রাজ্য আইনসভার গঠন ও কার্যাবলী
Contents
রাজ্য আইনসভার গঠন ও কার্যাবলী
রাজ্য আইনসভার গঠন
সংবিধানের ১৬৮ ( ১ ) নং ধারা অনুযায়ী ভারতের প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের একটি করে আইনসভা রয়েছে । রাজ্য আইনসভা এক কক্ষ বিশিষ্ট অথবা দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট হতে পারে । যেসব রাজ্যের আইনসভা দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট তার উচ্চকক্ষের নাম বিধান পরিষদ এবং নিম্নকক্ষের নাম বিধানসভা । ব
র্তমানে ( মে , ২০১১ খ্রি. ) ২৮ টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে কেবল পাঁচটি অঙ্গরাজ্যের আইনসভা দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট । পাঁচটি রাজ্য হল— বিহার , মহারাষ্ট্র , কর্ণাটক , উত্তরপ্রদেশ এবং জম্মু ও কাশ্মীর । রাজ্য আইনসভার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হলেন রাজ্যপাল ।
রাজ্য বিধান পরিষদের গঠন :
সংবিধানের ১৭১ নং ধারায় বিধান পরিষদের গঠন সম্পর্কে বলা হয়েছে , বিধান পরিষদের সদস্য সংখ্যা সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বিধানসভার সদস্য সংখ্যার এক-তৃতীয়াংশের বেশি হবে না । অবশ্য ১৭১ ( ১ ) নং ধারায় এ কথা সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে , বিধান পরিষদের মোট সদস্য সংখ্যা কোনো অবস্থাতেই ৪০ এর কম হবে না । রাজ্য বিধান পরিষদ একই সঙ্গে নির্বাচিত ও মনোনীত — উভয় ধরনের সদস্যদের নিয়ে গঠিত । সাধারণত পরিষদের ছয় ভাগের মধ্যে পাঁচ ভাগ সদস্য পরোক্ষ ভাবে নির্বাচিত হন এবং অবশিষ্ট একভাগ সদস্য রাজ্যপাল কর্তৃক মনোনীত হন ।
রাজ্য বিধানসভার গঠন :
সার্বিক প্রাপ্ত বয়স্কের ভোটাধিকারের ভিত্তিতে বিধানসভার সদস্যরা জনসাধারণের দ্বারা নির্বাচিত হন ( ১৭০ নং ধারা ) । সংবিধান অনুযায়ী সর্বাধিক ৫০০ এবং সর্বনিম্ন ৬০ জন সদস্য নিয়ে বিধানসভা গঠিত হয় । তবে পরবর্তীকালে বিভিন্ন সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভার সর্বনিম্ন সদস্য সংখ্যা নির্ধারিত হয়েছে । যেমন— সিকিম ৩০ জন , মিজোরাম , অরুণাচল ও গোয়া ৪০ জন , নাগাল্যান্ড ৪৬ জন ।
বিধানসভার মোট আসনসংখ্যার মধ্যে তপশিলি জাতি ও তপশিলি উপজাতিদের জন্য কিছু নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন সংরক্ষিত । এ ছাড়া রাজ্যপাল ইঙ্গ-ভারতীয় সম্প্রদায় থেকে একজন সদস্য মনোনয়ন করতে পারেন ।
রাজ্য আইনসভার ক্ষমতা ও কার্যাবলী
রাজ্য আইনসভার যেসব ক্ষমতা রয়েছে সেগুলির মধ্যে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হল —
আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত ক্ষমতা :
রাজ্য আইনসভার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল আইন প্রণয়ন । সংবিধান অনুযায়ী রাজ্য আইনসভার সমগ্র রাজ্য বা রাজ্যের যে কোনো অংশের জন্য আইন প্রণয়ন করার ক্ষমতা রয়েছে । রাজ্য তালিকা ভুক্ত সমস্ত বিষয়ে এককভাবে আইন প্রণয়নের অধিকারী হল বিধানসভা । যুগ্ম তালিকা ভুক্ত বিষয়েও বিধানসভা আইন প্রণয়ন করতে পারে ।
তবে এক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী পার্লামেন্টের প্রণীত আইন প্রাধান্য পেয়ে থাকে । কোনো বিল রাজ্যপালের সম্মতি ছাড়া আইনের মর্যাদা লাভ করতে পারে না । অবশ্য রাজ্যপাল কোনো বিলকে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রে পাঠিয়ে দিতে পারেন , সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির সম্মতি প্রয়োজন ।
শাসন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা :
