গলন/কঠিনীভবন কাকে বলে
Contents
গলন/কঠিনীভবন কাকে বলে

গলন ( Melting )
তাপ প্রয়ােগের ফলে কোনাে কঠিন পদার্থের তরলে পরিণত হওয়ার ঘটনাকে গলন বলে । দেখা যায় যে , একটি নির্দিষ্ট চাপে কোনাে কঠিন পদার্থের গলন হয় একটি নির্দিষ্ট উষ্ণতায় । যতক্ষণ পর্যন্ত কঠিন পদার্থের সবটুকু গলে না যায় ততক্ষণ তাপ প্রয়ােগ করা সত্ত্বেও উষ্ণতা বাড়ে না । যেমন — বরফে তাপ প্রয়ােগ করলে 0°C উষ্ণতায় বরফ গলে জলে পরিণত হয় । যতক্ষণ না সমস্তু বরফ গলে যায় ততক্ষণ উষ্ণতা 0°C থাকে । যে উষ্ণতায় কঠিন পদার্থ গলে তরলে পরিণত হয় তাকে গলনাঙ্ক বলে । দেখা যায় যে এই গলনাঙ্কের মান বাহ্যিক চাপের উপর নির্ভর করে । তাই , নির্দিষ্ট চাপে ( প্রমাণ বায়ুচাপে ) যে উষ্ণতায় কোনাে কঠিন পদার্থ তাপ প্রয়ােগের ফলে কঠিন থেকে তরল হতে শুরু করে এবং সমস্ত কঠিন সম্পূর্ণরুপে তরলে পরিণত না হওয়া পর্যন্ত ওই উষ্ণতা স্থির থাকে তাকে ওই কঠিন পদার্থের গলনাঙ্ক বলে ।
কঠিনীভবন ( freezing )
তাপ নিষ্কাশনের ফলে কোনাে তরল পদার্থের কঠিন পদার্থে পরিণত হওয়ার ঘটনাকে কঠিনীভবন বলে । দেখা যায় যে , একটি নির্দিষ্ট চাপে একটি নির্দিষ্ট উষ্ণতায় কোনাে তরল পদার্থ জমে কঠিন হয় । যতক্ষণ পর্যন্ত তরল পদার্থের সবটুকু জমে না যায় ততক্ষণ পর্যন্ত তাপ নিষ্কাশন সত্ত্বেও উষ্ণতা কমে না । যেমন — জল থেকে তাপ নিষ্কাশন করলে 0°C উষ্ণতায় জল জমতে শুরু করে এবং যতক্ষণ না সব জল জমে বরফ হয় ততক্ষণ উষ্ণতা 0°C থেকে যায় । যে উষ্ণতায় তরল পদার্থ জমে কঠিন পদার্থে পরিণত হয় তাকে হিমাঙ্ক বলে । দেখা যায় যে এই হিমাঙ্কের মান বাহ্যিক চাপের উপর নির্ভর করে । তাই নির্দিষ্ট চাপে ( প্রমাণ বায়ুচাপে ) যে উষ্ণতায় কোনাে তরল পদার্থ তাপ নিষ্কাশনের ফলে তরল থেকে কঠিন হতে শুরু করে এবং সমস্ত তরল সম্পূর্ণরূপে কঠিনে পরিণত না হওয়া পর্যন্ত ওই উষ্ণতা স্থির থাকে তাকে ওই তরল পদার্থের হিমাঙ্ক বলে ।
দেখা যায় যে বিশুদ্ধ এবং কঠিন অবস্থায় কেলাসাকার পদার্থের গলনাঙ্ক ও হিমাঙ্ক নির্দিষ্ট ও সমান হয় । কিন্তু অনিয়তাকার বা প্লাস্টিক জাতীয় পদার্থ যেমন — কাচ , চর্বি , মাখন , মােম ইত্যাদির গলনাঙ্ক ও হিমাঙ্কের মান নির্দিষ্ট হয়না বা এদের মান সমানও হয় না । এই অনিয়তাকার পদার্থগুলিকে উত্তপ্ত করলে প্রথমে এরা না কঠিন না তরল বা সান্দ্র অবস্থায় আসে । ফলে ঠিক কোন উষ্ণতায় গলন বা কঠিনীভবন শুরু হয় তা বােঝা যায় না ।
