প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় দেশীয় সাহিত্যের অবদান
Contents
প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় দেশীয় সাহিত্যের অবদান

ভারতবর্ষে গ্রিসের মতাে কোনাে হেরােডােটাস বা থুকিডিডিস , ইতালির মতাে কোনাে লিভি বা ট্যাকিটাস জন্মগ্রহণ করেননি যিনি উত্তরকালের ভারতবাসীর জন্য একটি সুসংবদ্ধ ইতিহাস রচনা করে গেছেন । তাই প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনার জন্য বিভিন্ন উপাদানের ওপর নির্ভর করতে হয় । এর মধ্যে সাহিত্যিক উপাদান অন্যতম । সাহিত্যিক উপাদানের মধ্যে দেশীয় সাহিত্য বিশেষ উল্লেখযােগ্য । দেশীয় সাহিত্যকে নিম্নলিখিত বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে আলােচনা করা যেতে পারে ।
ধর্মশাস্ত্র
চতুর্বেদ , পুরাণ , স্মৃতিশাস্ত্রসমূহ , ‘ রামায়ণ ’ ও ‘ মহাভারত ‘ ইত্যাদি হিন্দু ধর্মশাস্ত্র ; ‘ ত্রিপিটক ’ , ‘ জাতক ‘ ইত্যাদি বৌদ্ধ ধর্মীয় সাহিত্য এবং দ্বাদশ অঙ্গ , পরিশিষ্ট পর্বণ , ভগবতী – সূত্র ও আচারাঙ্গ সূত্র – এর মতাে জৈন সাহিত্য থেকে প্রাচীন ভারতের সমাজ , রাজনীতি ও অর্থনীতি সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া যায় ।
জীবনচরিত
বাণভট্টের ‘ হর্ষচরিত ’ , বিলহনের ‘ বিক্রমাঙ্কদেবচরিত ’ , সন্ধ্যাকর নন্দীর ‘ রামচরিত ’ এবং বাকপতিরাজের ‘ গৌড়বাহ ’ ইত্যাদি জীবনচরিতগুলিতে মূল্যবান ঐতিহাসিক তথ্যাদি থাকায় এগুলি প্রাচীন ভারত – ইতিহাস রচনার মূল্যবান উপাদান হিসেবে স্বীকৃত ।
আঞ্চলিক ইতিহাস গ্রন্থ
কলহনের ‘ রাজতরঙ্গিণী ’ থেকে কাশ্মীরের রাজবংশগুলির এবং সােমেশ্বরের ‘ রাসমালা ’ ও রাজশেখরের ‘ প্রবন্ধকোষ ’ থেকে গুজরাটের রাজবংশের ধারাবাহিক ইতিহাস পাওয়া যায় ।
ভিন্ন স্বাদের গ্রন্থ
প্রাচীন ভারতে ব্যাকরণ , অভিধান , কাব্য , নাটক ও অর্থনীতি বিষয়ে রচিত বিভিন্ন গ্রন্থ ভারত – ইতিহাস রচনার মূল্যবান উপাদান । এগুলির মধ্যে পানিনির ‘ অষ্টাধ্যায়ী ‘ ব্যাকরণ – গ্রন্থ ও পতঞ্জলির ‘ মহাভাষ্য ’ , জ্যোতির্বিদ্যা বিষয়ক গ্রন্থ ‘ গার্গী – সংহিতা ’ , অর্থনীতি বিষয়ক গ্রন্থ কৌটিল্যের ‘ অর্থশাস্ত্র ‘ এবং নাট্যগ্রন্থ শূদ্রকের ‘ মৃচ্ছকটিকম্ ’ , বিশাখদত্তের ‘ মুদ্রারাক্ষস ’ , ভাসের ‘ স্বপ্নবাসবদত্তা ’ ও কালিদাসের ‘ রঘুবংশম ’ , ‘ মালবিকাগ্নিমিত্র ’ ও ‘ অভিজ্ঞান শকুন্তলম্ ’ বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে ।