ভিয়েনা সম্মেলন সম্পর্কে আলোচনা কর

ভিয়েনা সম্মেলন সম্পর্কে আলোচনা কর

নেপােলিয়ন বােনাপার্টের পতনের পর বিজয়ী রাষ্ট্রনেতাগণ ইউরােপের পুনর্গঠন ও পুনর্বণ্টনের জন্য অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় ১৮১৪ খ্রি. ১ নভেম্বর এক সম্মেলনের আহ্বান করে যা ‘ ভিয়েনা সম্মেলন ’ বা ‘ ভিয়েনা কংগ্রেস ’ নামে পরিচিত । সম্মেলন পরিচালনা করার মূল ক্ষমতা ও দায়িত্ব ছিল — অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর প্রিন্স মেটারনিখ সম্রাট প্রথম ফ্রান্সিস , রাশিয়ার জার প্রথম আলেকজান্ডার , ইংল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাসলারি , প্রাশিয়ার রাজা তৃতীয় ফ্রেডারিক উইলিয়মচ্যান্সেলর হার্ডেনবার্গ – এর ওপর । ঐতিহাসিক সি. ডি. হ্যাজেন – এর মতে — ভিয়েনা কংগ্রেস ছিল ইউরােপের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সমাবেশ (‘ The Congress of Vienna was one of the most important diplomatic gatherings in the history of Europe ’) ।

the congress of vienna 4 638
ভিয়েনা সম্মেলন

ভিয়েনা সম্মেলনের লক্ষ্য

বিজয়ী রাষ্ট্রের নেতৃবর্গ নির্দিষ্ট কয়েকটি লক্ষ্যপূরণের জন্য ভিয়েনা সম্মেলনে যােগ দেন । যেমন 一

  1. বিগত দুই যুগ ধরে ভেঙে পড়া ইউরােপীয় রাষ্ট্রব্যবস্থার পুনর্গঠনের চেষ্টা করা ,
  2. ইউরােপের বৃহৎ শক্তিবর্গের মধ্যে উদ্ভূত স্বার্থদ্বন্দ্বের শান্তিপূর্ণ মীমাংসা করা ,
  3. ইউরােপের রাষ্ট্রগুলির মধ্যে পারস্পরিক সহযােগিতার সম্পর্ক গড়ে তােলা ও তাদের কাজের মধ্যে সমন্বয় ঘটানাে ।

ভিয়েনা সম্মেলনের নীতি সমূহ

১৮১৫ খ্রি. ভিয়েনা সম্মেলনে তিনটি নীতি গ্রহণ করা হয় । নীতি তিনটি হল :

  1. ন্যায্য অধিকার ,
  2. ক্ষতিপূরণ
  3. শক্তিসাম্য নীতি

ন্যায্য অধিকার নীতি :

এই নীতির মূল উদ্দেশ্য ছিল ইউরােপে যতদূর সম্ভব প্রাক্ – বিপ্লব যুগকে ফিরিয়ে আনা । অর্থাৎ ফরাসি বিপ্লবের আগে যে ভূমি যে দেশের বা রাজবংশের অধীনে ছিল , সেই ভূমি সেই দেশ বা বংশের অধীনে ফিরিয়ে দেওয়াই ছিল এই নীতির মূল বক্তব্য । এই নীতির বলে বিপ্লব – পূর্ব সীমানাই ফ্রান্সের নতুন বৈধ রাজ্যসীমা হিসেবে স্বীকৃত হয় । বুরবোঁ বংশীয় অষ্টাদশ লুই ফ্রান্সের নতুন রাজা হন । এইভাবেই স্পেন , সিসিলি ও নেপলসে বুরবোঁ বংশ , হল্যান্ডে অরেঞ্জ বংশ , সার্ডিনিয়া – পিডমন্টে স্যাভয় বংশ এবং মধ্য ইতালিতে পােপের কর্তৃত্ব ফিরে আসে । উত্তর ইতালি ও জার্মানির ওপর অস্ট্রিয়ার প্রাধান্য পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় ।

ক্ষতিপূরণ নীতি :

এই নীতি অনুযায়ী নেপােলিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যেসব দেশ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল , তাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হয় । যেমন , ফিনল্যান্ড ও বেসারাবিয়া – সহ পােল্যান্ডের ৩/৪ অংশ রাশিয়াকে দেওয়া হয় । অস্ট্রিয়া তার নিজের হারানাে অংশ ছাড়াও ইতালির ভেনেসিয়া ও লম্বার্ডি লাভ করে । প্রাশিয়া পােল্যান্ডের বাকি ১/৪ অংশ ও সাক্সনির ২/৫ অংশ ছাড়াও , নেপােলিয়ন কর্তৃক অধিকৃত তার সমস্ত অঞ্চল ফিরে পায় । ইংল্যান্ড ইউরােপের বাইরের মাল্টা , মরিশাস , সিংহল , ত্রিনিদাদ , উত্তমাশা অন্তরীপ প্রভৃতি স্থান লাভ করে। সুইডেন ক্ষতিপূরণ হিসেবে পায় নরওয়ে । পােপকে আবার স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত করা হয় ।

