আমেরিকার ইতিহাসে অর্থনৈতিক তেজিভাব এর ফলাফল
Contents
আমেরিকার ইতিহাসে অর্থনৈতিক তেজিভাব এর ফলাফল
আমেরিকার ইতিহাসে অর্থনৈতিক তেজিভাব এর সুফল
জাতীয় আয় বৃদ্ধি :
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক তেজিভাবের ফলে জাতীয় আয় অনেকগুণ বেড়ে যায় । এক পরিসংখ্যান থেকে জানা যায় , ১৯২০-২৯ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে মােট জাতীয় আয় বাড়ে শতকরা ৩১ ভাগ ।
জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধি :
মার্কিন অর্থনীতির তেজিভাবের সুফলরূপে জাতীয় উৎপাদন বহু গুণ বাড়ে । এই উৎপাদন বাড়ার পিছনে ছিল বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার , উন্নত প্রযুক্তি , নিত্য নতুন কলা কৌশলের প্রয়ােগ এবং পর্যাপ্ত মূলধনের জোগান । ১৯২০-২৯ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মােট উৎপাদন বৃদ্ধির হার ছিল শতকরা ৪৬ ভাগ ।
শ্ৰমিক কল্যাণ :
শিল্পের উন্নত পরিকাঠামােয় শ্রমিকদের সামাজিক অবস্থানের উন্নয়ন ঘটেছিল । এর পাশাপাশি শ্রমিকদের মজুরি শতকরা ২৬ ভাগ বেড়েছিল ।
মার্কিনবাসীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন :
মােট জাতীয় আয় ও মােট জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে মার্কিনবাসীর জীবনযাত্রার মান উন্নত হয় । তাদের সামনে এক অন্তহীন সমৃদ্ধির দিগন্ত খুলে যায় । মার্কিনবাসীর সমৃদ্ধ জীবন প্রসঙ্গে কান জে. এইচ. হেইজ এবং পি. কে. মুন উল্লেখ করেছেন রাষ্ট্রপতি হুভার প্রতিটি পাত্রে মুরগি এবং প্রতিটি গ্যারেজে দুটি করে গাড়ির কথা বলেন ।
আমেরিকার ইতিহাসে অর্থনৈতিক তেজিভাব এর কুফল
মার্কিন অর্থনীতিতে তেজিভাবের কিছু কুফলও ছিল ।
কৃষি সংকট :
শিল্প প্রতিষ্ঠান ও শিল্পজাত পণ্যের ওপর অধিক গুরুত্ব আরােপ করার ফলে কৃষি অবহেলিত হয় । কৃষিজ পণ্যের দাম হু হু করে কমতে থাকায় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষিজ পণ্যের ন্যায্য মতাে দাম পায় না , ফলে কৃষি ব্যবস্থায় সংকট নেমে আসে ।
দরিদ্র শ্রেণির অসহায়তা :
মার্কিন অর্থনীতির তেজিভাবের সুফল পুরােটাই ভােগ করেছিল এক শ্রেণির শিল্পপতি ও বাণিজ্যিক গােষ্ঠী । দরিদ্র শ্রেণি এর সুফল থেকে বঞ্চিত হওয়ায় এদের জীবনযাত্রার কোনাে হেরফের ঘটেনি ।
সকল শিল্পের সমোন্নয়নের অভাব :
মার্কিন অর্থনীতির তেজিভাবের প্রভাব সকল শিল্পের ওপর সমানভাবে পড়েনি । বিশেষত কয়লা শিল্প অনুন্নতই রয়ে যায় ।
উপসংহার
বিংশ শতাব্দীর দুই – এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির তেজিভাব -এর স্থায়িত্ব ছিল সাময়িক । কারণ ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দ থেকেই শুরু হয়েছিল মার্কিন অর্থনীতিতে মহামন্দা । যাইহােক ১৯২১-২৯ খ্রিস্টাব্দ এই সময়কাল মার্কিন ইতিহাসের প্রাচুর্যের যুগ নামে পরিচিত ।