পল্লব শিল্প ও তার বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো
Contents
পল্লব শিল্প ও তার বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো

পল্লব রাজারা ছিলেন শিল্পের পৃষ্ঠপোষক । ঐতিহাসিক রােমিলা থাপার বলেছেন যে , বৌদ্ধ গুহামন্দিরের অনুকরণে পল্লব যুগের পাহাড়কাটা মন্দিরগুলি তৈরি হয় । তবে পল্লব মন্দিরগুলির নিজস্ব কিছু প্রকরণ ও রীতি ছিল । বিভিন্ন সময়ে এই রীতি ও ভঙ্গিমার বিবর্তন ঘটে ।
পল্লব শিল্পের বৈশিষ্ট্য
পল্লব শিল্পরীতির চারটি বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায় ।
মহেন্দ্র রীতি :
রাজা মহেন্দ্রবর্মনের আমলে নির্মিত মন্দিরগুলিকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায় ।
( a ) সাধারণ স্তম্ভ ও মণ্ডপযুক্ত মন্দির ,
( b ) বৌদ্ধ বিহারের অনুকরণে পাহাড় কেটে গুহা মন্দির । যেমন — একাম্বরনাথের মন্দির , অনন্তশায়ন , ভৈরবকোণ্ড মন্দির ইত্যাদি ।
মহামল্ল রীতি :
রাজা নরসিংহবর্মনের আমলে মহাবলিপুরমে মহামল্ল রীতির বিকাশ ঘটে । এই রীতিকে একশিলা বা রথশৈলী রীতি বলা হয় । প্রতিটি রথ একটি বৃহদাকৃতি প্রস্তরখণ্ড কেটে নির্মিত হয়েছে । সহদেব , ভীম ও ধর্মরাজ রথের উপরিভাগ পিরামিডাকৃতি ও চৈত্যের আদলে নির্মিত । অর্জুন – রথে দ্রাবিড় শৈলীর প্রভাব বেশি । দ্রৌপদি – রথ সবচেয়ে ছােটো । এ ছাড়া গণেশের নামেও একটি রথ রয়েছে ।
রাজসিংহ রীতি :
এই রীতির বৈশিষ্ট্য হল বিভিন্ন অংশের সংযুক্তিভিত্তিক মন্দির নির্মাণ । এই রীতি অবলম্বনে কাঞ্চীর কৈলাস মন্দির , বৈকুণ্ঠের পেরুমল মন্দির নির্মিত হয় । এগুলির অবস্থান কাঞ্চি ও মহাবলিপুরমে । মহাবলিপুরমের মন্দিরগুলিকে ‘ তীর মন্দির ’ বলা হয় । রাজসিংহ রীতির মন্দিরের সংখ্যা ছয়টি । তার মধ্যে তিনটি তীর মন্দির ।
অপরাজিত রীতি :
রাজা অপরাজিত মূলত চোল রাজাদের রীতি গ্রহণ করে বিভিন্ন গুহামন্দির নির্মাণ করেন । বেহুর ও পণ্ডিচেরীতে এই শিল্পরীতির বহু নিদর্শন রয়েছে ।
মূল্যায়ন
ঐতিহাসিক সরস্বতীর মতে , পল্লব ভাস্কর্যে বেঙ্গী বা অমরাবতীর ভাস্কর্য শৈলীর প্রভাব বিশেষভাবে লক্ষ করা যায় । পল্লব ভাস্কর্যের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন হল মহাবলিপুরমের ‘ গঙ্গাবতরণের ’ চিত্রটি । অনেকে একে পাথরের প্রাচীর চিত্র বলেছেন ।