বধিরতা কাকে বলে
Contents
বধিরতা কাকে বলে
বধিরতা হল এক বিশেষ প্রকার শ্রবণেন্দ্রিয় জনিত প্রতিবন্ধকতা । এই প্রতিবন্ধকতার জন্য ব্যক্তি কানে শুনতে পায় না ।
জন্মগত বধিরতার কারণ
[ 1 ] কানের বিভিন্ন অংশের ত্রুটি জন্মগত বধিরতার অন্যতম কারণ । জন্মকালে বহু শিশুর অন্তঃকর্ণের ককলিয়া , শ্রবণ স্নায়ু অথবা মস্তিষ্কের শ্রবণ অঞ্চলে ত্রুটি থাকে । ফলে তারা জন্ম থেকেই বধির হয় ।
[ 2 ] সন্তান সম্ভবা মায়ের যদি হাম ( measles ) , মাম্পস ( mumps ) কিংবা ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রভৃতি রোগ হয় এবং তিনি যদি অতিমাত্রায় স্ট্রেপ্টোমাইসিন্ , নিয়োমাইসিন , ক্যানামাইসিন , স্যালিসাইলেটস্ , কুইনাইন জাতীয় ওষুধ সেবন করেন , তাহলে ভ্রূণের শ্রবণেন্দ্রিয় ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং শিশু জন্মের পর বধিরতা প্রাপ্ত হয় ।
[ 3 ] এ ছাড়া শিশুর জন্ম যদি উপযুক্ত সময়ের অনেক আগে হয় অর্থাৎ শিশু যদি অপরিণত অবস্থায় জন্মায় , তাহলেও সে অনেক সময় বধির হয় ।
[ 4 ] ডাক্তারেরা যদি শিশুর মাথায় forceps এর দ্বারা চাপ প্রয়োগ করে শিশুর প্রসব ঘটান তাহলে অনেক সময় গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কে বা শ্রবণেন্দ্রিয়তে গুরুতর আঘাত লাগে , ফলে শিশু বধির হয় ।
অর্জিত বধিরতার কারণ
[ 1 ] খুব জোরে বোমার শব্দ হলে , কিংবা কানের ওপর বেশি জোরে চপেটাঘাত করলে , অথবা পড়ে গিয়ে কানের গোড়ায় আঘাত পেলে , কানের পর্দা ফেটে গেলে অর্জিত বধিরতার সৃষ্টি হয় ।
[ 2 ] কানের মধ্যে কোনো জিনিস ঢুকে গেলে , ওই জিনিস কান থেকে বের করার সময় যদি কোনোভাবে কানের পর্দা ফেটে যায় , তাহলেও বধিরতা দেখা যায় ।
[ 3 ] এ ছাড়া উড়োজাহাজের প্রবল শব্দও কানের পর্দার ক্ষতি করে । ফলে শ্রবণেন্দ্রিয় বিকল হয় এবং ব্যক্তি ধীরে ধীরে বধির হয়ে যায় ।
অন্যান্য বধিরতার কারণ
[ 1 ] বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেহের বিভিন্ন অংশের সঙ্গে শ্রবণেন্দ্রিয়ও দুর্বল হতে থাকে , কিংবা অত্যধিক শব্দযুক্ত কারখানায় কাজ করতে করতে ব্যক্তির শ্রবণেন্দ্রিয় খুব দুর্বল হয়ে পড়লে , ব্যক্তি বধির হয় ।
[ 2 ] হঠাৎ কোনো কারণে মনে প্রবল আঘাত পেলেও অনেক সময় মানুষের বাক শক্তি হারিয়ে যায় এবং সে বধির হয়ে যায় । মানসিক কারণে যারা বধির হয় তাদের ক্ষেত্রে দৈহিক কোনো ত্রুটি পাওয়া যায় না ।
[ 3 ] অনেক ক্ষেত্রে ব্যক্তি নানান সমস্যায় জর্জরিত হয়ে এমনভাবে দুর্ভাবনার মধ্যে ডুবে থাকে যে , বাইরের কোনো শব্দ তার কানে ঢোকে না , সে শুনতে পায় না । অর্থাৎ সে বধির হয় ।
[ 4 ] মনঃসমীক্ষকদের মতে বহু ব্যক্তি অপরের কথা শুনতে চায় না বলে নিজে থেকেই ধীরে ধীরে বধির হয়ে যায় । প্রথমে অবজ্ঞা করে না শোনার ভান করে । পরে এমন একটা সময় আসে , যখন সত্যি সত্যিই সে শুনতে পায় না অর্থাৎ বধিরতা প্রাপ্ত হয় ।