ক্ষয়জাত পর্বত
ক্ষয়জাত পর্বত

কখনাে কখনাে বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির ক্ষয়কার্যের ফলে প্রাচীন পার্বত্য ভূমি বা উচ্চভূমির নরম শিলা গঠিত অংশসমূহ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে সমভূমির আকার ধারণ করে , কিন্তু কঠিন শিলা গঠিত অংশসমূহ বেশি ক্ষয়প্রাপ্ত না হয়ে উচ্চভূমি বা পর্বতের আকারে দাঁড়িয়ে থাকে । এই ধরনের পর্বতকে ক্ষয়জাত পর্বত বলে । উদাহরণ 一 রাজস্থানের আরাবল্লী পর্বত ক্ষয়জাত পর্বতের বিশিষ্ট উদাহরণ । এছাড়া বিহারের পরেশনাথ বা রাজমহল পাহাড়ও এইভাবে সৃষ্ট হয়েছে ।
ক্ষয়জাত পর্বতের উৎপত্তি
রােদ , বৃষ্টিপাত , বায়ু প্রবাহ , নদী প্রভৃতি প্রাকৃতিক ক্ষয়কারী শক্তির মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠের কোনাে প্রাচীন অংশ , যেমন — প্রাচীন পার্বত্য অঞ্চল বা মালভূমি এলাকা ক্রমাগত ক্ষয় হলে তার নরম শিলা গঠিত অংশসমূহ স্বাভাবিক কারণেই দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয় এবং ওই অংশগুলি প্রায় সমভূমিতে পরিণত হয় । কিন্তু পার্বত্যভূমির কঠিন শিলা গঠিত অংশসমূহ স্বাভাবিক কারণেই অনেক কম ক্ষয়প্রাপ্ত হয় । ফলে ওইসব অবশিষ্ট অংশ উচ্চভূমি বা পর্বত হিসাবে থেকে যায় । এইভাবে প্রাচীন পার্বত্যভূমি বা উচ্চভূমির কঠিন শিলা গঠিত অংশের মাধ্যমে ক্ষয়জাত পর্বতের সৃষ্টি হয় ।
ক্ষয়জাত পর্বতের বৈশিষ্ট্য
ক্ষয়জাত পর্বতের বৈশিষ্ট্য গুলি হল —
[ ১ ] রােদ , বৃষ্টিপাত , নদী , বায়ুপ্রবাহ প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির ক্ষয়কার্যের ফলে কোনও প্রাচীন পার্বত্য অঞ্চল বা উচ্চভূমি ক্ষয় হয়ে ক্ষয়জাত পর্বতের সৃষ্টি হয় , অর্থাৎ এটি ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত হয় ।
[ ২ ] প্রাচীন পার্বত্য অঞ্চল বা উচ্চভূমির অপেক্ষাকৃত নরম শিলাসমূহ ক্ষয় হয়ে অবশিষ্ট কঠিন শিলাস্তরের মাধ্যমে ক্ষয়জাত পর্বতের সৃষ্টি হয় বলে এর আর এক নাম অবশিষ্ট পর্বত ।
[ ৩ ] আগ্নেয় , পাললিক ও রূপান্তরিত — যে কোনাে প্রকার শিলার মাধ্যমে ক্ষয়জাত পর্বত গঠিত হতে পারে ।
[ 4 ] বিশেষ কোনাে আকৃতির না হলেও এগুলি কিছুটা গম্বুজের মতাে হয় কিন্তু শিখরদেশ তীক্ষ্ণ বা ছুঁচালাে হয় না ।
[ ৫ ] শিখরদেশের ভূমিতে বিশেষ কোনাে বৈচিত্র্য লক্ষ করা যায় না ।
[ ৬ ] চারপাশের ঢাল খুব খাড়া হয় না ।