১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দের জাতীয় শিক্ষানীতির মূল বিষয়
Contents
১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দের জাতীয় শিক্ষানীতির মূল বিষয়
১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধি নতুন একটি জাতীয় শিক্ষানীতি প্রবর্তনের প্রতিশ্রুতি দেন এবং সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে ২১ শে এপ্রিল একটি জাতীয় শিক্ষানীতি প্রকাশিত হয় । এটিতে ১২ টি অধ্যায় আছে । প্রথম ও শেষ অধ্যায় বাদে বাকি দশটি অধ্যায়ে ভারতের শিক্ষার গতিপ্রকৃতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে । নীচে এই শিক্ষানীতির প্রধান বিষয়গুলি উল্লেখিত হল :
শিক্ষার উপাদান ও ভূমিকা
শিক্ষা হবে সকলের জন্য । শিক্ষা হবে সর্বাঙ্গীণ উন্নয়নের সূত্র ।
জাতীয় ব্যবস্থায় শিক্ষা
একটি নির্দিষ্ট স্তর পর্যন্ত শিক্ষা ক্ষেত্রে জাতি-ধর্ম-বর্ণ , স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে সব শিক্ষার্থীর সমান সুযোগ থাকবে ।
সাম্যের জন্য শিক্ষা
দেশের অনুন্নত সম্প্রদায় , যেমন তপশিলি জাতি ও উপজাতি , সংখ্যালঘু , মহিলা এবং প্রতিবন্ধীদের শিক্ষার প্রসারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে ।
বিভিন্ন স্তরে শিক্ষার পুনর্গঠন
( i ) প্রাক প্রাথমিক শিক্ষাকে সঠিক ও সুষ্ঠু উপায়ে রূপায়িত করা হবে ।
( ii ) প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার প্রসার ঘটানো , সমস্ত ছেলেমেয়েকে বিদ্যালয়ে ভরতি করা ও ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত তাদের শিক্ষালয়ে রাখা , শিক্ষার গুণগত মানের প্রকৃত উন্নয়ন ঘটাতে হবে ।
( iii ) মেধাবী এবং প্রতিভাবান শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত সুযোগ সুবিধা দিতে সারা দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে ‘ মডেল স্কুল ’ বা নবোদয় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
( iv ) বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার প্রসারের এবং কারিগরি শিক্ষায় এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে শিক্ষার্থীদের অবাধ সঞ্চরণের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে ।
( v ) স্বয়ংশাসিত কলেজের সংখ্যা বৃদ্ধি জন্য সচেষ্ট হতে হবে । শিক্ষায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং উচ্চশিক্ষার সুযোগ সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসার ঘটাতে হবে ।
( vi ) নির্বাচিত ক্ষেত্রে চাকরির সঙ্গে ডিগ্রির বিচ্ছেদ ঘটানোর সূচনা করা হবে ।
সর্বস্তরের দক্ষতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি
সর্বস্তরের দক্ষতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য গতানুগতিকতার অবসান ঘটিয়ে আধুনিকতার ওপর জোর দেওয়া হবে ।
শিক্ষা ব্যবস্থার সক্রিয়করণ
বিশৃঙ্খলার মধ্যে নতুন বা পুরোনো শিক্ষামূলক কোনো কাজই সম্পাদিত হতে পারে না , তাই যখন আমরা শিক্ষার গুণগত ও ধারাগত পর্যায়ে পরিবর্তনের আশা করছি , তখন প্রচলিত ব্যবস্থার মধ্যে যত শীঘ্র সম্ভব শৃঙ্খলা বিধানের প্রক্রিয়া চালু করতে হবে ।
শিক্ষার বিষয়বস্তু ও শিক্ষা প্রক্রিয়ার পুনর্বিন্যাস
[ i ] শিক্ষার বিষয়সূচি ও পদ্ধতির সঙ্গে সাংস্কৃতিক বিষয় সমূহ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে ।
[ ii ] মূল্যবোধের শিক্ষাকে শক্তিশালী করতে হবে ।
[ iii ] ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দের ত্রিভাষা সূত্র অনুসরণ করতে হবে ।
[ iv ] পুস্তকের গুণগত মানের উন্নতি , শিক্ষা প্রযুক্তির ব্যবহার , অঙ্ক ও বিজ্ঞান শিক্ষা , দৈহিক শিক্ষা ও খেলাধুলো ইত্যাদির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে ।
[ v ] বহিঃপরীক্ষার প্রাধান্য হ্রাস করে অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে । গ্রেড প্রথা চালু করা উচিত ।
শিক্ষক
শিক্ষকের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি করার দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন । শিক্ষকের বেতন ও চাকরির শর্তাবলি তাদের সামাজিক ও পেশাগত দায়িত্বের সঙ্গে সংগতি রেখেই নির্ধারণ করা প্রয়োজন । শিক্ষক শিক্ষণ ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে । শিক্ষক শিক্ষণ হবে একটি নিরবচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া । প্রতিটি জেলায় DIET প্রতিষ্ঠা করতে হবে ।
শিক্ষা পরিচালনা
জাতীয় স্তরে শিক্ষা পরিচালনায় CABE গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে । সর্বভারতীয় সার্ভিস হিসেবে ইন্ডিয়ান এডুকেশন সার্ভিস প্রতিষ্ঠিত হবে । CABE র মতো রাজ্যস্তরে SABE গঠিত হবে । উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাস্তর পর্যন্ত শিক্ষা পরিচালনার জন্য জেলা স্কুল বোর্ড গঠিত হবে ।
আর্থিক সংস্থান
ধীরে ধীরে শিক্ষার জন্য অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি করে অষ্টম পঞ্চম বার্ষিকী পরিকল্পনায় এই বরাদ্দ যাতে ছয় শতাংশ ছাড়িয়ে যায় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে ।
জাতীয় শিক্ষা নীতি ( ১৯৮৬ ) ভারতের শিক্ষার ইতিহাসে একটি বলিষ্ঠ পদক্ষেপ — এ বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই । কেননা এই শিক্ষা নীতিতে শিক্ষার সর্বাঙ্গীণ বিকাশের জন্য নানান প্রয়োজনীয় সুপারিশ করা হয় । তবে এ কথাও ঠিক যে , এই শিক্ষা নীতিতে ঘোষিত প্রস্তাবগুলি সম্পূর্ণভাবে সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয় ।
- Different Types of Mutual Funds – Mutual Fund Types Based on Asset Class, Structure, Risk & Benefits
- How to invest in mutual funds
- what are mutual funds simple definition
- একটি কারখানায় একটি মেশিনের মূল্য ১,৮০,০০০ টাকা। মেশিনটির মুল্য প্রতি বছর ১০% হ্রাস পায়। ৩ বছর পর ওই মেশিনের মুল্য কত হবে?
- অ্যানথ্রাসাইট কয়লা