ধ্রুপদী উদারনীতিবাদ কাকে বলে
Contents
ধ্রুপদী উদারনীতিবাদ কাকে বলে
ধ্রুপদী উদারনীতিবাদ হল একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ের উদারনৈতিক ঐতিহ্য। ধ্রুপদী উদারনীতিবাদকে অনেক সময় ঊনবিংশ শতাব্দীর উদারনীতিবাদও বলা হয়। কারণ সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থা থেকে ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রূপান্তরের পর্যায়ে ধ্রুপদী উদারনৈতিক ধ্যান-ধারণার বিকাশ ঘটে ।
ব্রিটিশ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী জন লক এর Two Treatises of Government শীর্ষক গ্রন্থটি ১৬৯০ সালে প্রকাশিত হওয়ার পর ধ্রুপদী উদারনীতিবাদ এর সূচনা ঘটে । রাষ্ট্রবিজ্ঞানী জন লক , জেরেমি বেন্থাম , জেমস মিল , জন স্টুয়ার্ট মিল , স্পেনসার , মস্তেস্কু প্রমুখ হলেন ধ্রুপদী উদারনীতিবাদের মুখ্য প্রবক্তা ।
ধ্রুপদী উদারনীতিবাদের মূল নীতি
ধ্রুপদী উদারনীতিবাদের মূলনীতিগুলি হল—
অলঙ্ঘনীয় প্রাকৃতিক অধিকার :
জীবনের অধিকার , স্বাধীনতার অধিকার এবং সম্পত্তির অধিকারকে রক্ষার জন্যেই চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়েছে । তাই রাষ্ট্র কোনোভাবেই এই অধিকারগুলিতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না ।
চুক্তি ভিত্তিক সম্পর্ক :
জন লকের মতে রাষ্ট্র ও ব্যক্তির সম্পর্ক পুরোপুরি চুক্তি ভিত্তিক । ব্যক্তির প্রাকৃতিক অধিকারগুলি রক্ষায় রাষ্ট্র যদি চুক্তি অনুযায়ী কাজ না করে তাহলে জনগণ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবে ।
শাসিতের সম্মতি :
জনগণের সম্মতি হল রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি । এই কারণে উদারনৈতিক সরকারকে বলা হয় শাসিতের সম্মতির ওপর প্রতিষ্ঠিত সরকার ।
আইনের অনুশাসন :
শাসক ও শাসিত উভয়েই আইনের অনুশাসনের অধীন । রাষ্ট্র আইনের মাধ্যমে তার কর্তৃত্ব প্রয়োগ করে । আইনের অনুশাসনের ওপর ভিত্তি করে সাংবিধানিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় ।
অনিয়ন্ত্রিত ব্যক্তি স্বাধীনতা :
ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার অধিকার রাষ্ট্রের নেই । রাষ্ট্র ব্যক্তি স্বাধীনতার পথে বাধাগুলি দূর করতে প্রয়াসী হবে । জাতি-ধর্ম-বর্ণ , স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা , সম্পত্তি ও বিবাহের ক্ষেত্রে স্ত্রী-পুরুষের সমান অধিকার ইত্যাদিকে উদারনীতিবাদে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় ।
সর্বাধিক সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যবস্থা :
ঊনবিংশ শতাব্দীর ব্রিটিশ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী জেরেমি বেন্থামের মতে , রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য হল সর্বাধিক ব্যক্তির সর্বাধিক পরিমাণ সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যবস্থা করা । তবে তাঁর অভিমত ছিল ব্যক্তির সর্বাধিক পরিমাণ সুখস্বাচ্ছন্দ্যের মাপকাঠির বিচার ব্যক্তি নিজেই করবে , রাষ্ট্র নয় ।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অবাধ নীতি :
ধ্রুপদী উদারনীতিবাদের অন্যতম প্রবক্তা অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অবাধ নীতি বা ‘ Laissez faire Policy’ কে স্বীকৃতি দেন । তাঁর মতে , অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণহীন অবাধ প্রতিযোগিতা থাকলে সমাজের সর্বাধিক কল্যাণ সাধিত হবে ।
রাষ্ট্রের সীমিত ও ইতিবাচক কর্ম পরিধি :
অ্যাডাম স্মিথের মতে বৈদেশিক আক্রমণ প্রতিহত করা , অভ্যন্তরীণ শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখা , ন্যায়বিচার সুনিশ্চিত করা এবং জনকল্যাণ মূলক কাজকর্ম সম্পাদন করা ইত্যাদির মধ্যেই রাষ্ট্রের কার্যকলাপ সীমিত থাকা উচিত ।
জন স্টুয়ার্ট মিলের মতে রাষ্ট্রীয় কাজকর্ম হবে গঠনমূলক বা ইতিবাচক । এর মধ্যে রয়েছে সমাজের সমষ্টিগত মঙ্গলের জন্য আবশ্যিক শিক্ষা ব্যবস্থার প্রবর্তন , সম্পত্তির উত্তরাধিকারের ওপর নিয়ন্ত্রণ , একচেটিয়া কারবারের ওপর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ , শিশুদের স্বার্থে কারখানা আইন নিয়ন্ত্রণ প্রভৃতি ।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শান্তি ও সহযোগিতা :
জাতিগত সাম্য , আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার , আঞ্চলিক ও প্রশাসনিক স্বাতন্ত্র্য এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শান্তি ও সহযোগিতাকে ধ্রুপদী উদারনীতিবাদে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে স্থান দেওয়া হয়েছে ।
- Different Types of Mutual Funds – Mutual Fund Types Based on Asset Class, Structure, Risk & Benefits
- How to invest in mutual funds
- what are mutual funds simple definition
- একটি কারখানায় একটি মেশিনের মূল্য ১,৮০,০০০ টাকা। মেশিনটির মুল্য প্রতি বছর ১০% হ্রাস পায়। ৩ বছর পর ওই মেশিনের মুল্য কত হবে?
- অ্যানথ্রাসাইট কয়লা