জার্মানিতে শিল্প বিপ্লব আলোচনা কর
জার্মানিতে শিল্প বিপ্লব আলোচনা কর
১৮৩০ সালে জার্মানিতে শিল্পোদ্যোগের সূচনা হলেও শিল্পে গতিময়তা এসেছিল ১৮৫০ এর পর যা ১৮৭০ – এ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছিল । রাজনৈতিক অনৈক্যের জন্যই ইংল্যান্ডের শিল্পবিপ্লবের প্রায় একশাে বছর পরে জার্মানিতে শিল্প বিপ্লব শুরু হয় ।

১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ , ফ্রাঙ্কো – জার্মান যুদ্ধে জয়লাভ , ফ্রান্সের কাছ থেকে কয়লাখনি আলসাস ও লৌহখনি লােরেন লাভ , যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ বাবদ পাঁচ কোটি ফ্রাঁ লাভ ইত্যাদি জার্মানিতে শিল্পবিপ্লবের অনুকূল পরিবেশ গড়ে দেয় ।
১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে প্রাশিয়াতে ভূমিদাস প্রথার উচ্ছেদ হলে মুক্ত ভূমিদাসরা শহরে এসে শিল্প শ্রমিকের কাজ নেয় ।
১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দে প্রাশিয়ার নেতৃত্বে জোলভেরাইন নামে একটি শুল্ক সংঘ গড়ে উঠলে তা জার্মানির শিল্পায়নের সহায়ক হয় । শিল্প মূলধন সরবরাহকারী সংস্থা হিসেবে ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় প্রাশিয়ান ব্যাংক ।
জার্মানিতে শিল্প বিপ্লবে বিসমার্কের ভূমিকা
সেডানের যুদ্ধে ( ১৮৭০ খ্রি. ) জার্মানির জয়লাভ তার শিল্পক্ষেত্রে নবযুগের সূচনা করে । এই শিল্পায়নে জার্মান চ্যান্সেলার বিসমার্ক অতি দ্রুত স্থলপথ ও রেলপথের উন্নতি ঘটানাের পাশাপাশি ডাক ও তারবিভাগেরও উন্নতিসাধন করেন ।
- তিনি শিল্পে মূলধন জোগান ও শিল্পগঠনে অংশ নেওয়ার জন্য ইম্পিরিয়াল ব্যাংক গড়ে তােলার পাশাপাশি ব্যাংক ব্যবস্থার পুনর্গঠন করেন ।
- কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে দেশে রেলপথ নির্মাণ শুরু হয় । প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে গােটা জার্মানিতে ৩৭ হাজার কিমি রেলপথ বিস্তৃত করা সম্ভব হয় ।
- একচেটিয়া যৌথ সংগঠন তৈরি করে বিসমার্ক বৃহদায়তন শিল্প প্রতিষ্ঠায় প্রয়াসী হন ।
- শিল্পকে কেন্দ্রীয় সরকারের এক্তিয়ার ভুক্ত করে শিল্পোন্নয়নের ব্যবস্থা করেন ।
- জার্মানির সর্বত্র একই ধরনের মুদ্রা , ওজন এবং শুল্ক ব্যবস্থা চালু করেন ।
- বিদেশি পণ্যের ওপর অধিক শুল্ক আরােপ করে তিনি জার্মানির শিল্প সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেন ।
জার্মানিতে শিল্প বিপ্লবের ফলাফল
জার্মানির শিল্পোন্নয়ন ঐক্য আন্দোলনকে গতিশীল করেছিল । অনেক পরে শিল্পায়ন শুরু হওয়ায় উদ্বৃত্ত পণ্যের বৈদেশিক বাজার পাওয়ার জন্য জার্মানিকে অন্যান্য রাষ্ট্রের সঙ্গে ঔপনিবেশিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জড়িয়ে পড়তে হয়েছিল । ১৮৭১ থেকে ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়কালে জার্মানিতে ভারী শিল্পের পাশাপাশি বস্তুশিল্প , বিদ্যুৎ , রাসায়নিক , রবার , রং , ঔষধ শিল্পের লক্ষণীয় উন্নতি ঘটে ।