বিপ্লবী বিনায়ক দামোদর সাভারকর
Contents
বিপ্লবী বিনায়ক দামোদর সাভারকর
মহারাষ্ট্রের সংগ্রামী জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে লােকমান্য তিলকের পর যে বীর বিপ্লবীর নাম অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয় তিনি হলেন বিনায়ক দামােদর সাভারকর ।

ভারতে কার্যকলাপ
গুপ্ত সমিতি গঠন :
বীর সাভারকর নামে সম্মানিত এই মহান দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভের উদ্দেশ্যে ম্যাৎসিনির ইয়ং ইতালির অনুকরণে ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে মিত্রমেলা নামে একটি গুপ্ত বিপ্লবী সমিতি গঠন করেন । পরে ১৯০৪ সালে এটির নামকরণ হয় অভিনব ভারত ।
গুপ্ত সমিতির কার্যাবলি :
সাভারকরের নেতৃত্বে অভিনব ভারত বিপ্লবী আন্দোলনের প্রসার ঘটাতে সাহায্য করে ।
- সভা সমিতি গঠন , পুস্তিকা প্রচার , শরীর চর্চার মাধ্যমে এই সংস্থা স্বাধীনতার বাণী প্রচার করত ।
- বােম্বাই ও পুনের কলেজগুলি ছাড়াও নাসিক , আমেদাবাদ , সাতারা প্রভৃতি শহরেও সাভারকরের প্রত্যক্ষ মদতে বিপ্লবীদের গােপন শাখা গড়ে ওঠে ।
- দামােদর সাভারকরের সুদক্ষ নেতৃত্ব ও অভিনব ভারতের অদম্য প্রচেষ্টায় মহারাষ্ট্রসহ সারা ভারতে বিপ্লবী আন্দোলনে জোয়ার আসে ।
জ্যাকসন হত্যা পরিকল্পনা :
১৯০৯ খ্রি. নাসিক জেলার জেলাশাসক জ্যাকসন – কে হত্যা করা হলে শুরু হয় ‘ নাসিক ষড়যন্ত্র মামলা ‘ । এই মামলায় প্রমাণিত হয় জ্যাকসন হত্যাকাণ্ডে বিনায়ক দামােদর সাভারকরের প্রচ্ছন্ন ভূমিকা আছে ।
লন্ডনে কার্যকলাপ
১৯০৬ সালে বিনায়ক লন্ডন চলে যান এবং সেখানে প্রবাসী ভারতীয় বিপ্লবীদের প্রধান কর্মকেন্দ্র ইন্ডিয়া হাউস – এর সঙ্গে যুক্ত হন । পরে ওই সংস্থার পরিচালনভার গ্রহণ করে সেখান থেকে গােপনে বােমা তৈরির নিয়মাবলি এবং প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র ভারতে পাঠান । তিনি নিজে রুশ ভাষা থেকে ইংরেজি ভাষায় বােমা তৈরির কৌশল অনুবাদ করে তা ভারতে মির্জা আব্বাসের কাছে পাঠান ।
শেষজীবন
সন্ত্রাস মূলক কাজে জড়িত সন্দেহে বিনায়ককে লন্ডনে গ্রেফতার করে ( মার্চ , ১৯১০ খ্রি. ) ভারতে পাঠানো হয় । বিচারে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে আন্দামানে নির্বাসিত করা হয় । দেশবাসী তাঁকে বীর সাভারকর আখ্যা দেয় । এইভাবে ২৬ বছর কারাদণ্ড ভােগ করার পর বিনায়ক দামােদর সাভারকর মুক্তি পান । ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে এই মহান বিপ্লবীর জীবনাবসান হয় ।