প্রথম রাজেন্দ্র চোলের কৃতিত্ব
Contents
প্রথম রাজেন্দ্র চোলের কৃতিত্ব

কন্যাকুমারী , মহেন্দ্রগিরি এবং সুত্তুর অঞ্চলে প্রাপ্ত লিপিগুলি থেকে প্রথম রাজেন্দ্র চোলের সামরিক কীর্তির কথা জানা যায় ।
প্রথম রাজেন্দ্র পাণ্ড্য ও চের ( কেরল ) রাজ্য দুটিকে পরাজিত করে চোল – সাম্রাজ্যভুক্ত করেন এবং ওই রাজ্য দুটিতে নিজপুত্রকে শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন । সিংহলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলও তিনি নিজের সাম্রাজ্যভুক্ত করেন । চালুক্যদের পরাজিত করে তিনি হায়দ্রাবাদে চোল – কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন ।
উত্তর ভারত জয়
দক্ষিণ ভারত বিজয় সম্পূর্ণ করে প্রথম রাজেন্দ্র উত্তর ভারত বিজয়ে অগ্রসর হন । পূর্ববঙ্গের শাসক গােবিন্দচন্দ্র , পশ্চিমবঙ্গের মহীপাল এবং দক্ষিণবঙ্গের রণসূর প্রথম রাজেন্দ্রর নিকট পরাজিত হন । বঙ্গবিজয়ের পর তিনি ‘ গঙ্গাইকোণ্ড চোল ’ অর্থাৎ গঙ্গা – বিজেতা উপাধি গ্রহণ করেন ।
শৈলেন্দ্রর বিরুদ্ধে যুদ্ধ
প্রথম রাজেন্দ্র শ্রীবিজয় সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে নৌ – অভিযান চালিয়ে শৈলেন্দ্ররাজ বিজয় তুঙ্গবর্মনকে পরাজিত করেন । এর ফলে শৈলেন্দ্র রাজ্যের মধ্য দিয়ে ভারতের পণ্যবাহী জাহাজ চিনদেশে যাতায়াত করতে পারে । ১০৪৪ খ্রিস্টাব্দে চালুক্যদের সঙ্গে যুদ্ধ চলাকালীন অবস্থায় প্রথম রাজেন্দ্র মৃত্যুমুখে পতিত হন ।
চিনের সঙ্গে মিত্রতা
রাজেন্দ্র চোল চিন – সম্রাটের সঙ্গে মিত্রতা স্থাপন করেন এবং একাধিকবার চিন সম্রাটের নিকট দূত প্রেরণ করেন ।
সংস্কৃতির পৃষ্ঠপােষকতা
‘ গঙ্গাইকোণ্ড চোলপুরম ’ নামক নতুন রাজধানীর প্রতিষ্ঠা এবং সূক্ষ্ম কারুকার্যময় প্রাসাদ ও মন্দির প্রতিষ্ঠা রাজেন্দ্র চোলের শিল্পমনস্কতার পরিচয় বহন করে । অজন্তা ও ইলােরার গুহামন্দিরগুলি নির্মাণেও তিনি বিশেষ উৎসাহ দেখান । তিনি চিন সম্রাটের কাছে দূত প্রেরণ করেন এবং ভারত ও চিনের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তােলেন ।
মূল্যায়ন
রাজেন্দ্র চোলের কার্যাবলির মূল্যায়ন করতে গিয়ে বলা যায় , আন্দামান এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ও মালয় উপদ্বীপ জয় নিঃসন্দেহে তাঁর বিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় দেয় । এ ছাড়া সেচব্যবস্থার উন্নতি ঘটিয়ে তিনি আর্থিক সমৃদ্ধি নিয়ে আসেন । এই আর্থিক সমৃদ্ধি আবার চোল সংস্কৃতির বিকাশে সাহায্য করে । তাই প্রথম রাজেন্দ্র চোলের রাজত্বকালকে ‘ চোলযুগের স্বর্ণযুগ ’ বলে অভিহিত করা হয় ।