রাষ্ট্র বিজ্ঞান

সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শদান এলাকা কাকে বলে

সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শদান এলাকা কাকে বলে

ভারতের কেন্দ্রীভূত ও অখণ্ড বিচার ব্যবস্থার শীর্ষে রয়েছে সুপ্রিমকোর্ট । সুপ্রিম কোর্টকে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত বা যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালত বলা হয় । সংবিধানের ১২৪-১৪৭নং ধারায় সুপ্রিম কোর্টের গঠন ক্ষমতা ও কার্যাবলী  বিস্তারিত ভাবে আলোচিত হয়েছে । সংবিধান অনুসারে সুপ্রিম কোর্টের কার্যক্ষেত্রকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে । এদের মধ্যে একটি হল পরামর্শদান এলাকা । পরামর্শদান এলাকার অধীনে গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রশ্নে সুপ্রিমকোর্ট ভারতের রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ দিয়ে থাকে । 

পরামর্শদান এলাকার অর্থ 

ভারতীয় সংবিধানের ১৪৩ ( ১ ) নং ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি যদি মনে করেন আইন বা তথ্য সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো সর্বজনীন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন দেখা দিয়েছে বা দেখা দিতে পারে , তাহলে তিনি সে বিষয়ে সুপ্রিমকোর্টের কাছে পরামর্শ চাইতে পারেন । এক্ষেত্রে সুপ্রিমকোর্ট পরামর্শ দিতে বাধ্য নয় । সুপ্রিমকোর্ট পরামর্শ দিতে পারে আবার নাও দিতে পারে । তবে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শুনানির পর সুপ্রিমকোর্ট তার মতামত জানাতে পারে । 

তা ছাড়া সংবিধান চালু হওয়ার আগে সম্পাদিত সন্ধি , চুক্তি , অঙ্গীকার পত্র , সনদ ইত্যাদির মধ্যে যেগুলি সংবিধান চালু হওয়ার পরও বলবৎ আছে সেগুলির বিষয়ে কোনো বিরোধ দেখা দিলে রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ চেয়ে পাঠাতে পারেন । এক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ দিতে সুপ্রিম কোর্ট বাধ্য থাকে । অবশ্য সুপ্রিমকোর্টের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করতে রাষ্ট্রপতি বাধ্য নন । তবে বহুক্ষেত্রে দেখা গেছে যে , রাষ্ট্রপতি সুপ্রিমকোর্টের পরামর্শ গ্রহণ করেছেন ।

দৃষ্টান্ত 

সুপ্রিম কোর্টের এই পরামর্শদানের বহু দৃষ্টান্ত রয়েছে । এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল কেরালা শিক্ষা বিল ( ১৯৫৭ ) , বেরুবাড়ি সমস্যা ( ১৯৫৯ ) , জম্মু-কাশ্মীর পুনর্বাসন বিল ( ১৯৮২ ) প্রভৃতি সম্পর্কে পরামর্শদান ।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে , ১৯৯৩ সালের ৭ ই জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ-রাম জন্মভূমি বিতর্কের সমাধানের জন্য সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ চেয়ে পাঠান । সুপ্রিম কোর্ট ১৯৯৪ সালের ২৪ শে অক্টোবর একটি মামলার রায়ে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেয় যে এ বিষয়ে আদালত কোনো মতামত দেবে না ।

error: Content is protected !!