দেবপাল এর কৃতিত্ব আলোচনা কর
Contents
দেবপাল এর কৃতিত্ব আলোচনা কর

ধর্মপালের মৃত্যুর পর ( ৮১০ খ্রি. ) বাংলার সিংহাসনে বসেন তাঁর পুত্র দেবপাল । দেবপাল ছিলেন পাল বংশের শ্রেষ্ঠ নৃপতি ।
দেবপালের রাজ্য জয়
দেবপালের ব্রাহ্মণ মন্ত্রী দৰ্ভপানী ও তাঁর পৌত্র কেদার মিশ্র ছিলেন দেবপালের সাম্রাজ্যবিস্তার নীতির সংগঠক । দেবপাল কেবল পিতার রাজ্যকে অক্ষুন্ন রাখেননি , প্রায় সমগ্র আর্যাবর্তে তা প্রসারিত করেন । বিভিন্ন লিপি থেকে জানা যায় , দেবপাল দক্ষিণে বিন্ধ্য পর্বত ও পশ্চিমে কাশ্মীরের সীমান্ত পর্যন্ত এবং পূর্ব ও পশ্চিমে সমুদ্রের মাঝামাঝি অঞ্চলে নিজ প্রভুত্ব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছিলেন । এ ছাড়া আসামের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আসামকে একটি করদ রাজ্যে পরিণত করেন । দেবপাল প্রতিহার ও রাষ্ট্রকূটদের প্রতিহত করে উত্তর ভারতে নিজ আধিপত্য অক্ষুন্ন রেখেছিলেন ।
ত্রিশক্তি সংঘর্ষ
ধর্মপালের আমলে যে ত্রিশক্তি সংঘর্ষের সূচনা হয় তা দেবপালের আমলেও অব্যাহত থাকে । দেবপাল রামভদ্র প্রতিহারকে শোচনীয়ভাবে পরাস্ত করে । পরে প্রতিহার – সিংহাসনে প্রথম ভােজ বা মিহির ভােজ বসলে পুনরায় পাল – প্রতিহার দ্বন্দ্ব আরম্ভ হয় । কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি দেবপালের কাছে পরাজিত হন । দেবপালের মন্ত্রী কেদার মিশ্রের বুদ্ধিবলে গুর্জর প্রতিহার শক্তির পতন ঘটে । দেবপাল কনৌজের ওপর তার অধিকার বজায় রাখতে সমর্থ হন । সেই সঙ্গে তিনি রাষ্ট্রকূটদের কর্তৃত্ব ম্লান করে দিতেও সক্ষম হয়েছিলেন ।
দেবপালের দাক্ষিণাত্য জয়
দেবপাল দ্রাবিড়দেরও পরাস্ত করে দক্ষিণের কিছু অংশে নিজের প্রভুত্ব স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছিলেন ।
দেশের বাইরে খ্যাতি
দেবপাল বৌদ্ধধর্মের অনুরাগী ছিলেন । দেশের বাইরেও তাঁর যথেষ্ট খ্যাতি ছিল । সুমাত্রার রাজা বালপুত্রদেবের অনুরােধে দেবপাল নালন্দায় একটি বিহার নির্মাণের অনুমতি দেন ও পাঁচটি গ্রাম দান করেন । আরব পর্যটক সুলেমান দেবপালের সামরিক বাহিনীর শক্তি ও সামর্থ্যের প্রশংসা করেছেন । ৮৫০ খ্রিস্টাব্দে দেবপাল মারা যান ।