শিক্ষা বিজ্ঞান

জাতীয় শিক্ষানীতি 1986 বৈশিষ্ট্য

Contents

জাতীয় শিক্ষানীতি 1986 বৈশিষ্ট্য

ভারতীয় শিক্ষা কমিশনের ( ১৯৬৪-৬৬ ) সুপারিশের ভিত্তিতে ভারত সরকার ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দের জাতীয় শিক্ষানীতি ঘোষণা করে । ওই শিক্ষানীতিতে ঘোষিত প্রধান বিষয়গুলি হল : 

অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা 

সংবিধানের নির্দেশানুসারে ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সি ছেলেমেয়েদের জন্য অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে । 

শিক্ষকদের মর্যাদা , বেতন ও শিক্ষক-শিক্ষণ 

শিক্ষককে সমাজে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দিতে হবে । যোগ্যতা ও দায়িত্ব অনুযায়ী তাঁদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধা দিতে হবে । শিক্ষক-শিক্ষণের সুব্যবস্থা করতে হবে । 

ভাষা সমূহের উন্নতি 

ত্রিভাষা সূত্র কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে । হিন্দি , সংস্কৃত ও অন্তত একটি আন্তর্জাতিক ভাষা ( প্রধানত ইংরেজি ) শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে । 

শিক্ষায় সমসুযোগ 

শিক্ষায় সমসুযোগের ব্যবস্থা করতে হবে । 

মেধার অন্বেষণ 

যত শীঘ্র সম্ভব মেধাবী ছাত্রদের খুঁজে বের করে তাদের মেধার বিকাশ ঘটাতে হবে ।

কর্ম অভিজ্ঞতা ও জাতীয় পরিসেবা 

সমাজসেবা ও জাতীয় কর্মসূচির মাধ্যমে বিদ্যালয় ও সমাজের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে ।

বিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণা 

বিজ্ঞান ও গণিত বিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার অঙ্গ বলে বিবেচিত হবে । 

কৃষি শিক্ষা ও শিল্প শিক্ষা 

প্রতিটি রাজ্যে অন্তত একটি করে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে । শিল্প ও কারিগরি শিক্ষায় ব্যাবহারিক শিক্ষণ অপরিহার্য হবে । কৃষি , শিল্প ও কারিগরি বিষয়ে কত মানব শক্তি প্রয়োজন তা সমীক্ষা করতে হবে । 

পাঠ্য পুস্তক প্রকাশন 

উপযুক্ত পারিশ্রমিকের বিনিময়ে যোগ্য লেখকদের দিয়ে উৎকৃষ্ট পুস্তক প্রণয়ন করতে হবে ।

পরীক্ষা 

পরীক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন । পরীক্ষার নির্ভরযোগ্যতা ও যথার্থতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে , ধারাবাহিক মূল্যায়ন চালু করতে হবে । 

মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা 

যেসব অঞ্চলের ও শ্রেণির মানুষের কাছে শিক্ষার আলো পৌঁছোয়নি , সেখানে মাধ্যমিক শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারিত করতে হবে । এই স্তরে কারিগরি ও বৃত্তি শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে । 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা 

নতুন বিশ্ববিদ্যালয় , বিশেষ বিবেচনা করে স্থাপন করতে হবে । বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাগার , গ্রন্থাগার ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধার কথা ভেবে ছাত্র ভরতির সংখ্যা স্থির করতে হবে । বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার সুযোগ বাড়াতে হবে । 

আংশিক সময়ের শিক্ষা 

বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে আংশিক সময়ের ও ডাকযোগে শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটাতে হবে । 

স্বাক্ষরতার প্রসার ও বয়স্ক শিক্ষা 

জাতীয় উন্নয়নের জন্যে নিরক্ষরতা দূরীকরণ একান্ত প্রয়োজন । সরকারি ও বেসরকারি স্তরে নিরক্ষরতা দূরীকরণ ও বয়স্ক শিক্ষার সম্প্রসারণে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে ।

খেলাধুলো 

শারীরিক সক্ষমতা ও খেলোয়াড় সুলভ মনোভাব গড়ে তোলার জন্য শিক্ষার্থীদের খেলাধুলোর ব্যবস্থা সম্প্রসারিত করতে হবে । 

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিক্ষা 

১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে দেশের সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের যৌথ সম্মেলনে গৃহীত সুপারিশ অনুযায়ী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিক্ষার ব্যবস্থাকে রূপ দিতে হবে । 

শিক্ষা কাঠামো 

দেশের সর্বত্র শিক্ষার একই কাঠামো থাকা দরকার । আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হবে ১০ + ২ + ৩ কাঠামো প্রবর্তন করা । 

১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দের জাতীয় শিক্ষানীতির ভিত্তিতে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে নতুন শিক্ষা কাঠামো প্রবর্তিত হয় । আমাদের রাজ্যে ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে এই কাঠামো অনুযায়ী শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয় ।

error: Content is protected !!