চারটি বৌদ্ধ সংগীতি আলোচনা করো
Contents
চারটি বৌদ্ধ সংগীতি আলোচনা করো

গৌতম বুদ্ধের দেহত্যাগের পর তাঁর ধর্মতত্ত্বের ব্যাখ্যাকে কেন্দ্র করে তাঁর অনুগামীদের মধ্যে মতভেদ দেখা দেয় । এই সংকট থেকে বৌদ্ধধর্মকে রক্ষা করার জন্য চারটি বৌদ্ধ সংগীতি বা সম্মেলন আহ্বান করা হয় ।
প্রথম বৌদ্ধ সংগীতি
মগধরাজ অজাতশত্রুর উদ্যোগে তাঁর রাজধানী রাজগৃহের তাম্রপর্ণি বা সপ্তপর্ণি গুহায় ৪৮৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে প্রথম বৌদ্ধসংগীতি অনুষ্ঠিত হয় । তাতে নেতৃত্ব দেন বৌদ্ধপণ্ডিত মহাকাশ্যপ । আলােচনার পর বুদ্ধের বাণীগুলি তিনটি পিটকে সংরক্ষণ করা হয় । এই তিনটি পিটক হল বিনয় পিটক , সুত্ত পিটক ও অভিধর্ম পিটক । বিনয় পিটকে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের জন্য বিধান ও সংঘ পরিচালনার জন্য নিয়মকানুনসমূহ পাওয়া যায় । বৌদ্ধধর্মের নৈতিক বিষয়গুলি সুত্ত পিটকে পাওয়া যায় । অভিধর্ম পিটকে বৌদ্ধধর্মের দার্শনিক বিষয়গুলি আলােচিত হয়েছে । জাতকের গল্পগুলিকে বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত করা হয় ।
দ্বিতীয় বৌদ্ধ সংগীতি
৩৮৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে কালাশােক বা কাকবর্ণের আমলে রাজধানী বৈশালীতে দ্বিতীয় সংগীতির আয়ােজন করা হয় । এই সম্মেলনে নেতৃত্ব দেন মহাস্থবির যশ । এই সম্মেলনে পূর্ব ভারতীয় ভিক্ষুগণ বা মহাসাংঘিকরা দশটি নতুন আচার গ্রহণ করে । পশ্চিম ভারতীয় ভিক্ষুরা বা থেরবাদীরা এইসব আচারে আপত্তি করেন । এই নিয়ে সংঘে ঘাের মতভেদ দেখা দেয় । শেষ পর্যন্ত থেরবাদীরা এগারােটি ও মহাসাংঘিকরা সাতটি সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে যান । থেরবাদীরা সাধারণভাবে হীনযানপন্থী এবং আচার্যবাদীরা মহাযানপন্থী নামে পরিচিত হন ।
তৃতীয় বৌদ্ধ সংগীতি
অশােকের আমলে পুনরায় মহাসাংঘিক ও থেরবাদীদের মধ্যে মতভেদ চরম আকার ধারণ করলে তিস্যের পরামর্শে ২৫১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে অশােক পাটলিপুত্রে তৃতীয় বৌদ্ধসংগীতির আয়ােজন করেন । এখানে বৌদ্ধ অনুরাগীদের মতভেদ দূর করা হয় । এই সম্মেলনে থেরবাদীরা প্রাধান্য পায় ।
চতুর্থ বৌদ্ধ সংগীতি
কনিষ্কের সময় বৌদ্ধ সম্প্রদায়গুলির মধ্যে মতভেদ দেখা দিলে কনিষ্ক তা দূর করার জন্য রাজধানী পুরুষপুর বা পেশােয়ারে ( মতান্তরে কাশ্মীরে বা জলন্ধরে ) চতুর্থ ও শেষ বৌদ্ধ সংগীতি আহ্বান করেন । এই সময় থেকে হীনযান মতবাদ দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মহাযানবাদ জনপ্রিয়তা পায় । বৌদ্ধ পণ্ডিত বসুমিত্র এই সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন । এই সম্মেলনের গৃহীত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বৌদ্ধশাস্ত্র গুলি সংস্কৃত ভাষায় ‘ বিভাসা ’ গ্রন্থে সংকলন করা হয় । এই সময় থেকে বুদ্ধের মূর্তি পূজার প্রচলন হয় ।
nice post
Thanks