অছি পরিষদের গঠন ক্ষমতা ও কার্যাবলী
Contents
অছি পরিষদের গঠন ক্ষমতা ও কার্যাবলী
অছি পরিষদের গঠন
অছি ব্যবস্থা :
১৯৪৫ সালে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ যখন গঠিত হয় তখনও বিশ্বের বহু এলাকার অধিবাসীরা স্বাধীনতা অর্জন করতে সক্ষম হননি । জাতিপুঞ্জের সনদে বলা হয় যে , সংশ্লিষ্ট এলাকার অধিবাসীদের আত্মনির্ভর এবং স্বাধীনতা লাভের উপযোগী করে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে তাদের কয়েকটি বৃহৎ শক্তির শাসনাধীনে রাখা হবে ।
এ কথাও সুস্পষ্টভাবে বলা হয় যে , স্বাধীনতা লাভের যোগ্য হয়ে উঠলে এইসব এলাকাকে স্বাধীন রাষ্ট্রের মর্যাদা দিয়ে স্বাধীনতা অর্পণ করা হবে । জাতিপুঞ্জের অধীনে এই ব্যবস্থার নাম হল অছি ব্যবস্থা । অছি ব্যবস্থার উদ্দেশ্যগুলি বাস্তবায়নের জন্য অছি পরিষদ গঠন করা হয় ।
অছি এলাকা :
অছি ব্যবস্থার অধীনে কয়েকটি এলাকাকে অছি এলাকা রূপে ঘোষণা করা হয় । সেগুলি হল —
1. সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সনদ গৃহীত হওয়ার আগে যেসব এলাকা ‘ ম্যান্ডেট ‘ বা ‘ কর্তৃত্বাধীন ব্যবস্থা’র অধীনে ছিল ।
2. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে যেসব এলাকা শত্রু রাষ্ট্র বা অক্ষশক্তির থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল ।
3. স্বেচ্ছায় কোনো রাষ্ট্র যেসব এলাকাকে অছি ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করতে চাইবে সেইসব এলাকা ।
অছি এলাকাগুলিকে সাধারণত দু-ভাগে ভাগ করা হয় । প্রথমটি হল সামরিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা , দ্বিতীয়টি হল সামরিক দিক থেকে গুরুত্বহীন এলাকা ।
অছি পরিষদ :
সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সনদের ৮৬ নং ধারায় অছি পরিষদের গঠন সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে । নিম্নোক্ত সদস্যদের নিয়ে অছি পরিষদ গঠিত হবে বলে ঘোষিত হয়েছে —
1. অছি এলাকা সমূহের শাসনের দায়িত্বে নিযুক্ত রাষ্ট্রগুলি ;
2 . নিরাপত্তা পরিষদের সেইসব স্থায়ী সদস্যরাষ্ট্র যারা অছি এলাকাগুলির শাসন কর্তা নয় ,
3. সাধারণ সভা কর্তৃক তিন বছরের মেয়াদে নির্বাচিত সদস্য ।
অছি পরিষদের ক্ষমতা ও কার্যাবলী
1. অছি এলাকাগুলির প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের দেওয়া বার্ষিক রিপোর্ট বিচার বিবেচনা ।
2. অছি এলাকার অধিবাসীদের দাবি সংবলিত আবেদনপত্র পরীক্ষা করা ।
3. অছি এলাকাগুলির শাসনব্যবস্থা কতটা জনকল্যাণকারী তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখা ।
4. অছি চুক্তির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ যে কোনো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা অবলম্বন করা ।
5. অছি এলাকার অধিবাসীদের রাজনৈতিক , অর্থনৈতিক , সামাজিক ও শিক্ষা বিষয়ক উন্নতির মান নির্ণয়ের জন্য প্রশ্নমালা তৈরি করা এবং সেই প্রশ্নমালা অছি এলাকাগুলির প্রশাসকদের কাছে পেশ করা ।
অছি পরিষদের নিরবচ্ছিন্ন প্রয়াসের ফলে টোগোল্যান্ড , ক্যামেরুনস , সোমালিল্যান্ড , টাঙ্গানিকা , রুয়ান্ডা , বুরুন্ডি , নামিবিয়া , পালাউয়ের মতো অছি এলাকাগুলি একে একে স্বাধীনতার স্বাদ পায় । বর্তমানে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অছি পরিষদের কোনো এলাকার অস্তিত্ব নেই ।