রাজ্য মন্ত্রীসভার স্থায়িত্ব বিধানসভার ওপর নির্ভরশীল । মন্ত্রীসভা যতদিন পর্যন্ত বিধানসভার আস্থাশীল থাকে ততদিন পর্যন্ত ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকতে পারে । সংসদীয় গণতন্ত্রে শাসন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা সর্বতোভাবে বিধানসভা ভোগ করে থাকে । প্রশ্ন জিজ্ঞাসা , মুলতুবি প্রস্তাব উত্থাপন , ছাঁটাই প্রস্তাব উত্থাপন , অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন প্রভৃতির সাহায্যে বিধানসভা রাজ্যের মন্ত্রীসভাকে নিয়ন্ত্রণ করে ।
রাজ্য মন্ত্রীসভা যৌথভাবে বিধানসভার কাছে দায়িত্বশীল থাকায় মন্ত্রীসভার সমস্ত কাজের জন্য বিধানসভার কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য । বিধানসভায় কোনো মন্ত্রীর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হলে সমগ্র মন্ত্রীসভার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হয় । সেক্ষেত্রে মন্ত্রীসভাকে পদত্যাগ করতে হয় ।
অর্থ সংক্রান্ত ক্ষমতা :
অর্থ সংক্রান্ত ক্ষমতার ক্ষেত্রে বিধান পরিষদের ক্ষমতা যথেষ্ট সীমাবদ্ধ । রাজ্য বিধানসভাকে আর্থিক বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে । সংসদীয় রীতি অনুসারে অর্থ সংক্রান্ত যাবতীয় ক্ষমতা জনপ্রিয় কক্ষ হিসেবে একমাত্র বিধানসভার হাতে রয়েছে । বিধানসভার বিনা অনুমতিতে রাজ্য সরকার এক পয়সাও ব্যয় করতে পারে না ।
তা ছাড়া , নতুন কর প্রবর্তন , প্রচলিত কর হারের পরিবর্তন প্রভৃতির ক্ষমতা বিধানসভার হাতেই রয়েছে । আবার কোনো বিল বিধানসভায় গৃহীত হওয়ার পর রাজ্যপালের অনুমোদন লাভের জন্য পাঠানো হলে তাতে তিনি অসম্মতি জ্ঞাপন করতে পারেন না ।
সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা :
সংবিধান সংশোধনের মূল ক্ষমতা পার্লামেন্টের হাতে থাকলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে রাজ্য বিধানসভার বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে । যুক্তরাষ্ট্রীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সংবিধান সংশোধন করতে গেলে অন্তত অর্ধেক আইনসভার অনুমোদন প্রয়োজন হয় [ ৩৬৮ ( ২ ) নং ধারা ] । এই বিষয়গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল কেন্দ্র রাজ্যের ক্ষমতা বণ্টন , রাষ্ট্রপতির নির্বাচন , সুপ্রিমকোর্ট ও হাইকোর্ট সম্পর্কিত বিষয় প্রভৃতি ।
অন্যান্য ক্ষমতা :
উপরি উক্ত কার্যাবলি ছাড়াও রাজ্য আইনসভার আরও কিছু কাজ রয়েছে ।
1. রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য বিশেষ নির্বাচক সংস্থার সভ্য হিসেবে বিধানসভার সদস্যরা অংশ গ্রহণ করে থাকেন ।
2. রাজ্য আইনসভা রাজ্য জনকৃত্যক কমিশন , রাজ্যের মহাহিসাব পরীক্ষক প্রমুখ কর্তৃক প্রদত্ত রিপোর্ট বিচার বিবেচনা করে ।
3. কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে রাজ্য আইনসভার বিশেষ করে বিধানসভার সম্মতি প্রয়োজন ।
4. কোনো রাজ্যের সীমানা পুনর্গঠন জনিত বিল পার্লামেন্টে উত্থাপিত হওয়ার আগে রাষ্ট্রপতি বিধানসভার সদস্যদের মতামত জেনে নেন ।
5. গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে প্রস্তাব গ্রহণ করার ক্ষমতা রাজ্য আইনসভার রয়েছে ।
- Different Types of Mutual Funds – Mutual Fund Types Based on Asset Class, Structure, Risk & Benefits
- How to invest in mutual funds
- what are mutual funds simple definition
- একটি কারখানায় একটি মেশিনের মূল্য ১,৮০,০০০ টাকা। মেশিনটির মুল্য প্রতি বছর ১০% হ্রাস পায়। ৩ বছর পর ওই মেশিনের মুল্য কত হবে?
- অ্যানথ্রাসাইট কয়লা