তৃতীয় গোবিন্দের কৃতিত্ব
তৃতীয় গোবিন্দের কৃতিত্ব

ধ্রুবের পর সিংহাসনে বসেন তৃতীয় গােবিন্দ ( ৭৯৩-৮১৪ খ্রি. ) । তিনি ছিলেন রাষ্ট্রকূট বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ নরপতি । তিনিও সাম্রাজ্যবাদী নীতি অনুসরণ করে রাষ্ট্রকূট রাজ্যের মর্যাদা ও প্রতিপত্তি বৃদ্ধি করেন ।
তৃতীয় গোবিন্দের উত্তর ভারত অভিযান
প্রথমে কয়েকটি অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ দমন করে তৃতীয় গােবিন্দ উত্তর ভারতে অভিযান চালান । তিনি প্রতিহাররাজ দ্বিতীয় নাগভট্টকে পরাজিত করেন । পাল রাজা ধর্মপাল এবং কনৌজের শাসক চক্ৰায়ুধ স্বেচ্ছায় তাঁর বশ্যতা স্বীকার করে নেন । অবশ্য যুদ্ধে বিজয়ী হলেও তৃতীয় গােবিন্দ কনৌজ অধিকার করেননি । রাষ্ট্রকূট লিপিতে বলা হয়েছে যে , উত্তর ভারতের বহু রাজা তাঁর আনুগত্য স্বীকার করতে বাধ্য হন এবং হিমালয় পর্যন্ত রাজ্য বিস্তার করে ৮০০ খ্রিস্টাব্দে দক্ষিণে ফিরে আসেন ।
তৃতীয় গোবিন্দের দাক্ষিণাত্যে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা
যখন তৃতীয় গােবিন্দ উত্তর ভারতে ব্যস্ত ছিলেন , সেই সময় দক্ষিণ ভারতে তাঁর বিরুদ্ধে একটি রাষ্ট্রজোট গড়ে ওঠে । চোল , পাণ্ড্য , পল্লব , গঙ্গ , কেরল , চালুক্য প্রভৃতি শক্তি তাঁর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয় । তৃতীয় গােবিন্দ দ্রুত দাক্ষিণাত্যে প্রত্যাবর্তন করে এই শক্তিজোটের মুখােমুখি হন । এই দুর্জয় শক্তিসংঘকে তিনি পরাজিত ও বিচ্ছিন্ন করতে সক্ষম হন । তৃতীয় গােবিন্দ তাদের পরাস্ত করে পল্লবদের রাজধানী কাঞ্চি অধিকার করেন । সিংহলের রাজাও তাঁর বশ্যতা স্বীকার করেন । এই সাফল্য তাঁকে দক্ষিণ ভারতে অপ্রতিদ্বন্দ্বী করে তোেল ।
তৃতীয় গােবিন্দ ছিলেন অসাধারণ শক্তিশালী রাজা । তিনি কোনাে শত্রুর হাতে কখনও পরাজয় বরণ করেননি । হিমালয় থেকে কন্যাকুমারিকা পর্যন্ত তিনি বিজয়পতাকা উড্ডীন করতে সমর্থ হয়েছিলেন । এইসব দিক বিচার করেই তাঁকে রাষ্ট্রকূট বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ রাজা হিসেবে গণ্য করা হয় ।