আগ্নেয় বা সঞ্চয়জাত পর্বত
আগ্নেয় বা সঞ্চয়জাত পর্বত

পৃথিবীর অভ্যন্তরের উত্তপ্ত গলিত পদার্থ বা ম্যাগমা কখনাে কখনাে ভূত্বকের কোনাে গভীর ফাটল বা সুড়ঙ্গ পথ ধরে ওপরে উঠে আসে এবং নির্গমন মুখের চারধারে স্তুপীকৃত হয়ে জমতে জমতে পর্বতের আকার ধারণ করে । এইভাবে আগ্নেয় পদার্থ সঞ্চয়ের ফলে সৃষ্টি হয় বলে একে আগ্নেয় পর্বত বা সঞ্চয়জাত পর্বত বলা হয় । উদাহরণ — জাপানের ফুজিয়ামা , ইতালির ভিসুভিয়াস প্রভৃতি পৃথিবীর উল্লেখযােগ্য আগ্নেয় পর্বত ।
আগ্নেয় বা সঞ্চয়জাত পর্বতের উৎপত্তি
কোনাে কোনাে সময় ভূপৃষ্ঠের ৮০ থেকে ১৬০ কিলােমিটার নীচে অস্বাভাবিক তাপ বৃদ্ধির ফলে ভূগর্ভস্থ পদার্থ সমূহ গলে তরল শিলাস্রোত বা ম্যাগমার সৃষ্টি হয় এবং প্রচণ্ড গ্যাসের উদ্ভব হয় । গ্যাসের চাপ খুব বেশি বৃদ্ধি পেলে ওই ম্যাগমা তখন ভূত্বকের কোনাে ফাটল বা সুড়ঙ্গ পথ ধরে ভূপৃষ্ঠে উঠে আসে এবং লাভারূপে ভূপৃষ্ঠে ছড়িয়ে পড়ে । তবে শুধু লাভা নয় , তার সঙ্গে নানা ধরনের গ্যাস , ছাই , ভস্ম , পাথর টুকরাে , জলীয় বাষ্প প্রভৃতিও নির্গত হয় । বারবার উত্তপ্ত শিলাস্রোত বা ম্যাগমা নির্গত হয়ে ফাটল বা সুড়ঙ্গের চারপাশে জমা হলে তা খুব উঁচু হয়ে যায় এবং একসময় শঙ্কু আকৃতির পর্বতের আকার ধারণ করে । এইভাবে আগ্নেয় পদার্থ সমূহ সঞ্চয় এর ফলে সৃষ্টি হয় আগ্নেয় পর্বত বা সঞ্চয়জাত পর্বত ।
আগ্নেয় বা সঞ্চয়জাত পর্বতের বৈশিষ্ট্য
( ১ ) আগ্নেয় পর্বতের আকৃতি কিছুটা ত্রিভুজ বা শঙ্কুর মতাে ।
( ২ ) এর চূড়ায় একটি মুখ থাকে , একে জ্বালামুখ বলে ।
( ৩ ) বড়াে বড়াে আগ্নেয়গিরির একাধিক জ্বালামুখ থাকে । এগুলির মধ্যে প্রথম যে মুখটি দিয়ে অগ্ন্যুৎপাত হয় , তাকে প্রধান বা মুখ্য জ্বালামুখ এবং পরবর্তীকালে অন্য যেসব মুখ সৃষ্টি হয় সেগুলিকে অপ্রধান বা গৌণ জ্বালামুখ বলে ।
( ৪ ) জ্বালামুখ একটি নলাকৃতি পথের মাধ্যমে ভূগর্ভের ম্যাগমা গহ্বরের সঙ্গে যুক্ত থাকে ।
( ৫ ) আগ্নেয় পর্বতের চারপাশে যথেষ্ট খাড়া ঢাল থাকে ।
( ৬ ) আগ্নেয় পর্বতের উচ্চতা মাঝারি ধরনের হয় ।