স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে যতীন দাস স্মরণীয় কেন
Contents
স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে যতীন দাস স্মরণীয় কেন

যে কয়েকজন বাঙালি বিপ্লবীর আত্মত্যাগ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনকে জোরদার করে তুলেছিল যতীন দাস তাঁদের মধ্যে অন্যতম । ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক অন্যতম শহিদ যতীন্দ্রনাথ দাস প্রথম বিপ্লবী , যিনি আমরণ অনশন চালিয়ে শহিদ হন ।
রাজনীতিতে যোগদান
যতীন দাস ম্যাট্রিক পাস করার পর গান্ধিজির ডাকে সাড়া দিয়ে অসহযােগ আন্দোলনে যােগ দেন । এর কিছুদিন পর তিনি বিপ্লবী শচীন্দ্রনাথ সান্যালের উপদেশ মেনে হিন্দুস্তান রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশনে যােগ দেন ।
কারাবাস
দেওঘরে অবস্থানকালে যতীন দাস বােমা তৈরির কৌশল আয়ত্ত করেন । হিন্দুস্তান রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশনে যুক্ত থাকাকালীন বােমা তৈরির অপরাধে তাঁর জেল হয় ( ১৯২৫ খ্রি. ) । এর চার বছর পর তিনি পুনরায় কারারুদ্ধ হন ।
যতীন দাস এর আমরণ অনশন
সর্দার ভগৎ সিং , বটুকেশ্বর দত্ত , শুকদেব , রাজগুরুর সঙ্গে লাহাের ষড়যন্ত্র মামলায় ( ১৯২৯ খ্রি. ) তিনিও লাহােরের বােরস্টল জেলে বন্দি ছিলেন । জেলে বন্দিদের প্রতি দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদে ও তাঁদের যুদ্ধবন্দি হিসেবে গণ্য করার দাবিতে যতীন দাসসহ বন্দিরা অনশন শুরু করেন । শেষ পর্যন্ত অন্য সব বন্দি অনশন ত্যাগ করতে বাধ্য হলেও যতীন দাস অনশন চালিয়ে যান । তাঁর অনশন ভাঙার জন্য বহু চেষ্টা করা হয় । কিন্তু দাবি পূরণ হওয়া পর্যন্ত তিনি অনশনে অবিচল থাকেন । ফলে , ৬৪ দিন পরে ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের ১৩ সেপ্টেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন ।
যুব সমাজের অনুপ্রেরণা
তাঁর মনােবল ও আত্মত্যাগে সারা ভারত স্তম্ভিত হয়ে যায় । ভারতের যুবসমাজ স্বাধীনতা সংগ্রামে নতুন করে অনুপ্রাণিত হয় । এই জন্যই স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে যতীন দাস অবিস্মরণীয় । তাঁর আত্মত্যাগ বিপ্লবীদের কাছে এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে ওঠে । যতীন দাসের মৃতদেহ নিয়ে সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে কলকাতার রাজপথ জুড়ে বিশাল মিছিল বের হয় ।