ভারতীয় সংবিধানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
Contents
ভারতীয় সংবিধানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

সংবিধান রচনার ক্ষেত্রে গণপরিষদের মূল লক্ষ্য ছিল স্বাধীন ভারতের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক রূপরেখা তৈরি । এর পাশাপাশি ভারতের সংবিধান ন্যায় বিচার , স্বাধীন চিন্তা ও মতপ্রকাশ , স্বাধীনভাবে ধর্মাচরণ ইত্যাদির অধিকার দিতে চেয়েছিল ভারতীয় নাগরিকদের । সকল নাগরিক যাতে সমান সুযােগ পায় এবং সমাজে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারে , গণপরিষদের সদস্যগণ তাও উদ্দেশ্যরূপে গ্রহণ করেছিলেন । প্রখ্যাত সংবিধান বিশেষজ্ঞ দুর্গাদাস বসুর মতে — আপন বিশিষ্টতার জন্যই ভারতীয় সংবিধান পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সংবিধানের থেকে স্বতন্ত্র । ভারতীয় সংবিধানের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্যগুলি হল —
আর্থ সামাজিক উন্নতি
গণপরিষদের সর্বপ্রধান লক্ষ্য ছিল স্বাধীন ভারতের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটানাে । জওহরলাল নেহরু বলেছিলেন , ভারতের নবগঠিত সংবিধান ভারতবাসীর স্বাধীনতা রক্ষা করবে , ক্ষুধার্তের অন্ন জোগাবে , বস্ত্রহীনকে বস্ত্র দেবে এবং প্রত্যেকের আত্মবিকাশের ব্যবস্থা করবে । ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণান বলেন , গণপরিষদের মূল লক্ষ্য হবে ভারতের আর্থ সামাজিক বিপ্লব সাধন ।
গণতান্ত্রিক সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠন
ভারতের সংবিধান প্রণেতাগণ গণপরিষদে রাজনৈতিক লক্ষ্য বর্ণনা করে বলেন যে , ভারত আত্মপ্রকাশ করবে এক স্বাধীন সার্বভৌম , ধর্মনিরপেক্ষ , প্রজাতন্ত্র , সাধারণতন্ত্র হিসেবে । যেখানে থাকবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা , নিরপেক্ষতা এবং সংসদীয় গণতন্ত্রের অস্তিত্ব ।
সামাজিক লক্ষ্য
সামাজিক ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি তফশিলি জাতি , উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য বিশেষ সংরক্ষণ ব্যবস্থা , শিশু ও নারীকল্যাণ , অস্পৃশ্যতা বিলােপ ইত্যাদি বিষয়গুলি গণপরিষদে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে ।
উপসংহার
ভারতীয় সংবিধান ব্যক্তির মৌলিক অধিকার ও জনগণের আর্থ সামাজিক স্বার্থের সঙ্গে রাষ্ট্রের নিরাপত্তার ভারসাম্য রক্ষা করে চলেছে । এর পাশাপাশি ভারতের সংবিধান সাফল্যের সঙ্গে বিভিন্ন সংকটের মােকাবিলা করে চলেছে । বিশিষ্ট সংবিধান বিশেষজ্ঞ এস. সি. কাশ্যপ তাঁর ‘ Our Constitution ‘ শীর্ষক গ্রন্থে বলেছেন , “ এটা সুস্পষ্টভাবে প্রতিভাত হয়েছে এর উচ্ছলতা , গতিশীলতা ও প্রগতিশীলতার মধ্যে ” ( This itself is evidence of its resilience , dynamism and growth potential ) ।