শক্তিসাম্য নীতি :

এই নীতি দ্বারা ভবিষ্যতে ফ্রান্স যাতে আবার শক্তি সঞ্চয় করে ইউরােপের শান্তিভঙ্গ করতে না পারে এবং সেই সঙ্গে বিজয়ী শক্তিবর্গও যাতে একে অন্যের চেয়ে বেশি শক্তিশালী হয়ে না ওঠে , তার ব্যবস্থা করা হয় । ফলে , ফ্রান্সের সেনাবাহিনীকে ভেঙে দিয়ে পাঁচ বছরের জন্য সেখানে মিত্রপক্ষের সেনাদল মােতায়েন করা হয় । তা ছাড়া ফ্রান্সের চারপাশে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রবেষ্টনী গড়ে তােলা হয় । এই কারণে ফ্রান্সের উত্তর – পূর্ব সীমান্তে অবস্থিত বেলজিয়ামকে হল্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত করা হয় , পূর্ব সীমান্তে জার্মানির রাইন প্রদেশগুলিকে প্রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করা হয় , দক্ষিণ – পূর্ব সীমান্তে অবস্থিত সুইজারল্যান্ডকে ফ্রান্সের তিনটি জেলা দেওয়া হয় , দক্ষিণ সীমান্তে অবস্থিত সার্ডিনিয়ার সঙ্গে জেনােয়াকে যুক্ত করা হয় ।

ভিয়েনা সম্মেলনের সাফল্য

ভিয়েনা বন্দোবস্তে আগামী দিনের জন্য কোনাে যুদ্ধের বীজ রােপণ করা হয়নি বরং এই বন্দোবস্তের মাধ্যমে বৃহৎ শক্তিধর রাষ্ট্রগুলির মধ্যেকার সংঘাতের সম্ভাবনা বিনাশ করা হয়েছিল । আধুনিক ইউরােপের ইতিহাসে ভিয়েনা সম্মেলনের নীতি ও কার্যাবলিগুলির অধিকাংশই সাফল্যের মুখ দেখেছিল ।

আন্তর্জাতিকতা :

ভিয়েনা সম্মেলনে উপস্থিত প্রতিনিধিবর্গ জাতীয়তাবাদকে উপেক্ষা করলেও তাদের কার্যাবলির মধ্যে দিয়ে ভিয়েনাতেই আন্তর্জাতিকতার সূচনা ঘটেছিল । এই সম্মেলনে নেতৃবর্গ যেসব ব্যবস্থা অবলম্বন করেছিলেন সেগুলি লিগ অব নেশন্স ও ইউনাইটেড নেশনসের গৃহীত কার্যাবলির পূর্বাভাস বলা যেতে পারে । তাই ঐতিহাসিক ডেভিড থমসন  বলেছেন ভিয়েনা ব্যবস্থা মােটামুটিভাবে একটি যুক্তিসংগত ও কূটনীতিবিদসুলভ ব্যবস্থা ছিল (‘ On the whole it was a reasonable and statesmanlike arrangement ’) ।

শান্তিপ্রতিষ্ঠা :

ভিয়েনা সম্মেলনের সূচনাকাল থেকে পরবর্তী চল্লিশ বছর ধরে ইউরােপের বুকে শান্তি বিরাজিত ছিল । ভিয়েনার প্রতিনিধিবর্গ বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য বেশ কিছু শর্ত রূপায়ণ করেছিলেন । ঐতিহাসিক ফিশার – এর মতে — সমস্ত ত্রুটিবিচ্যুতি সত্ত্বেও এই সম্মেলন ( ভিয়েনা ) ইউরােপকে তুলনামূলক শান্তি দান করতে সক্ষম হয়েছিল । (‘ With all its shortcomings , it gave Europe forty years of comparative peace ’)

ইউরােপের পুনর্গঠন :

ভিয়েনা সম্মেলন ইউরােপের পুনর্গঠন করেছিল বলা চলে । জার্মানির রাজ্যগুলিকে এক যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসা , নরওয়ে ও সুইডেনকে একজোট করা , বেলজিয়ামকে হল্যান্ডের অধীনে এনে ইউরােপীয় রাষ্ট্রব্যবস্থার নিরাপত্তা বৃদ্ধি করেছিল ।

ঐক্য প্রতিষ্ঠা :

