ব্লক উন্নয়ন আধিকারিকের ক্ষমতা ও কার্যাবলী
Contents
ব্লক উন্নয়ন আধিকারিকের ক্ষমতা ও কার্যাবলী
জেলা প্রশাসনের সর্বনিম্ন স্তরের একক হল ব্লক । প্রত্যেকটি ব্লক কম বেশি ১০০ টি গ্রাম নিয়ে গড়ে ওঠে । প্রত্যেক ব্লকের উন্নয়ন প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্ব একজন ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক বা বি ডি ও-র ওপর ন্যস্ত হয়েছে । রাজ্য রাষ্ট্রকৃত্যকের সদস্যদের মধ্যে থেকে ব্লক উন্নয়ন আধিকারিকদের নিয়োগ করা হয় । বি.ডি.ও. হলেন ব্লক স্তরের প্রশাসনিক প্রধান ।
ব্লকের প্রশাসনিক দায়িত্ব
ভারতীয় প্রশাসনে জেলাকে যেমন কয়েকটি মহকুমায় ভাগ করা হয়েছে , অনুরূপভাবে মহকুমাকেও কয়েকটি ব্লকে বিভক্ত করা হয়েছে । ব্লক এলাকার প্রশাসনিক দায়িত্বে রয়েছেন ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক । ব্লক উন্নয়ন আধিকারিকের প্রশাসনিক ক্ষমতা ও কার্যাবলীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল—
1. ব্লকের প্রশাসন পরিচালনা , জনসংযোগ রক্ষা এবং যাবতীয় উন্নয়ন প্রকল্পগুলির সামগ্রিক তত্ত্বাবধান ;
2. ব্লকের মধ্যে বিভিন্ন আধিকারিকদের ( যেমন , মৎস উন্নয়ন আধিকারিক , যুব উন্নয়ন আধিকারিক , পঞ্চায়েত ও গ্রাম উন্নয়ন আধিকারিক , ব্লক ত্রাণ আধিকারিক প্রমুখ ) কাজকর্মের যথাযথ সমন্বয় সাধন ;
3. ব্লকের প্রযুক্তি বিভাগসহ অন্য সব বিভাগের কর্মীদের কাজকর্মের তদারকি ,
4. তপশিলি জাতি ও উপজাতির কল্যাণ , সেচ , পরিবহণ ইত্যাদি উন্নয়ন প্রকল্পগুলির রূপায়ণ ;
5. ব্লকের মধ্যে পঞ্চায়েত , পুরসভা , বিধানসভা ও লোকসভার যাবতীয় নির্বাচনমূলক কাজকর্ম পরিচালনা ;
6. ব্লকের সম্প্রসারণ আধিকারিকদের এবং অন্য কর্মীদের কাজকর্মের বার্ষিক মূল্যায়নের রিপোর্ট সরকারের কাছে পাঠানো ইত্যাদি ।
পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাহী আধিকারিক রূপে দায়িত্ব
বর্তমানে পঞ্চায়েতিরাজ ব্যবস্থা চালু হওয়ার ফলে পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাহী আধিকারিক হিসেবে ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক কিছু নির্দিষ্ট ভূমিকা পালন করেন । পঞ্চায়েত সমিতির সভা , নথিপত্র সংরক্ষণ , বাজেট প্রস্তুতি , উন্নয়ন কর্মসূচি রচনা ও তার বাস্তবায়ন ইত্যাদি প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্লক উন্নয়ন আধিকারিকের কার্যকরী ভূমিকা রয়েছে ।
ব্লকের উন্নয়নমুখী পরিকল্পনাগুলিতে জনগণের অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করে তুলতে ব্লক উন্নয়ন আধিকারিককে প্রয়োজনানুসারে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হয় । ব্লক এলাকায় জনসংযোগ রক্ষা করা তাঁর একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব । পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে সুষ্ঠু সম্পর্ক বজায় রেখে তাঁকে এই কাজ করতে হয় । পঞ্চায়েত সমিতির কার্যনির্বাহী হিসেবে তাঁকে নিরপেক্ষতার পরিচয় দিতে হয় । দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে এলাকার গ্রামীণ মানুষের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে তাঁকে নিরপেক্ষ ও দুর্নীতি মুক্ত প্রশাসন পরিচালনায় দক্ষতার পরিচয় দিতে হয় ।
উপসংহার
বর্তমানে পঞ্চায়েতিরাজ ব্যবস্থা চালু হওয়ায় গ্রামীণ স্তরে ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়নের কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে । ওইসব জনকল্যাণকামী উন্নয়ন প্রকল্পগুলির সার্থক রূপায়ণের ক্ষেত্রে ব্লক উন্নয়ন আধিকারিকের সক্রিয় ও সদর্থক সহযোগিতা অত্যন্ত আবশ্যক । এক কথায় ব্লক উন্নয়ন আধিকারিকের দপ্তর গ্রামীণ প্রশাসনের অন্যতম অপরিহার্য অঙ্গ । আর ব্লকের অন্তর্গত সমস্ত প্রকার উন্নয়ন কর্মসূচির কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হলেন ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক ।