শিক্ষা বিজ্ঞান

পরীক্ষা ব্যবস্থা সংস্কারে কোঠারি কমিশনের সুপারিশ

পরীক্ষা ব্যবস্থা সংস্কারে কোঠারি কমিশনের সুপারিশ

[ 1 ] নিম্ন প্রাথমিক স্তরের মূল্যায়নের উদ্দেশ্য হবে শিশুদের মধ্যে সাধারণ দক্ষতা , সঠিক অভ্যাস এবং আগ্রহ গড়ে উঠেছে কি না তা পরিমাপ করা । প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণিকে একটি ইউনিট হিসেবে ধরা যেতে পারে । যেখানে এটি করা সম্ভব নয় সেখানে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিকে একটি ইউনিট হিসেবে গণ্য করে ছাত্রদের দুটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে — ধীরগতি সম্পন্ন ছাত্র ও দ্রুতগতি সম্পন্ন ছাত্র । নিম্নপ্রাথমিক স্তরের জন্য অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের ব্যবস্থা থাকবে । 

[ 2 ] উচ্চপ্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের লিখিত পরীক্ষার সঙ্গে থাকবে মৌখিক পরীক্ষা । এই পরীক্ষাগুলি হবে অভ্যন্তরীণ । শিক্ষক নিজেই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি করবেন । 

[ 3 ] প্রাথমিক স্তরের শেষে শিক্ষার্থীরা জাতীয় মানে পৌঁছেছে কি না তা জানার জন্য পরীক্ষার প্রয়োজন । তবে আবশ্যিকভাবে বহিঃপরীক্ষা গ্রহণের প্রয়োজন আছে বলে কমিশন মনে করে না । তবে শিক্ষার মান বজায় রাখার জন্য বিদ্যালয় পরিদর্শকগণ মাঝে মাঝে রাজ্য মূল্যায়ন সংস্থার তৈরি প্রশ্নপত্রের দ্বারা সমীক্ষা করতে পারেন । 

[ 4 ] প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির মধ্যে তুলনা করার জন্য প্রাথমিক স্তরের শেষে বিভিন্ন জেলায় আদর্শায়িত পারদর্শিতা অভীক্ষা ( Standardised Achievement Test ) র মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে । তবে এই পরীক্ষা বাধ্যতামূলক হবে না । 

[ 5 ] কমিশন বহিঃপরীক্ষার মানকে উন্নত করার জন্য কয়েকটি ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে । যেমন — প্রশ্ন প্রস্তুতকারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি , নম্বর দেওয়ার পদ্ধতিকে বিজ্ঞান ভিত্তিক করা ইত্যাদি । 

[ 6 ] কয়েকটি নির্বাচিত বিদ্যালয়কে তাদের নিজেদের ছাত্রদের মূল্যায়নের দায়িত্ব এবং দশম শ্রেণির পর চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়ার অধিকার দেওয়া উচিত । এর মান হবে স্টেট বোর্ড অব্ স্কুল এডুকেশনের সমান । 

[ 7 ] প্রতিটি শিক্ষাস্তরে অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সর্বাঙ্গীণ বিকাশের পরিমাপের ব্যবস্থা থাকা উচিত । বিদ্যালয় যেসব লিখিত পরীক্ষা নেবে সেগুলির মানোন্নয়নের প্রয়োজন । অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার ফলাফলকে বহিঃপরীক্ষার সঙ্গে পৃথকভাবে লিপিবদ্ধ করা প্রয়োজন । 

[ 8 ] উচ্চতর মাধ্যমিক পরীক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কমিশনের সুপারিশ হল দশম শ্রেণির পাঠ শেষ হওয়ার পর প্রথম বহিঃপরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে এবং দ্বাদশ শ্রেণির শেষে দ্বিতীয় বহিঃপরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে । 

[ 9 ] উচ্চশিক্ষার মূল্যায়নের ক্ষেত্রে বহিঃপরীক্ষার পরিবর্তে অভ্যন্তরীণ ও নিরবচ্ছিন্ন মূল্যায়নের ব্যবস্থা করতে হবে । 

[ 10 ] সর্বস্তরের শিক্ষকদের আধুনিক ও উন্নত মূল্যায়ন ব্যবস্থা সম্বন্ধে ধারণা দেওয়ার জন্য সেমিনার , আলোচনা , ওয়ার্কশপের ব্যবস্থা করতে হবে । 

[ 11 ] পরীক্ষার খাতা দেখার জন্য কোনো অর্থ দেওয়া উচিত নয় । 

[ 12 ] নম্বরের পরিবর্তে গ্রেড প্রথা চালু করা উচিত ।

error: Content is protected !!