পুনা চুক্তি কি
Contents
পুনা চুক্তি কি

১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের ১৬ আগস্ট ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী রামসে ম্যাকডোনাল্ড যে সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা বা রোয়েদাদ ঘােষণা করেন তার দ্বারা অনুন্নত বা দলিত হিন্দুদের ভিন্ন সম্প্রদায় বলে ঘােষণা করে আইনসভায় তাদের জন্য কতকগুলি বিশেষ আসনে পৃথক নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয় । ভারতবাসীর ঐক্য ও সংহতিতে বিশ্বাসী গান্ধীজি ব্রিটিশের এই সাম্প্রদায়িক সিদ্ধান্তে মর্মাহত হন । সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতির প্রতিবাদ জানিয়ে গান্ধীজি পুনার জারবেদা জেলে বন্দি অবস্থায় আমরণ অনশন শুরু করেন ( ২০ সেপ্টেম্বর , ১৯৩২ খ্রি. ) ।
পুনা চুক্তি স্বাক্ষর
এই অনশনে গান্ধীজির জীবন সংশয়ের আশঙ্কা দেখা দিলে উদবিগ্ন সমস্ত শ্রেণির হিন্দু নেতা পুনায় নিজেদের মধ্যে আলােচনা করে একটি মীমাংসা সূত্রে উপনীত হন । এই মীমাংসা সূত্রে অনুন্নত হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষে ড. বি. আর. আম্বেদকর , শ্রীনিবাসন এবং বর্ণহিন্দুদের পক্ষে পণ্ডিত মদনমােহন মালব্য , বাবু রাজেন্দ্রপ্রসাদ প্রমুখ নেতা একটি বােঝাপড়ার মাধ্যমে পুনা চুক্তি ( ২৫ সেপ্টেম্বর , ১৯৩২ খ্রি. ) স্বাক্ষর করেন । ২৬ সেপ্টেম্বর গান্ধীজি অনশন ভঙ্গ করেন ।
পুনা চুক্তির শর্ত
1. অনুন্নত বা দলিত শ্রেণি স্বতন্ত্র নির্বাচনের দাবি ত্যাগ করবে ।
2. অনুন্নত বা দলিত শ্রেণির জন্য কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক আইনসভায় পূর্বের থেকে দ্বিগুণ আসন সংরক্ষিত থাকবে ।
3. অনুন্নত বা দলিত শ্রেণির জন্য সংরক্ষিত আসনে কোনাে বর্ণহিন্দু প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে না ।
4. সকল ভােটদাতাই ভােটে অংশ নেবেন ।
পুনা চুক্তির গুরুত্ব বা তাৎপর্য
পুনা চুক্তি অনুযায়ী —
1. হিন্দুদের যৌথ নির্বাচনি নীতি গৃহীত হলে সাম্প্রদায়িক ভিত্তিতে হিন্দু সমাজের বিভাজন সাময়িকভাবে রােধ হয় ।
2. ব্রিটিশ এই চুক্তি মেনে নিয়ে সাম্প্রদায়িক দিক থেকে অনেকটাই সরে আসে । গান্ধীজি অনশন ভঙ্গ করেন এবং বিনা শর্তে মুক্তি পান ।
3. অনুন্নত বা দলিত হিন্দুদের জন্য প্রাদেশিক আইন পরিষদে আসন সংরক্ষিত হয় ।
4. প্রদেশগুলিতে অনুন্নত বা দলিত হিন্দু সম্প্রদায় ১৪৮ টি আসনে সংরক্ষণের অধিকার লাভ করে ।
খুব ভালো লাগলো