মেগাস্থিনিসের ইন্ডিকা
মেগাস্থিনিসের ইন্ডিকা

মেগাস্থিনিস গ্রিক সেনাপতি সেলুকাসের দূত হয়ে সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের রাজত্বকালে ভারতে আসেন । তিনি চন্দ্রগুপ্তের রাজসভায় খ্রিস্টপূর্ব ৩০৫ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ অব্দ পর্যন্ত ছিলেন । ভারত সম্পর্কে তাঁর রচিত গ্রন্থের নাম ইন্ডিকা । ‘ ইন্ডিকা ’ থেকে তৎকালীন ভারতের বহু তথ্য , বিশেষ করে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের রাজত্বকাল সম্পর্কে জানা যায় । মূল বইটি পাওয়া না গেলেও পরবর্তীকালের গ্রিক লেখকদের লেখায় ‘ইন্ডিকা’র বহু উদ্ধৃতি রয়েছে ।
ইন্ডিকার বিবরণ
‘ ইন্ডিকা ‘ গ্রন্থটিতে মগধকে ভারতের সবচেয়ে বড়াে রাজ্য হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে । এ ছাড়া পাটলিপুত্র নগরী ও রাজপ্রাসাদ , রাজার ক্ষমতা ও দায়িত্ব , পৌর শাসনব্যবস্থা , রাজকর্মচারীদের কর্তব্য , সামরিক কার্যকলাপ সম্পর্কে বিশদ আলােচনা রয়েছে ।
( 1 ) মেগাস্থিনিস ভারতবাসীর নৈতিক চরিত্রের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন । তিনি বলেছেন , দেশে তখন চুরি – ডাকাতি বা মামলা প্রায় ছিলই না । মানুষ ছিল সরল ও সত্যবাদী । শ্রমিক , কৃষক সবাই ছিল মিতব্যয়ী ও সংযত ।
( ii ) কৃষিকাজই ছিল মানুষের প্রধান জীবিকা । জমি উর্বর হওয়ায় তখন দুবার ফসল ফলানাে হত । খাদ্যাভাব বা দুর্ভিক্ষ প্রায় ছিলই না ।
( iii ) সে – যুগে পশুপালন , ব্যাবসাবাণিজ্য ও শিল্পকর্ম দ্বারাও মানুষ অর্থ উপার্জন করত ।
( iv ) মেগাস্থিনিস তৎকালীন সমাজে সাতটি শ্রেণির উল্লেখ করেছেন , যথা — কৃষক , সৈনিক , দার্শনিক , পশুপালক , শিল্পী , বিচারক ও অমাত্য । তিনি বৃত্তি অনুসারে এই শ্রেণিবিভাগ করেছেন ।
( v ) তখন সমাজে ক্রীতদাস প্রথার প্রচলন ছিল না । তবে নারী স্বাধীনতা তখন অনেকটা হ্রাস পেয়েছিল । অবশ্য মৌর্য রাজপ্রাসাদে রাজার দেহরক্ষী হিসেবে মহিলাদের নিয়ােগ করা হত ।
ইন্ডিকার গুরুত্ব
ভারতীয় ভাষা সম্পর্কে অভিজ্ঞতা না থাকায় মেগাস্থিনিস জনশ্রুতির ওপর ভিত্তি করে ‘ইন্ডিকা’র বহু তথ্য লিপিবদ্ধ করেছেন । তাই গ্রন্থটি ত্রুটিমুক্ত নয় । তবে সমকালীন ইতিহাস রচনায় গ্রন্থটির গুরুত্ব অপরিসীম ।
সফরের তাৎপর্য টা দিলে খুব ভালো হত