গলন ও কঠিনীভবনে আয়তনের পরিবর্তন
সাধারণত কঠিন পদার্থ গলে তরল হলে আয়তন বাড়ে এবং তরল পদার্থ জমে কঠিন হলে আয়তন কমে । কিন্তু কয়েকটি ক্ষেত্রে এই নিয়মের ব্যতিক্রম দেখা যায় । যেমন — বরফ , ঢালাই , লােহা , পিতল প্রভৃতি কঠিন পদার্থ তরলে পরিণত হলে আয়তন কমে যায় এবং এই পদার্থগুলি তরল থেকে কঠিন হলে আয়তন বেড়ে যায় । 0°C উষ্ণতায় 12 সিসি বরফ গলে 0°C উষ্ণতায় 11 সিসি জলে পরিণত হয় । জল জমে বরফ হলে যে আয়তন বাড়ে তার কিছু সুবিধা ও অসুবিধা আছে —
- শীতপ্রধান দেশে বায়ুর উষ্ণতা 0°C – এর নীচে নেমে গেলে জলাশয়ের উপরের জল জমে বরফ হয়ে যায় । জল অপেক্ষা বরফের আয়তন বেশি বা ঘনত্ব কম । ফলে এই বরফ জলের উপর ভাসে কিন্তু জলাশয়ের নীচের জলের উষ্ণতা 4°C থেকে যায় । কারণ দেখা যায় যে 4°C উষ্ণতায় জলের ঘনত্ব সর্বোচ্চ হয় । ফলে জলাশয়ের নীচে জলচর প্রাণীরা প্রচণ্ড শীতেও বেঁচে থাকতে পারে ।
- শীতের দেশে প্রচণ্ড ঠান্ডায় পাইপের জল জমে বরফ হলে আয়তন বাড়ে । ফলে পাইপের উপর প্রচণ্ড চাপ পড়ে এবং পাইপ ফেটে যায় । তবে এখানে উল্লেখ্য এই যে ঠান্ডা জলের পাইপ অপেক্ষা গরম জলের পাইপ ফাটার সম্ভাবনা বেশি । কারণ ঠান্ডা জলে কিছু পরিমাণ বায়ু দ্রবীভূত থাকে । জল জমতে শুরু করলে দ্রবীভূত বায়ু বেরিয়ে যায় এবং জল বরফ হওয়ার জন্য যেটুকু আয়তন বাড়ে তা ওই অপসারিত বায়ুর স্থান দখল করে । কিন্তু গরম জলে বায়ু দ্রবীভূত না থাকায় ওই রকম ঘটনা ঘটতে পারে না , তাই পাইপ ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি হয় ।
- শীতের দেশে প্রচণ্ড ঠান্ডায় মােটর গাড়ির রেডিয়েটারের জল জমে বরফ হয়ে গেলে আয়তন বাড়ে , ফলে রেডিয়েটার ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে ।
ঢালাই লােহা বা পিতল তরল থেকে কঠিন হলে আয়তন বাড়ে । এই ধর্মের জন্য ঢালাই লোহা ও পিতলকে ঢালাইয়ের কাজে ব্যবহার করা হয় । গলিত অবস্থায় ঢালাই লোহা বা পিতলকে ঢালাইয়ের ছাঁচে ঢেলে দেওয়া হয় । এটি জমে কঠিন হলে আয়তন বাড়ে এবং ছাঁচকে সম্পূর্ণভাবে ভরে তােলে । যার ফলে ঢালাইয়ের ধারগুলি সূক্ষ্ম হয় এবং অবিকল ছাঁচের আকার পায় ।
torol podarto k sitol kore kotine porinoto korar prokriake kotinibhobon bole
That answer is different and meaningful.
Thanks for that…