ডান্ডি অভিযান কী
Contents
ডান্ডি অভিযান কী

গান্ধীজি তাঁর অনুগামীদের সঙ্গে নিয়ে ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ১২ মার্চ গুজরাতের সবরমতি আশ্রম থেকে ডান্ডি গ্রাম পর্যন্ত যে দীর্ঘ পদযাত্রা করেন , ইতিহাসে তা ডান্ডি অভিযান নামে পরিচিত । গান্ধীজি ডান্ডিতে নিজের হাতে লবণ আইন ভঙ্গ করে আইন অমান্য আন্দোলনের সূচনা করেন । সুভাষচন্দ্র এই লবণ আইন ভঙ্গ প্রসঙ্গে ‘ The Indian Struggle ‘ গ্রন্থে বলেছেন — আমার মতে এটা ছিল এক মহান আন্দোলনের মহান সূচনা ( ‘ In my view it was a great beginning of a great movement ’ ) ।
গান্ধীজির ডান্ডি অভিযানের পরিকল্পনা
গান্ধীজি সবরমতি আশ্রমে থাকাকালীন আইন অমান্য আন্দোলনের সূচনা কিভাবে করবেন সে ব্যাপারে গভীর চিন্তায় ডুবেছিলেন । কবিগুরু সবরমতি আশ্রমে এলে তাঁকে গান্ধীজি বলেছিলেন— আমি দিবা – রাত্রি একমনে চিন্তা করছি , কিন্তু বিরাজমান অন্ধকারের মধ্যে আমি কোনাে আলাে দেখছি না ( ‘ I am furiously thinking night and day and I do not see any light coming out of the surrounding darkness ‘ ) অবশেষে। গান্ধীজি সিদ্ধান্ত নিলেন যে লবণ আইন ভঙ্গ করেই আইন অমান্য আন্দোলনের সূচনা করবেন ।
ডান্ডি অভিযানের বর্ণনা
৭৯ ( মতান্তরে ৭৮ জন ) জন সত্যাগ্রহী নিয়ে ২৪ দিন হেঁটে ২৪১ মাইল পথ অতিক্রম করে গান্ধীজি ও তাঁর সঙ্গীরা ৫ এপ্রিল ডান্ডি গ্রামে পৌঁছেন । অভিযান চলাকালীন পথ মধ্যে জনতা যেভাবে স্বাধীনতার আবেগে আপ্লুত হয়ে ওঠে , সেদৃশ্য ইতিপূর্বে আর দেখা যায়নি ।
ডান্ডি অভিযানে বয়কটের আহ্বান
গান্ধীজি দেশবাসীকে সরকারি চাকুরি ত্যাগ ও খাজনা বন্ধের আহ্বান জানান । সারা দেশ জুড়ে এক অভূতপূর্ব উৎসাহ ও উদ্দীপনা লক্ষ করা যায় ।
লবণ আইন ভঙ্গ
১৯৩০ সালের ৬ এপ্রিল ভােরে আরব সাগরের জলে স্নান করে গান্ধীজি নিজের হাতে আরব সাগরের জল থেকে লবণ তৈরি করে লবণ আইন ভঙ্গ করেন । গান্ধীজির লবণ আইন ভঙ্গের পরেই সারা দেশ জুড়ে শুরু হয় আইন অমান্য আন্দোলন ।
মূল্যায়ন
গান্ধীজির ডান্ডি অভিযানকে সমর্থন করে জাতীয় নেতারা এর প্রশংসা করেন । জওহরলাল নেহরু গান্ধীজির এই ডান্ডি অভিযানকে নীরব তীর্থযাত্রা ( ‘ Quiet Pilgrimage ‘ ) বলে উল্লেখ করেছেন । সুভাষচন্দ্র বসু গান্ধীজির এই ডান্ডি অভিযানকে নেপােলিয়নের এলবা দ্বীপ থেকে প্যারিস প্রত্যাবর্তনের সঙ্গে তুলনা করেছেন ।
Good