হরপ্পা সভ্যতার / সিন্ধু সভ্যতার ব্যবসা বাণিজ্য
হরপ্পা সভ্যতার / সিন্ধু সভ্যতার ব্যবসা বাণিজ্য
হরপ্পার অর্থনৈতিক জীবনের অন্যতম দিক ছিল বাণিজ্য । ড. রণবীর চক্রবর্তীর মতে , হরপ্পার ধ্বংসাবশেষ থেকে যেসব ধাতু পাওয়া গেছে , তার অধিকাংশই ভারতে পাওয়া যেত না । সম্ভবত অন্যান্য দেশ থেকে বাণিজ্যের সূত্রে সেগুলি এখানে আনা হত । যেমন , বালুচিস্তান থেকে আসত তামা , পশ্চিম – এশিয়া থেকে আনা হত মূল্যবান পাথর ইত্যাদি ।

1. ব্রিজেৎ অলচিন ও রেমন্ড অলচিন মনে করেন যে , ধাতুর জোগান নিশ্চিত করার জন্য হরপ্পাবাসীরা বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বাণিজ্য চালাত । অধিকাংশ পণ্ডিতের অনুমান , তারা দূরপাল্লার সমুদ্রবাণিজ্যেও অংশ নিত ।
2. জে. সি. গ্যাড মেসােপটেমিয়ার উর অঞ্চল থেকে হরপ্পা সভ্যতার চব্বিশটি সিলমােহর আবিষ্কার করেছেন ( ১৯২৩ খ্রি ) । এ থেকে অনুমান করা হয় যে , টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস উপত্যকার সঙ্গে সিন্ধু – উপত্যকার বাণিজ্য সম্পর্ক ছিল ।
3. মেসােপটেমিয়াতে হরপ্পার বণিকদের বসতি ছিল বলে মার্টিনার হুইলার অনুমান করেছেন । পশ্চিম – এশিয়ায় কীলকাকার একটি ফলকের ভিত্তিতে হুইলার , অলচিন প্রমুখ মনে করেন যে , মেসােপটেমিয়া ও হরপ্পার মধ্যে বাণিজ্য – সম্পর্ক ছিল ।
4. গুজরাটের অন্তর্গত লােথালে একটি পােতাশ্রয়ের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে । এটি হরপ্পা সংস্কৃতির আমলে সমুদ্রবাণিজ্যের সাক্ষ্য বহন করে । লােথালে বাতামের মতাে ছােটো ছােটো সিলমােহর পাওয়া গেছে । সম্ভবত বাণিজ্যিক লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে এগুলি ব্যবহৃত হত । এগুলি পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে লােথালে এসেছে বলে পণ্ডিতদের ধারণা ।
5. সম্ভবত বিদেশ থেকে হরপ্পা সভ্যতায় সােনা , টিন , সিসা , রুপা , তামা , শঙ্খ , দেবদারু কাঠ , নীলকান্তমণি প্রভৃতি আমদানি করা হত । অপরদিকে রপ্তানি দ্রব্যগুলির মধ্যে হাতির দাঁত , মণিমুক্তো , চিরুনি , সুতিবস্ত্র , ময়ূর ও ময়ূরপুচ্ছ প্রভৃতি ছিল প্রধান ।