শিক্ষা বিজ্ঞান

শিখনের ক্ষেত্রে প্রেষণার ভূমিকা

Contents

শিখনের ক্ষেত্রে প্রেষণার ভূমিকা | শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রেষণার ভূমিকা 

প্রেষণা একটি অভ্যন্তরীণ মানসিক শক্তি । শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই মানসিক শক্তি অর্থাৎ প্রেষণা জাগ্রত করতে পারলেই ধারাবাহিকভাবে শিখনের প্রতি তাদের অনুরাগী ও মনোযোগী করে তোলা সম্ভব হবে । তাই শিখনের ক্ষেত্রে প্রেষণার ভূমিকা অপরিসীম । শিখনে প্রেষণার ভূমিকা নিম্নে আলোচনা করা হল – 

শিক্ষার্থীর অভ্যন্তরীণ উদ্যম জাগ্রত 

প্রেষণা শিক্ষার্থীর অভ্যন্তরীণ উদ্যমকে জাগ্রত করে তোলে । এর ফলে শিক্ষার্থী যে কোনো কর্মে উদ্বুদ্ধ হয়ে ওঠে । উপযুক্ত উদ্বোধক প্রয়োগ করে শিখনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিশেষ আচরণ সৃষ্টি করা যায় । 

আগ্রহ সৃষ্টি 

প্রেষণা শিক্ষার্থীর মধ্যে আগ্রহ সঞ্চার করে । শিক্ষার্থীর বিশেষ বিষয়ের প্রতি প্রেষণা তার অনুরাগের দ্বারা নির্ধারিত হয়ে থাকে । আগ্রহ অনুযায়ী বিষয়বস্তু নির্ধারিত হলে শিক্ষার্থীর মধ্যে তৃপ্তি ও সফলতা আসে । 

লক্ষ্যাভিমুখী 

প্রেষণা শিক্ষার্থীকে শিক্ষার নির্দিষ্ট লক্ষ্যাভিমুখী করে তোলে । শিক্ষার্থীর একটি লক্ষ্য পূরণ হলে পরবর্তী লক্ষ্য পূরণের জন্য আরও বেশি উদ্যোগী হয়ে ওঠে ।

মনোযোগী 

প্রেষণা শিক্ষার্থীকে শিখনে মনোযোগী করে তোলে । মনোযোগ শিক্ষার্থীর বিষয় জ্ঞানকে নিখুঁত ও পরিষ্কার করে । 

শিখন কৌশলের ওপর প্রভাব 

প্রেষণা শিক্ষার্থীর শিখন কৌশলকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করে । তাই প্রত্যেক শিক্ষার্থী প্রেষণার বিভিন্নতা অনুযায়ী শিখতে পারে । 

ব্যক্তিত্বের উন্মেষ 

প্রেষণা শিক্ষার্থীর ব্যক্তিত্বের উন্মেষ ঘটায় ; যা শিক্ষার্থীকে ভবিষ্যতে সুনাগরিক হিসাবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করে । 

শিক্ষার্থীর আচরণের গতিপথ নির্ণয় 

প্রেষণা শিক্ষার্থীর আচরণের গতিপথ নির্ণয় করে তাকে কোনো বিশেষ লক্ষ্য অনুযায়ী আচরণ করতে সাহায্য করে । 

যথাযথভাবে কর্ম সম্পাদন 

প্রেষণা শিক্ষার্থীকে যথাযথভাবে কর্ম সম্পাদন করতে সাহায্য করে । অর্থাৎ শিখন চলাকালীন শিক্ষার্থীর যেসকল কাজ থাকে তা তাদের সঠিকভাবে করতে প্রেষণা সাহায্য করে । 

নতুন বিষয়ের প্রতি কৌতূহল সৃষ্টি 

শিক্ষার্থীর মধ্যে নতুন বিষয়কে জানার কৌতূহল সৃষ্টি করে প্রেষণা । এর ফলে শিক্ষার্থীর মধ্যে নতুন বিষয় জ্ঞান বৃদ্ধি ঘটে । 

দক্ষতা সম্বন্ধে আত্মবিশ্বাস 

প্রেষণা দক্ষতা সম্বন্ধে শিক্ষার্থীকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে । আত্মবিশ্বাস কর্মে আরও বেশি উদ্যম সৃষ্টি করে । 

অভ্যাস গঠন 

প্রেষণা শিক্ষার্থীর মধ্যে সুঅভ্যাস গঠন করে । অর্থাৎ শিক্ষার্থীর মধ্যে পঠনের অভ্যাস তৈরি করে যা তার বিষয় জ্ঞান বৃদ্ধিতে সাহায্য করে । 

সৃজনধর্মী ক্ষমতার বিকাশ 

প্রেষণা একটি অভ্যন্তরীণ মানসিক প্রক্রিয়া , যা শিক্ষার্থীর সৃজনধর্মী ক্ষমতার বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে । 

জীবনাদর্শ গঠন 

প্রেষণা শিক্ষার্থীর মধ্যে জীবনাদর্শ গঠনে সাহায্য করে । অর্থাৎ প্রেষণা শিখনকে জীবনের সঙ্গে যুক্ত করে তার ভবিষ্যৎ জীবনাদর্শ গঠন করে । 

যে কোনো শিক্ষা ব্যবস্থার সাফল্য নির্ভর করে প্রেষণার ওপর । প্রেষণা হল এমন একটি অভ্যন্তরীণ মানসিক প্রক্রিয়া যা শিক্ষার্থীকে তার শিখনমূলক কাজগুলি যথাযথভাবে করতে সাহায্য করে । শুধু তাই নয় তার সঠিক বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । তাই শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রেষণা সৃষ্টি করতে শিক্ষকের যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তেমনি পিতা-মাতারও ভূমিকা কম নয় ।

error: Content is protected !!