ভারতের ইতিহাসে হিমালয়ের প্রভাব
Contents
ভারতের ইতিহাসে হিমালয়ের প্রভাব
ভারত – ইতিহাসের গতিধারায় হিমালয়ের অবদান অপরিসীম । ঐতিহাসিক পানিক্কর হিমালয়কে ভারতের ভূপ্রকৃতির প্রধানতম বৈশিষ্ট্য বলে উল্লেখ করেছেন ।

প্রাকৃতিক সুরক্ষা প্রদান
ভারতের উত্তর সীমান্তে অতন্দ্র প্রহরীর মতাে দাঁড়িয়ে থেকে হিমালয় পর্বতমালা যুগ যুগ ধরে ভারতকে প্রাকৃতিক সুরক্ষা প্রদান করছে ।
ভারত – সংস্কৃতির বিবর্তনে হিমালয়ের গিরিপথের ভূমিকা
হিমালয়ের ওপর উত্তর – পশ্চিমে খাইবার , বােলান , গােমাল ইত্যাদি এবং উত্তর – পূর্বে নাথুলা , বুমেলা ইত্যাদি গিরিপথ রয়েছে । এই পথ দিয়ে অতি প্রাচীন কাল থেকে আর্য , পারসিক , গ্রিক , শক , পহ্লব প্রভৃতি জাতি – উপজাতি এবং বিদেশি সভ্যতা সংস্কৃতি ভারতবর্ষে প্রবেশ করেছে । ভারতীয় সংস্কৃতির মর্মবাণী অহিংসা ও সৌভ্রাতৃত্ব হিমালয়ের নিভৃত বক্ষেই জন্মলাভ করেছে — যা পৃথিবীকে মুক্তির পথ দেখিয়েছে । এইভাবে ভারত – সংস্কৃতির বিবর্তন ঘটেছে ।
ভারতের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে হিমালয়
হিমালয়ের বুকে গড়ে ওঠা পর্যটন কেন্দ্রগুলি , তীর্থক্ষেত্র , বাগিচা ক্ষেত্রগুলি ভারতের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে । আবার হিমালয়ের ওপর অবস্থিত গিরিপথগুলি এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সংযােগ রক্ষা করেছে ।
ভারতের জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে হিমালয়
হিমালয় সাইবেরিয়ার শীতল বাতাসকে বাধা দিয়ে ভারতকে মরুভূমিতে পরিণত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করেছে । আবার দক্ষিণ – পশ্চিম মৌসুমি বায়ুকে বাধা দিয়ে ভারতকে শস্যশ্যামলা রূপে গড়ে তুলেছে । হিমালয়ের জন্যই ভারতের জলবায়ু নাতিশীতোষ্ণ প্রকৃতির ।
ভারতীয় সভ্যতার বিকাশে হিমালয় থেকে উদ্ভূত নদনদীর ভূমিকা
হিমালয় পর্বতমালা থেকে উদ্ভুত গঙ্গা , যমুনা , ঝিলাম , চন্দ্রভাগা , ইরাবতী , বিপাশা , শতদ্রু প্রভৃতি নদনদীর তীরে যুগ যুগ ধরে গড়ে উঠেছে বহু ঐতিহাসিক নগর – জনপদ , বাণিজ্যকেন্দ্র আর তীর্থক্ষেত্র ।
ভারত – ইতিহাসে হিমালয়ের এই ব্যাপক প্রভাব লক্ষ করে ঐতিহাসিক কে. এম. পানিক্কর যথার্থই বলেছেন , মিশরকে ‘ নীলনদের দান ’ বলা গেলে ভারতকে নির্দ্বিধায় ‘ হিমালয়ের দান ’ বলা যেতে পারে ।