হরপ্পা সভ্যতার অধিবাসীদের অর্থনৈতিক অবস্থা
Contents
হরপ্পা সভ্যতার অধিবাসীদের অর্থনৈতিক অবস্থা

যথেষ্ট মজবুত ছিল হরপ্পা – সংস্কৃতির অর্থনৈতিক বুনিয়াদ।
হরপ্পা সভ্যতার কৃষি
কৃষি ও শিল্প উভয়ক্ষেত্রেই যথেষ্ট উন্নতি পরিলক্ষিত হলেও এখানকার সমৃদ্ধ অর্থনীতির মূল ভিত্তি ছিল কৃষি । এসময় কাঠের ফলাযুক্ত লাঙল দ্বারা কৃষি জমি কর্ষণ করা হত এবং কৃষিক্ষেত্রে জলসেচের ব্যবস্থা ছিল । সেসময় গম , যব , ছােলা , কলাই , সরষে , তরিতরকারি এবং কার্পাস ইত্যাদি উৎপাদিত হত বলে মনে করা হয় ।
হরপ্পা সভ্যতার পশুপালন
পশুপালন ছিল হরপ্পার অধিবাসীদের অপর জীবিকা । গৃহপালিত পশুর মধ্যে গােরু , মহিষ , ভেড়া , ছাগল , শূকর ও উট ছিল প্রধান । গাে – সম্পদের গুরুত্ব ছিল যথেষ্ট ।
হরপ্পা সভ্যতার ধাতু শিল্প ও মৃৎশিল্প
সিন্ধু অঞ্চলে লােহার কোনাে চিহ্ন পাওয়া যায়নি । ধাতুর মধ্যে তামা ও ব্রোঞ্জের ব্যবহার ছিল । এগুলি থেকে বর্শা , কুঠার , বঁড়শি , করাত , সুচ প্রভৃতি তৈরি করা হত । এসময় সােনা ও রুপাের অলংকার তৈরি হত । হরপ্পার দাঁড়িপাল্লা এবং পাথরের বাটখারাও পাওয়া গেছে । মৃৎশিল্পীরা পলিমাটি , বালি ও চুনের গুঁড়াে মিশিয়ে কলশি , জালা , থালা প্রভৃতি নিত্য ব্যবহার্য দ্রব্যাদি ও নানাপ্রকার খেলনা তৈরি করত । এগুলিকে আগুনে পুড়িয়ে মজবুত করে রং করা হত ।
হরপ্পা সভ্যতার ব্যবসা বাণিজ্য
সমুদ্রপথেই সিন্ধু দেশের সঙ্গে মিশর , সুমের প্রভৃতি দেশের বাণিজ্যিক যােগাযােগ ছিল । গুজরাটের অন্তর্গত লােথালে আবিষ্কৃত পােতাশ্রয়ের ধ্বংসাবশেষ এই তথ্যকে সমর্থন করে । জলপথে জাহাজে এবং স্থলপথে চাকাওয়ালা ঠেলা গাড়ি ও শকটের সাহায্যে ব্যাবসাবাণিজ্য চলত । বিনিময়ের মাধ্যমেই বেচাকেনা হত । মেসােপটেমিয়া , সুমের প্রভৃতি অঞ্চলে সিন্ধু অঞ্চল থেকে পাঠানাে কাপড়ের গাঁটে প্রাপ্ত সিল দেখে মনে করা হয় সিন্ধুবাসীরা ব্যাবসা বাণিজ্যে সিল ব্যবহার করতেন ।