ভিয়েনা সম্মেলনের বেশ কিছু শর্তের প্রকৃতি প্রতিক্রিয়াশীল হলেও সেগুলির মধ্যে ভবিষ্যতের ঐক্য প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা লুকিয়েছিল । যেমন সার্ডিনিয়া – পিডমন্টের সঙ্গে জেনােয়া যুক্ত হলে ইতালি এক ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্রের রূপ পায় । এ ছাড়াও রাইন অঞ্চলে প্রাশিয়ার আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হলে প্রাশিয়ার নেতৃত্বে জার্মানির ঐক্য আন্দোলন শক্তিশালী হয়ে ওঠে ।

পূর্বেকার চুক্তিগুলির পুনর্মূল্যায়ন :

ভিয়েনা সম্মেলন তার পূর্বেকার চুক্তিগুলির পুনর্মূল্যায়ন করেছিল । ইউরােপীয় রাষ্ট্রগুলি নেপােলিয়নের সঙ্গে সমঝােতায় আসতে গিয়ে ফ্রান্সের সঙ্গে যেসব চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল । সেগুলির শর্তাবলি নতুনরূপে মূল্যায়ন হয়েছিল এই সম্মেলনে । অ্যাবাের সন্ধি , কালিসের চুক্তি , রাইশেনবেক চুক্তি , টোপলিজের চুক্তি প্রভৃতি ছিল এর মধ্যে উল্লেখযােগ্য । গ্রান্ট  এবং টেম্পারলির  মতে — ওই ( ভিয়েনার ) চুক্তিসমূহ পুরাতন ইউরােপের ভালাে দিকগুলির প্রতিফলন , সর্বনিকৃষ্ট দিকগুলির নয় ।

ভিয়েনা সম্মেলনের সমালােচনা

নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিতে ভিয়েনা সম্মেলনের কার্যাবলি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় , এই সম্মেলনের নেতৃবর্গের মুখ আর মুখােশের পার্থক্য তাদের কার্যাবলির মধ্যে দিয়ে আলাদাভাবে প্রকাশ হয়ে পড়েছিল ।

স্থায়িত্বের অভাব :

ভিয়েনা সম্মেলনে উপস্থিত বৃহৎ রাষ্ট্রগুলির নেতৃবর্গ যেসব চুক্তি তৈরি করেছিলেন সেগুলি একপেশে ও স্বার্থপূর্ণ হওয়ায় স্থায়ী হয়নি । এইসব চুক্তির রচয়িতাগণ যে রাজনৈতিক অদূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছিলেন তার ফলেই এই সম্মেলনে উদ্ভূত সন্ধিগুলি অল্পদিনের মধ্যেই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে । হেইজ -এর মতে — ভিয়েনার ভূমিবণ্টন নীতি চিরস্থায়ী ছিল না , সেটি ছিল সাময়িককালের জন্য মাত্র ( ” In all these territorial readjustments , there was little that was permanent and much that was temporary ” ) .

জাতীয়তাবাদ ও উদারনীতিকে উপেক্ষা :

ভিয়েনা সম্মেলনে যেসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল সেগুলি ছিল জাতীয়তাবাদ ও উদারনীতিবাদের বিরােধী । ইতালি , জার্মানি , স্পেন ও পােল্যান্ডসহ ইউরােপের বিভিন্ন অঞ্চলে যে জাতীয়তাবাদী ভাবধারার উদ্ভব ঘটেছিল তাকে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করা হয়েছিল এই সন্মেলনে ।

প্রগতিশীল আদর্শ ধ্বংস :

ফরাসি বিপ্লবের ভাবধারাপ্রসূত সাম্য , মৈত্রী , স্বাধীনতা , দেশপ্রেম ইত্যাদি প্রগতিশীল আদর্শগুলিকে সমূলে ধ্বংস করার বেশ কিছু নীতি অনুমােদিত হয়েছিল এই সম্মেলনে । এইচ. এ. কিসিংগারের  মতে — ভিয়েনার রাষ্ট্রনেতাবর্গ মানবতার দ্বারা চালিত হয়নি (” The statesman at Vienna were not interested in transforming humanity “) ।

যুগবিরােধী :

ভিয়েনা সম্মেলনের কার্যাবলি ও সিদ্ধান্তগুলি মােটেই যুগােপযােগী ছিল না । এগুলি ছিল যুগবিরােধী সিদ্ধান্ত , কেননা ন্যায্য অধিকার নীতি প্রয়ােগ করে পুনরায় পুরাতন রাজবংশগুলিকে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল । ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে চলতে গিয়ে যুগের দাবিকে অস্বীকার করা হয়েছিল ।

লােকদেখানো সম্মেলন :

