দ্রাবিড় ভাষা
দ্রাবিড় ভাষা

হরপ্পা-মহেঞ্জোদারোর ধ্বংসাবশেষ প্রাচীন দ্রাবিড়ীয় সভ্যতার নিদর্শন বলে অনেকে মনে করেন । বিজয়ী আর্যদের বৈদিক সাহিত্যে এবং মহাকাব্য পুরাণে সম্ভবত বিজিত দ্রাবিড় জনগােষ্ঠীকে দাস-দস্যু , অসুর-দৈত্য রূপে চিত্রিত করা হয়েছে । কারণ আর্যদের আগ্রাসন ও অগ্রগতির সবচেয়ে বড়াে বাধা ছিল দ্রাবিড়রা। তবে পরবর্তীকালে আর্য ও দ্রাবিড়েরা নিকট প্রতিবেশীরূপে বাস করার সূত্রে ভাবধারা ও ভাষার ক্ষেত্রে পরস্পর পরস্পরের দ্বারা প্রভাবিত হয় । সূক্ষ্ম বিচারে দ্রাবিড় ভাষার কয়েকটি গৌণ শাখার অস্তিত্ব থাকলেও প্রধান শাখা দুটি হল 一 ( ১ ) দ্রাবিড় শাখা ও ( ২ ) আন্ধ্র শাখা । দ্রাবিড় শাখার অন্তর্ভুক্ত হল তামিল , মালায়লাম ও কন্নড় এবং আন্ধ্র শাখা দ্রাবিড় ভাষার শাখা হল তেলুগু ভাষা ।
তামিল ভাষার প্রচলন তামিলনাড়ুতে ও শ্রীলঙ্কার উত্তরাঞ্চলে , কেরল অঞ্চলে প্রচলিত ভাষা হল মালয়লম বা মালয়ালি, মহীশূর অঞ্চলে প্রচলিত ভাষা হল কন্নড় , আর অন্ধ্রের অধিবাসীদের ভাষা হল তেলুগু ।
সংস্কৃত ভাষায় বহু দ্রাবিড় শব্দের প্রবেশ ঘটেছে ; যেমন – কাল , কলা , কলি , অণু , রাত্রি , পুষ্প , পূজা , বীজ প্রভৃতি । পরবর্তীকালে সংস্কৃত থেকে এ সকল শব্দ বাংলায় এসেছে ; তা ছাড়া বাংলায় দ্রাবিড় ভাষাজাত শব্দের সংখ্যাও অনেক ; যেমন — খাল , উলু , জোলা , পিলে , গুড়ি ইত্যাদি ।