প্রাথমিক শিক্ষা সম্পর্কে কোঠারি কমিশন

প্রাথমিক শিক্ষা সম্পর্কে কোঠারি কমিশন

ভারতীয় শিক্ষা কমিশনে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পর্কে বলা হয়েছে যে , এই শিক্ষার উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীকে দায়িত্বশীল সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রস্তুত করা । শিক্ষার্থীর মধ্যে স্বাস্থ্যাভ্যাস এবং সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলা , শিক্ষার্থীদের প্রাক্ষোভিক বিকাশের ক্ষেত্রে উপযুক্ত সাহায্য করা , তাদের নান্দনিক , বৌদ্ধিক এবং সৃজনশীল কাজে উৎসাহ দেওয়া ইত্যাদি এই স্তরের শিক্ষার উদ্দেশ্য । এ ছাড়াও শিশুর মধ্যে সঠিকভাবে পড়া ও লেখার অভ্যাস গড়ে তোলা প্রাথমিক শিক্ষাস্তরের অন্যতম উদ্দেশ্য । এই উদ্দেশ্যগুলি হলো 一

[ 1 ] ১৯৭৫-৭৬ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে সব শিশুকে পাঁচ বছর ব্যাপী উৎকৃষ্ট কার্যকর শিক্ষা দিতে হবে । 

[ 2 ] ১৯৮৫-৮৬ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এই ধরনের শিক্ষাকে সাত বছর ব্যাপী করার চেষ্টা করতে হবে । 

[ 3 ] শিক্ষার ক্ষেত্রে অপচয় ও অনুত্তীর্ণতা যাতে হ্রাস পায় তার ব্যবস্থা করতে হবে । যারা প্রথম শ্রেণিতে ভরতি হয়েছে তাদের মধ্যে আশি ভাগ যাতে তেরো বছর বয়সে সপ্তম শ্রেণিতে পৌঁছোয় সে দিকে নজর দিতে হবে । 

[ 4 ] সপ্তম শ্রেণি উত্তীর্ণ যেসব শিক্ষার্থী পড়াশোনায় অনাগ্রহ দেখাবে , তাদের জন্য বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে । 

[ 5 ] আগামী কুড়ি বছরের মধ্যে অর্থাৎ ১৯৮৬ এর মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষায় অপচয় এবং অনুন্নয়ন পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে ।  

[ 6 ] প্রাথমিক স্তরে অপচয় এবং অনুন্নয়ন বন্ধ করার জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিকে একটি ইউনিট হিসেবে গণ্য করতে হবে এবং ‘ খেলার মাধ্যমে শিক্ষণ ‘ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে । 

[ 7 ] নিম্নপ্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির অবস্থান হবে শিক্ষার্থীর বাসগৃহ থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে এবং উচ্চপ্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির অবস্থান হবে শিক্ষার্থীর বাসগৃহ থেকে তিন কিলোমিটারের মধ্যে । 

[ ৪ ] নিম্নপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করে , আর্থিক দুরবস্থা বা অন্যান্য কারণে যেসব শিক্ষার্থী পড়া ছেড়ে দেবে তাদের জন্য আংশিক সময়ের শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে । 

[ 9 ] শিশুকে বিদ্যালয়ে ধরে রাখার জন্য শিক্ষার গুণগত মানের উন্নতি ঘটাতে হবে ।

প্রাথমিক শিক্ষার কাঠামো সম্পর্কে কমিশনের সুপারিশ

কমিশনের মতে প্রাথমিক শিক্ষাস্তরের মধ্যে দুটি ভাগ থাকবে । একটি হবে নিম্নপ্রাথমিক এবং অপরটি হবে উচ্চপ্রাথমিক । নিম্নপ্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে শিশুর ভরতির বয়স হবে ৬+ বছর । তারা ১০/১১ বছর বয়স পর্যন্ত এই স্তরে পড়াশোনা করবে । এখানে প্রথম শ্রেণি থেকে চতুর্থ বা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হবে । অন্যদিকে উচ্চপ্রাথমিক স্তরে ভরতির বয়স হবে ১১/১২ বছর । এখানে ছেলেমেয়েরা প্রায় ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত পড়বে । এখানে পঞ্চম বা ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত থাকবে । 

মোট কথা , নিম্নপ্রাথমিক স্তরের শিক্ষাকাল হবে ৪/৫ বছর এবং উচ্চপ্রাথমিক স্তরের শিক্ষাকাল হবে ৩/৪ বছর । এই হিসেবে প্রাথমিক স্তরের মোট শিক্ষাকাল হবে ৭/৮ বছরের । নীচে প্রাথমিক শিক্ষার কাঠামোটি দেখানো হল : 

PRATHOMIK

error: Content is protected !!