ভূগোল

হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিকম্পের কারণ

হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিকম্পের কারণ

images 2
হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিকম্পের কারণ

জিওসিনক্লাইন বা মহীখাত তত্ত্ব অনুসারে বলা যায় যে , অগভীর সমুদ্র বা মহীখাতে দীর্ঘকাল ধরে পলি সঞ্চয়ের ফলে ওই পলি ধীরে ধীরে পাললিক শিলায় পরিণত হয় । ফলে , তার ভারে সাগর বা মহাসাগরের তলদেশ ধীরে ধীরে নীচের দিকে নামতে থাকে এবং এর টানে দু-পাশের ভূমি মুখােমুখি সামনের দিকে এগিয়ে আসে । দু-পাশের ভূমির প্রবল পার্শ্বচাপে তখন সাগরের পাললিক শিলাস্তর বড়াে বড়াে ভাজের আকারে উঁচু হয়ে উঠে ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি করে । যেহেতু সমগ্র প্রক্রিয়াটি কোটি কোটি বছর ধরে অত্যন্ত ধীরগতিতে চলে , তাই বিশ্বের যেসব স্থানে ভঙ্গিল পর্বত শ্রেণী আছে , সেইসব স্থানে ভূপৃষ্ঠের স্থিতিস্থাপকতা এখনও ফিরে আসেনি , অর্থাৎ ওইসব অঞ্চলে পর্বত সৃষ্টির কাজ এখনও চলছে । এজন্যই ভঙ্গিল পার্বত্য অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি ভূমিকম্প হয় । যেমন — হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল । 

প্লেট টেকটনিক বা পাত গাঠনিক তত্ত্ব অনুসারে বলা যায় যে , ভূত্বক গঠনকারী সঞ্চরণশীল প্লেটগুলির মধ্যে যখন দুটি মহাদেশীয় প্লেট পরস্পরের অভিমুখে অগ্রসর হয় , তখন সেই অভিসারী প্লেট সীমান্তে অপেক্ষাকৃত ভারী প্লেটটি হালকা প্লেটের নীচে প্রবেশ করে এবং উভয়ের সংযােগ রেখা বা সীমানা বরাবর সঞ্চিত পলিরাশিতে প্রচণ্ড পার্শ্বচাপের ফলে ভাঁজ পড়ে ভঙ্গিল পর্বত গঠিত হয় । হিমালয়সহ যেসব ভঙ্গিল পর্বত আছে ( আল্পস্ , আন্দিজ প্রভৃতি ) , সেগুলি এইভাবেই গঠিত হয়েছে । যেমন ইউরেশিয়া প্লেটের নীচে ভারতীয় প্লেটের অধােগমনের ফলে উভয়ের সংযোগস্থলে হিমালয়ের উত্থান ঘটেছে । যেহেতু ওইসব অভিসারী প্লেট সীমান্তে দুটি প্লেটের সংঘর্য এবং তার ফলে ভারী প্লেটটির অধােগমন এখনও ঘটে চলেছে , তাই ভঙ্গিল পার্বত্য অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি ভূমিকম্প হয় । এর উদাহরণ হল হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!