পদার্থের অবস্থার পরিবর্তন কাকে বলে
পদার্থের অবস্থার পরিবর্তন কাকে বলে
পদার্থ সাধারণত কঠিন , তরল ও গ্যাস — এই তিন তাবস্থায় থাকতে পারে । কোনো পদার্থ কী অবস্থায় থাকবে তা নির্ভর করে ওই পদার্থের অভ্যন্তরীণ গঠন , চাপ , উষ্ণতা প্রভৃতি ভৌত ধর্মের উপর । কঠিন অবস্থায় পদার্থের নির্দিষ্ট আকৃতি ও আয়তন থাকে । তরল অবস্থায় পদার্থের নির্দিষ্ট আয়তন থাকে কিন্তু নির্দিষ্ট আকার থাকে না , যে পাত্রে রাখা হয় তরল সেই পাত্রের আকার ধারণ করে । গ্যাসীয় অবস্থায় পদার্থের নির্দিষ্ট আকার বা আয়তন কোনােটিই থাকে না , যে পাত্রে রাখা হয় পদার্থ সেই পাত্রের আকার নেয় এবং পাত্রের পুরাে আয়তন দখল করে নেয় ।

উষ্ণতা ও চাপের পরিবর্তন ঘটিয়ে কোনাে পদার্থকে সহজেই এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় পরিবর্তিত করা যায় । যেমন — বরফকে উত্তপ্ত করলে প্রথমে জল এবং পরে জলীয় বাষ্পে পরিণত হয় । আবার জলীয় বাষ্পকে ঠান্ডা করলে প্রথমে জল এবং পরে তা বরফে পরিণত হয় । বায়ু সাধারণ অবস্থায় গ্যাসীয় । কিন্তু বায়ুকে খুব কম উষ্ণতায় রেখে প্রচণ্ড চাপ প্রয়ােগ করে তরলে বা কঠিনে পরিণত করা যায় । পদার্থের এই এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় পরিবর্তিত হওয়ার ঘটনাকে পদার্থের অবস্থার পরিবর্তন বলে ।
এই পরিবর্তন হল ভৌত পরিবর্তন । এতে পদার্থের রাসায়নিক ধর্মের কোনাে পরিবর্তন ঘর্টে না , তবে পদার্থের বাহ্যিক গঠনের পরিবর্তন ঘটে । কঠিন পদার্থের অণুগুলি শক্তিশালী আন্তরাণবিক বল দ্বারা কাছাকাছি নির্দিষ্ট সজ্জায় আবদ্ধ থাকে । তরল অবস্থায় অণুগুলি অপেক্ষাকৃত দূরে দূরে থাকে এবং আন্তরাণবিক বল কম শক্তিশালী হয় । ফলে তরলের অণুগুলির কোনাে নির্দিষ্ট সজ্জা থাকে না । তবে তারা একে অপরের কাছ থেকে একেবারে দূরে চলে যেতে পারে না । গ্যাসীয় অবস্থায় অণুগুলি এত দূরে দূরে থাকে যে আন্তরাণবিক বলের প্রভাব এখানে নগণ্য হয় । ফলে অণুগুলি মুক্তভাবে ঘােরাফেরা করতে পারে ।