রাষ্ট্র বিজ্ঞান

লোকসভায় অর্থবিল পাসের পদ্ধতি

লোকসভায় অর্থবিল পাসের পদ্ধতি

পার্লামেন্টে অর্থবিল পাসের পদ্ধতি সম্বন্ধে ভারতীয় সংবিধানের ১০৯ নং ধারায় আলোচনা করা হয়েছে । বিভিন্ন পর্যায় অতিক্রম করে কোনো অর্থবিল আইনে রূপান্তরিত হয় । 

1. অর্থবিল শুধুমাত্র লোকসভাতেই উত্থাপন করা যায় । রাজ্যসভায় কোনো অর্থবিল উত্থাপন করা যায় না । রাষ্ট্রপতির সুপারিশে শুধুমাত্র মন্ত্রীরা এই অর্থবিল উত্থাপন করেন । সাধারণ বিল পাসের জন্য প্রতিটি বিলকে যেভাবে প্রথম ও দ্বিতীয় পাঠ , কমিটি পর্যায় , তৃতীয় পাঠ প্রভৃতির মধ্য দিয়ে যেতে হয় , একইভাবে অর্থবিলের ক্ষেত্রেও তাই ঘটে । 

2. অর্থবিল লোকসভায় গৃহীত হলে তা রাজ্যসভার কাছে সুপারিশের জন্য পাঠানো হয় । অর্থবিলকে প্রত্যাখ্যান বা সংশোধন করার কোনো ক্ষমতা রাজ্যসভার নেই । রাজ্যসভাকে ১৪ দিনের মধ্যে অর্থবিল সুপারিশসহ লোকসভায় পাঠিয়ে দিতে হয় । যদি ওই সময়ের মধ্যে বিলটি ফেরত না আসে তাহলে ধরে নেওয়া হয় যে পার্লামেন্টে বিলটি গৃহীত হয়েছে । অর্থাৎ ১৪ দিনের বেশি রাজ্যসভা অর্থবিল আটকে রাখতে পারে না । 

3. পার্লামেন্টে অর্থবিল গৃহীত হওয়ার পর তা রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য পাঠানো হয় । রাষ্ট্রপতি কোনো অর্থবিলকে পুনর্বিবেচনার জন্য পার্লামেন্টে ফেরত পাঠাতে পারেন না । অর্থবিলে রাষ্ট্রপতির সম্মতি প্রদান একটি নিছক আনুষ্ঠানিক ব্যাপার । ভারতে অর্থবিল অনুমোদনের ব্যাপারে লোকসভার সামগ্রিক প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । কিন্তু লোকসভার এই প্রাধান্য মন্ত্রীপরিষদ পরিচালিত সংসদীয় গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় বহুলাংশে তত্ত্বগত বলে অনেকে মনে করেন । 

বস্তুত অর্থবিল সম্পর্কিত লোকসভার আলোচনা আনুষ্ঠানিক প্রকৃতির । সংখ্যা গরিষ্ঠ দলের সদস্যরা মন্ত্রীদের উত্থাপিত অর্থবিল কার্যত বিনা আলোচনায় পাস করানোর জন্য তৎপর থাকেন । তা ছাড়া অর্থবিল নিয়ে আলোচনার জন্য বরাদ্দ সময় অত্যন্ত অল্প থাকে ।

এর ওপর অর্থবিলের প্রকৃতি এমনিতেই জটিল হওয়ায় তা আলোচনার জন্য যে ধরনের বিশেষীকৃত জ্ঞানের প্রয়োজন হয় , অধিকাংশ সদস্যদের মধ্যে তা দেখা যায় না । প্রকৃতপক্ষে অর্থবিলের বিষয়ে লোকসভার কর্তৃত্ব প্রধানত মন্ত্রীসভা ভোগ করে থাকে ।

error: Content is protected !!