রাষ্ট্র বিজ্ঞান

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ও পার্লামেন্টের সম্পর্ক 

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ও পার্লামেন্টের সম্পর্ক 

ভারতের সংবিধান অনুসারে বিচার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে সুপ্রিমকোর্ট সর্বোচ্চ আদালত হিসেবে কাজ করে । সুপ্রিম কোর্টকে যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালতও বলা হয় । সংবিধানের অভিভাবক ও ব্যাখ্যা কর্তা হিসেবে এবং মৌলিক অধিকারের রক্ষাকর্তা হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । 

অন্যদিকে , ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় পার্লামেন্ট , কেন্দ্রীয় আইন বিভাগ হিসেবে কাজ করে । ভারতীয় পার্লামেন্টের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল আইন প্রণয়ন ও শাসন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ । এ ছাড়াও , পার্লামেন্টের হাতে সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে উল্লেখযোগ্য ক্ষমতা রয়েছে । ভারতে সুপ্রিমকোর্ট ও পার্লামেন্টের সম্পর্কের পর্যালোচনা করতে গেলে যে বিষয়গুলি উঠে আসে তা হল— 

1. সুপ্রিমকোর্টের দেওয়া রায়কে অতিক্রম করার উদ্দেশ্যে পার্লামেন্ট বিভিন্ন সময়ে সংবিধান সংশোধনের পথ অবলম্বন করেছে । এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে ২৪ তম সংবিধান সংশোধনের ( ১৯৭১ ) কথা উল্লেখ করা যায় । এই সংশোধনীতে সুপ্রিম কোর্টের গোলোকনাথ মামলার ( ১৯৬৭ ) রায়কে অতিক্রম করা হয় । 

2. মৌলিক অধিকারের রক্ষাকর্তা ও সংবিধানের অভিভাবক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে গিয়ে সুপ্রিমকোর্টকে পার্লামেন্টের বিরোধিতার সম্মুখীন হতে হয়েছে । ২৪ তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে এ কথা ঘোষণা করা হয়েছে , পার্লামেন্টের হাতে মৌলিক অধিকারের অংশসহ সংবিধানের যে কোনো অংশ সংযোজন , পরিবর্তন ও বাতিল করার ক্ষমতা রয়েছে । 

3. ভারতীয় বিচার ব্যবস্থায় সুপ্রিমকোর্ট সংবিধানের অভিভাবক হিসেবে ভূমিকা পালন করতে গিয়ে অনেক সময় পার্লামেন্টের অনুমোদিত সংবিধান সংশোধনের বিতর্কিত ধারা বাতিল করে দিয়েছে । 

এক্ষেত্রে উদাহরণ স্বরূপ , ৪২ তম সংবিধান সংশোধনীর ( ১৯৭৬ ) ৫ এবং ৫৫ নং ধারা বাতিলের কথা উল্লেখ করা যায় । ৪২  তম সংশোধনীর ৫ নং ধারায় বলা হয় যে , নির্দেশমূলক নীতি কার্যকর করার উদ্দেশ্যে পার্লামেন্ট কোনো আইন তৈরি করলে আদালত তার বিচার করতে পারবে না । 

৫৫ নং ধারায় বলা হয় , পার্লামেন্ট সংবিধানের যে কোনো বিষয় সংশোধনের অধিকারী ; এ সম্পর্কে আদালতে কোনো প্রশ্ন তোলা যাবে না । ১৯৮০ সালে মিনার্ভা মিলস অন্যান্য বনাম ভারত সরকার মামলায় সুপ্রিম কোর্ট উক্ত দুটি ধারাকে বাতিল করে দেয় ।

error: Content is protected !!