভূপৃষ্ঠে কম্বলের মতাে কাজ করে । কম্বল যেমন বাইরের বাতাস ভেতরে ঢুকতে এবং ভেতরের বাতাস বাইরে বের হতে দেয় না তেমনি মেঘের আবরণ দিনের বেলা সূর্যরশ্মিকে ভূপৃষ্ঠে পৌঁছতে বাধা দেয় এবং রাত্রিবেলা ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকীর্ণ তাপকে মহাশূন্যে অর্থাৎ পৃথিবীর আবহমণ্ডলের বাইরে পৌঁছােতে দেয় না । ফলে , আকাশে মেঘের আবরণ থাকলে দিনের বেলা উত্তাপ কমে এবং রাত্রিবেলা উত্তাপ বাড়ে । কিন্তু রাত্রিবেলা আকাশ যদি মেঘমুক্ত হয় তাহলে বিকিরণের অসুবিধা হয় না বলে ভূপৃষ্ঠ দ্রুত তাপ বিকিরণ করে ঠান্ডা হয়ে যায় । এর ফলে ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুস্তরও শীতল হয় । এজন্যই মেঘাচ্ছন্ন রাত্রির তুলনায় মেঘমুক্ত রাত্রি শীতল হয় ।
জলভাগের তুলনায় স্থলভাগ তাড়াতাড়ি গরম হয় কেন
জলভাগের তুলনায় স্থলভাগ তাড়াতাড়ি গরম হয় । এর কারণ—
( ১ ) জলের উত্তাপ পরিচলন পদ্ধতিতে জলের গভীরে চলে যায় , কিন্তু স্থলের উত্তাপ পরিচলন পদ্ধতিতে চলাচল করে না , ওপরে সঞ্চিত থাকে ।
( ২ ) জলভাগের তুলনায় স্থলভাগ থেকে সূর্যরশ্মি কম বিচ্ছুরিত হয় , ফলে স্থলভাগ তাড়াতাড়ি উষ্ণ হয় ।
( ৩ ) জলকে ১° সে উত্তপ্ত করতে যে পরিমাণ তাপ প্রয়ােজন , একই পরিমাণ স্থলকে ১° সে উত্তপ্ত করতে , ওই তাপের মাত্র এক তৃতীয়াংশ প্রয়ােজন ।
( ৪ ) স্থলভাগ অস্বচ্ছ কিন্তু জল স্বচ্ছ , ফলে সূর্যরশ্মি জলের নীচে প্রায় ২০০ মিটার পর্যন্ত চলে যায় ।
ইনসোলেশন কাকে বলে
ইংরেজিতে Incoming solar Radiation- কে সংক্ষেপে Insolation বা ইনসোলেশন বলে । আলাে ও উত্তাপের মাধ্যমে সূর্য থেকে যে শক্তি বিচ্ছুরিত হয় তাকে ‘ solar radiation ‘ বলে । এই solar radiation- এর যতটা অংশ পৃথিবীতে এসে পৌঁছােয় , তাকে Insolation বলে ।
বায়ুর চাপ কাকে বলে
আবহাওয়া ও জলবায়ুর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান — বায়ুর চাপ । পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি অন্যান্য পদার্থের মতাে বায়ুকেও নিজ কেন্দ্রের দিকে আকর্ষণ করে বলে অন্যান্য পদার্থের মতাে বায়ুরও ওজন আছে । বায়ুর ওজনকে বলে বায়ুর চাপ । সাধারণভাবে বলা যায় , ভূপৃষ্ঠে গড়ে ১ বর্গ সেন্টিমিটারের ওপর বায়ুমণ্ডলের চাপ প্রায় ১ কিগ্রা ।
বায়ুচাপ কক্ষ কাকে বলে
জলভাগ ও স্থলভাগের মধ্যে বায়ুর উষ্ণতা এবং বায়ুর চাপে পার্থক্য হয় বলে তাপ ও চাপ বলয়গুলি অনেক জায়গায় বলয় হিসেবে না থেকে ছােটো ছােটো ভাগে বিভক্ত হয়ে অবস্থান করে । বায়ুচাপের এই ছােটো ছােটো বিভাগগুলিকে বলে বায়ুচাপ কক্ষ । মহাদেশ ও মহাসাগরগুলির অবস্থানগত বৈশিষ্ট্যের জন্য উত্তর গােলার্ধে বায়ুচাপ কক্ষ বেশি দেখা যায় ।
সমচাপ রেখা বা সমপ্রেষ রেখা কাকে বলে
যে কাল্পনিক রেখার সাহায্যে সমান বায়ুচাপ বিশিষ্ট জায়গাগুলি যুক্ত করা হয় , সেই কাল্পনিক রেখাকে সমচাপ রেখা বা সমপ্রেষ রেখা বলে । যেহেতু সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রতি ৩০০ মিটার উচ্চতায় বায়ুর চাপ প্রায় ৩৪ মিলিবার কমে যায় , তাই সমচাপ রেখা আঁকার সময় কোনাে জায়গার বায়ুর চাপের পরিমাণকে সমুদ্রপৃষ্ঠে বায়ুর চাপে পরিবর্তিত করতে হয় ।
পর্বতে আরোহনকারী অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করেন কেন
ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি বায়ুর চাপ বেশি এবং ভূপৃষ্ঠ থেকে ক্রমশ ওপরের দিকে বায়ুর চাপ কমতে থাকে । বায়ুর চাপ কমে গেলে অর্থাৎ বায়ু পাতলা হয়ে গেলে তাতে অক্সিজেনের পরিমাণও কমে যায় । ফলে আমাদের শ্বাসকার্য চালাতে খুব কষ্ট হয় । যেহেতু সুউচ্চ হিমালয় পর্বতে বায়ুর চাপ কম , তাই হিমালয় পর্বতে আরােহণকারীরা অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করে ।
উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার কাকে বলে
সূর্যতাপে প্রথমে ভূপৃষ্ঠ উষ্ণ হয় এবং তারপর ওই উষ্ণ ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকীর্ণ তাপে বায়ুমণ্ডল উষ্ণ হয় । এজন্য ভূপৃষ্ঠ থেকে ক্রমশ ওপরের দিকে অর্থাৎ উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতা হ্রাস পায় । একে উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার বলে । উষ্ণতার স্বাভাবিক হ্রাসের হার প্রতি ১,০০০ মিটার বা ১ কিলােমিটার উচ্চতায় প্রায় ৬.৫° সে. । উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই হারে উষ্ণতা হ্রাস পায় বলেই উচ্চস্থান শীতল হয় বা সুউচ্চ পর্বতশিখর তুষারাবৃত থাকে ।