রাষ্ট্র বিজ্ঞান

ঐতিহাসিক বস্তুবাদ কাকে বলে

ঐতিহাসিক বস্তুবাদ কাকে বলে

মার্কসীয় মতবাদের গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি হল ঐতিহাসিক বস্তুবাদ । সমাজ জীবনের বিকাশের ক্ষেত্রে দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদের মূল সূত্রগুলির প্রয়োগই হল ঐতিহাসিক বস্তুবাদ । 

এঙ্গেলসের মতে , ঐতিহাসিক বস্তুবাদের প্রয়োগের মধ্য দিয়ে মার্কস মানব ইতিহাসের বিবর্তনের বৈজ্ঞানিক সূত্রগুলি আবিষ্কার করেছেন ।

মার্কসীয় মতে , সমাজ বহির্ভূত শক্তির দ্বারা সমাজের বিকাশ বা পরিবর্তন ঘটে না । ঐতিহাসিক বস্তুবাদ অনুসারে সমাজ পরিবর্তনশীল এবং এই পরিবর্তনে প্রধান ভূমিকা সমাজের উৎপাদন ব্যবস্থার । অর্থনীতিই হল সমাজের ভিত ( base ) বা মূল কাঠামো । আর এই মূল কাঠামো বা ভিতের ওপর গড়ে ওঠে সমাজের শিল্প , সাহিত্য , আইন ইত্যাদি । এগুলি হল সমাজের উপরিকাঠামো ( Superstructure ) । এই উপরিকাঠামো অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর নির্ভর করে গড়ে ওঠে । 

মার্কসের মতে , মানব সমাজের বিকাশের ইতিহাস হল , উৎপাদন ব্যবস্থার বিকাশের ইতিহাস । মানব ইতিহাসের পরিবর্তনের প্রধান কারণ হল উৎপাদন শক্তি এবং উৎপাদন সম্পর্কের দ্বন্দ্ব ।

মার্কস দেখিয়েছেন , অতীত কাল থেকে আজ পর্যন্ত উৎপাদন শক্তির পরিবর্তন ও বিকাশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষা করে নতুন নতুন উৎপাদন সম্পর্ক এবং নতুন নতুন সমাজ ব্যবস্থা সৃষ্টি হয়েছে । এভাবেই আদিম সাম্যবাদী সমাজ থেকে ক্রমে দাস সমাজ , সামন্ত সমাজ এবং পুঁজিবাদী সমাজ জন্ম নিয়েছে । 

মার্কস বলেছেন এরপর সমাজ বিকাশের সূত্র অনুযায়ী পুঁজিবাদী সমাজের অবসান ঘটে ও সমাজতান্ত্রিক সমাজের পত্তন হয় । সব শেষে জন্ম নেয় সাম্যবাদী সমাজ । এভাবে মার্কস তাঁর ঐতিহাসিক বস্তুবাদের সাহায্যে সমাজ বিকাশের এক বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন ।

error: Content is protected !!