স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে বিপ্লবী ভগৎ সিং স্মরণীয় কেন
Contents
স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে বিপ্লবী ভগৎ সিং স্মরণীয় কেন

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে পাঞ্জাবের বিপ্লবী আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্যায়ে যে তরুণ বিপ্লবীর নাম সর্বাগ্রে স্মরণীয় তিনি হলেন সর্দার ভগৎ সিং । পট্টভি সীতারামাইয়া বলেছেন , সমগ্র দেশে ভগৎ সিং ছিলেন সর্বজনবিদিত এবং গান্ধীজীর মতােই জনপ্রিয় ( ” Bhagat Singh’s name was a widely known all over India and was as popular as Gandhiji’s ” ) ।
বিপ্লবী ভগৎ সিং এর কার্যকলাপ
বিপ্লবী জীবনের সূচনা :
ভগৎ সিং – এর বিপ্লবী জীবনের সূচনা হয় চন্দ্রশেখর আজাদের হিন্দুস্তান রিপাবলিকান পার্টির সদস্যপদ গ্রহণ করার পর । এরপর তিনি নিজে ‘ নওজোয়ান ভারত সভা ‘ নামে একটি যুব সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন ( ১৯২৫ খ্রি. ) ।
পার্টির নেতৃত্ব গ্রহণ :
১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে বিপ্লবী চন্দ্রশেখর আজাদ ও অন্যদের সঙ্গে ভগৎ সিং দিল্লির ফিরােজ শাহ কোটলায় হিন্দুস্থান রিপাবলিকান পার্টির নেতৃত্ব গ্রহণ করে এই দলের নতুন রূপ দিয়ে হিন্দুস্তান সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশন ( HSRA ) নামে একটি বিপ্লবী সংস্থা গড়ে তােলেন । এঁদের উদ্দেশ্য ছিল ভারতকে একটি সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রিক দেশ হিসেবে স্থাপন করা ।
স্যান্ডার্স হত্যা :
লাহােরে সাইমন কমিশন বিরােধী এক মিছিলের নেতৃত্বদানকালে প্রবীণ জননেতা লাজপত রায় পুলিশের লাঠির আঘাতে গুরুতরভাবে আহত হয়ে পরে হাসপাতালে মারা যান । লালাজির মৃত্যুর প্রতিশােধ নিতে ভগৎ সিং লাহােরের কুখ্যাত পুলিশ অফিসার স্যান্ডার্সকে গুলি করে হত্যা করেন ( ১৭ নভেম্বর , ১৯২৮ খ্রি. ) ।
বিপ্লবের আদর্শ প্রচার :
১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের ৮ এপ্রিল দিল্লির কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভায় জনস্বার্থবিরোধী ‘ ট্রেড ডিসপিউট বিল ’ ও ‘ পাবলিক সেফটি অ্যাক্ট ‘ নিয়ে আলােচনার সময় দর্শক আসন থেকে ভগৎ সিং ও বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্ত দুটি বােমা ফাটিয়ে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং ইনকিলাব জিন্দাবাদ ধ্বনি সহ লাল – ইস্তাহার বিলি করে বিপ্লবের ডাক দেন ও বিপ্লবের আদর্শ প্রচার করেন । এরপর তাঁরা স্বেচ্ছায় পুলিশের হাতে ধরা দেন । লাহাের ষড়যন্ত্র মামলা ( ১৯২৯ খ্রি. ) র বিচারে স্যান্ডার্স হত্যাকাণ্ডের দায়ে ভগৎ সিং – এর ফাঁসি হলে ( ২৩ মার্চ , ১৯৩১ খ্রি. ) সারা দেশে তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি হয় ।
যুব সমাজের অনুপ্রেরণা :
ভগৎ সিং এর এই নির্ভয় আত্মবলিদান ভারতীয় যুবসমাজের মধ্যে বৈপ্লবিক চেতনা ছড়িয়ে তাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে নতুন করে অনুপ্রাণিত করে । ফাঁসির মঞ্চে মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে ভগৎ সিং চেঁচিয়ে বলেন ‘ ইনকিলাব জিন্দাবাদ ’ ( বিপ্লব দীর্ঘজীবী হােক ) ।