ফেরেলের সূত্র কাকে বলে আলোচনা করো
ফেরেলের সূত্র কাকে বলে আলোচনা করো

পৃথিবীর আবর্তন গতির ফলে নিয়ত বায়ুপ্রবাহ ও সমুদ্রস্রোতের গতিবিক্ষেপ হয় । কারণ হিসাবে বলা যেতে পারে নিরক্ষরেখা থেকে মেরুর দিকে পৃথিবীর পরিধি ক্রমশ কম এবং এজন্য নিরক্ষরেখাতে পৃথিবীর আবর্তনের গতিবেগও সবচেয়ে বেশি হয় ও মেরুর দিকে তা ক্রমশ কমে যায়। এর ফলে উত্তর গোলার্ধের যে-কোন অঞ্চল থেকে কোনো বাতাস দক্ষিনে নিরক্ষরেখার দিকে প্রবাহিত হলে ওই বাতাসের আবর্তনের গতিবেগ নিরক্ষরেখার তুলনায় স্বাভাবিকভাবে একটু কম থাকে। অথচ ওই বায়ু আগেকার অঞ্চলের গতিবেগ বজায় রাখতে চেষ্টা করে, এর ফলে গতিবিক্ষেপ হয়। এজন্য দ্রাঘিমারেখা বরাবর সোজাসুজি প্ৰবাহিত না হয়ে একটু ডানদিকে বেঁকে যায়। একই কারণে নিরক্ষরেখা থেকে ক্রমশ উত্তরদিকে প্রবাহিত বায়ুও ডানদিকে বেঁকে যায় এবং দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণ থেকে উত্তরে বা উত্তর থেকে দক্ষিনে বায়ু প্রবাহিত হওয়ার সময় বাঁ দিকে বেঁকে যায়। যেমন ー নিরক্ষীয় শান্ত বলয়ের দিকে প্রবাহিত আয়ন বায়ু উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে বেঁকে উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাঁ দিকে বেঁকে দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু নামে পরিচিত হয়। পৃথিবীর আবর্তনের জন্য বায়ুপ্রবাহের মতো একইভাবে সমুদ্রস্রোত বা অন্য যে-কোন গতিশীল পদার্থের গতিবিক্ষেপ হয়।
এইভাবে দেখা যায়, আবর্তনের বেগের তারতম্যের জন্য নিয়ত বায়ুপ্রবাহ, সমুদ্রস্রোত প্রভৃতি ভূপৃষ্ঠের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকটি গতিশীল পদার্থ নিরক্ষরেখা থেকে উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাঁ দিকে বেঁকে যায়। এই সূত্রটি আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানী ফেরেল। তাই এটি ফেরেলের সূত্র নামে পরিচিত।