অসহযোগ আন্দোলনের লক্ষ্য ও কর্মসূচি
Contents
অসহযোগ আন্দোলনের লক্ষ্য ও কর্মসূচি
গান্ধীজীর নেতৃত্বে স্বরাজ অর্জন অসহযােগ আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল । এই লক্ষ্য পূরণের পাশাপাশি কংগ্রেস চেয়েছিল নরমপন্থী ও চরমপন্থীদের কর্মধারার মিলন ঘটিয়ে তাদেরকে একজোট করতে । এই আন্দোলন ছিল সম্পূর্ণরূপে অহিংস , এতে হিংসার কোনাে স্থান ছিল না । সুমিত সরকার তাঁর ‘ Modern India ‘ গ্রন্থে বলেছেন — ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বিরােধিতার ক্ষেত্রে ব্যাপকতা ও গভীরতায় অসহযােগ আন্দোলন বিশাল পরিবর্তন ঘটায় ( ‘ Non – cooperation marked a major change in the depth and dimension of concerted political hostility to the Raj ’)।
অসহযোগ আন্দোলনের লক্ষ্য
অসহযােগ আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল —
মূল লক্ষ্য :
সম্পূর্ণ অহিংস পদ্ধতিতে স্বরাজ অর্জন করা ।
অন্যান্য লক্ষ্য :
1. খিলাফৎ সমস্যার সন্তোষজনক সমাধান করা ।
2. কুখ্যাত ও দমনমূলক রাওলাট আইন ব্রিটিশ কর্তৃক প্রত্যাহৃত করা ।
3. সমাজের বুক থেকে সাম্প্রদায়িকতা , অস্পৃশ্যতা ও জাতিভেদ প্রথার অবসান ঘটানাে ।
4. জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া ।
অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি
অসহযােগ আন্দোলনের প্রধান কর্মসূচি গুলিকে দুটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে —
- নেতিবাচক ও
- ইতিবাচক ।
নেতিবাচক কর্মসূচি :
1. সমস্ত রাজকীয় খেতাব বর্জন ,
2. সরকারি পদ বর্জন ,
3. স্বশাসিত সংস্থা থেকে পদত্যাগ ,
4. সরকারি অনুষ্ঠান বর্জন ,
5. সরকারি স্কুলকলেজ থেকে নাম প্রত্যাহার ,
6. বিলাতি দ্রব্য বর্জন ,
7. আইনসভা ও আদালত বয়কট ইত্যাদি ।
ইতিবাচক কর্মসূচি :
1. ‘ তিলক স্বরাজ তহবিল ‘ গড়ে তােলার লক্ষ্যে ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা চাঁদা তােলা ,
2. দেশীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তােলা ,
3. ২০ লক্ষ চরকা বিতরণ করা ,
4. অস্পৃশ্যতা দূর করা ,
5. ১ কোটি সদস্য বিশিষ্ট এক স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী গড়ে তােলা ,
6. হিন্দু মুসলমান ঐক্য গড়ে তােলা ,
7. সালিশি বাের্ড গঠন করা ।
এক কথায় অসহযােগ আন্দোলনের কর্মসূচিতে ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে সকল প্রকার অসহযােগিতার সংকল্প ঘােষণার পাশাপাশি এক বছরের মধ্যে স্বরাজ অর্জনের আশ্বাস দেওয়া হয় । আন্দোলনের পদক্ষেপ হিসেবে জাতীয় স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠা , সালিশি মিমাংসার লক্ষ্যে পঞ্চায়েত গঠন , চরকায় সুতাে বােনা ইত্যাদি কর্মসূচিও গৃহীত হয় ।
উপসংহার
জাতীয় কংগ্রেসের নাগপুর অধিবেশনের পর থেকেই গান্ধীজি কংগ্রেসের অন্যান্য নেতাদের নিয়ে ভারতের একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্ত ঘুরে ঘুরে এই আন্দোলনের লক্ষ্যগুলি তুলে ধরেন । গান্ধীজি ইয়ং ইন্ডিয়া পত্রিকায় লিখেছিলেন ( ১৯২২ খ্রি. ২২ ফেব্রুয়ারি ) ব্রিটিশকে বােঝানাের এটাই উপযুক্ত সময় যে , তাদের বিরুদ্ধে ১৯২০ – তে যে সংগ্রাম শুরু হয়েছে তা তাদেরকে শেষ করার সংগ্রাম ( ‘ It is high time that the British people were made to realise that the fight that was commenced in 1920 is a fight to the finish ’ )।
স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতাজি ও আজাদ হিন্দ ফৌজের ভুমিকা |
এই প্রশ্নটির উত্তর আমার তাড়াতাড়ি চাই