ভিয়েনা সম্মেলনে অস্ট্রিয়া , ইংল্যান্ড , প্রাশিয়া , রাশিয়া -এই চারটি শক্তিধর রাষ্ট্র ছাড়াও ইউরােপের বেশ কিছু রাষ্ট্র যােগ দিয়েছিল । কিন্তু এই চারটি বৃহৎ রাষ্ট্রই গােপনে নিজেদের মধ্যে যাবতীয় সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে নিয়ে সম্মেলনে সেগুলি পাস করাত , তাই এই সম্মেলন ছিল নামমাত্র লােকদেখানাে সম্মেলন। ঐতিহাসিক রাইকার  ফ্রান্সসহ অপর বৃহৎ চার রাষ্ট্রের ভূমিকা প্রসঙ্গে বলেছেন বাস্তবিক ভিয়েনা সম্মেলন আদপেই কোনাে সম্মেলন নয় এই সম্মেলন ছিল পাঁচটি বৃহৎ শক্তিধর রাষ্ট্রের বিদেশমন্ত্রীদের সম্মেলন (” In fact , Strictly speaking there was no Congress at all – The foreign ministers of the five great powers were the Congress “) ।

প্রতিক্রিয়াশীল সম্মেলন :

ভিয়েনা সম্মেলন প্রতিক্রিয়াশীল নীতি প্রয়ােগের সম্মেলনে রূপান্তরিত হয়েছিল । গ্র্যান্টটেম্পারলি  ভিয়েনা সম্মেলনের উপস্থিত নেতাদের প্রতিক্রিয়াশীল ভূমিকার সমালােচনা করে বলেছেন যে , এই সম্মেলনে বৃহৎ শক্তিগুলির স্বার্থে ক্ষুদ্র রাজ্যগুলির স্বার্থ জলাঞ্জলি দেওয়া হয় । ঐতিহাসিক ক্র‍্যাটওয়েলের  মতে — প্রজাতান্ত্রিক দেশগুলির ক্ষেত্রে ন্যায্য অধিকার নীতির প্রয়ােগ ঘটানাে হয়নি ।

যুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি :

ভিয়েনা সম্মেলনের সিদ্ধান্তগুলি থেকে পরবর্তী সময়ে আরও বড় ধরনের যুদ্ধ  বাধার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল । তাই ঐতিহাসিক সিম্যান  বলেছেন — ভিয়েনা সম্মেলনে বৃহৎ শক্তিধর রাষ্ট্রগুলির ভূমিকায় সাময়িক যুদ্ধ – উন্মাদনা স্তিমিত হয়ে গেলেও ভবিষ্যতের যুদ্ধের বীজ রােপিত হয়েছিল ।

নীচ স্বার্থপরতা :

ভিয়েনায় উপস্থিত রাষ্ট্রনায়কগণ নিজেদের রাজনৈতিক , সামরিক , ঔপনিবেশিক স্বার্থরক্ষায় সচেষ্ট ছিলেন । পুনর্বণ্টনের অজুহাতে বৃহৎ রাষ্ট্রগুলির প্রতিনিধিবর্গ পররাজ্যগ্রাসের নীতি গ্রহণ করে নীচ স্বার্থপরতার পরিচয় দিয়েছিলেন । নরওয়ে , ফিনল্যান্ড , বেলজিয়াম প্রভৃতি অঞ্চলের অধিবাসীদের ইচ্ছা বা আশা আকাঙক্ষাকে উপেক্ষা করে ওইসব দেশগুলিকে ইউরােপের অন্যান্য রাষ্ট্রের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছিল ।

অগণতান্ত্রিক :

ভিয়েনা সম্মেলনে গণতন্ত্রকে হত্যা করে জনগণের আশা – আকাঙ্ক্ষাকে বিসর্জন দেওয়া হয়েছিল । গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে হটিয়ে দিয়ে পুনরায় রাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা ঘটালে সেইসব দেশগুলিতে গণভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ে । কিন্তু খুব বেশিদিন জনগণের স্বাধীনতার ইচ্ছাকে দমিয়ে রাখা সম্ভব ছিল না যার প্রমাণ পরবর্তীকালে জুলাই বিপ্লবফেব্রুয়ারি বিপ্লব

উপসংহার

ভিয়েনা সম্মেলনের প্রতিনিধিরা পুরাতনতন্ত্র ও বিপ্লবপ্রসূত ভাবধারার মধ্যে সমন্বয়সাধনে ব্যর্থ হন । বৃহৎ শক্তিগুলি নিজেদের স্বার্থরক্ষায় ব্যস্ত থাকায় এই সম্মেলন উদার , গণতান্ত্রিক ও স্থায়ী হয়নি । ঐতিহাসিক ডেভিড টমসনের  মতে — ভিয়েনার ব্যবস্থা ছিল প্রকৃত অর্থে দরদস্তুর ও ব্যাবসায়িক আপসরফার সমষ্টি (‘ a net-work of bargains and negotiated compromises ’) ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x
error: Content is protected !!