ভারতের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলির উত্থান
Contents
ভারতের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলির উত্থান
আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের উদ্ভবের কারণ
আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের উদ্ভব সাম্প্রতিককালের ভারতীয় রাজনৈতিক দল ব্যবস্থার এক লক্ষণীয় দিক । ভারতের নির্বাচন কমিশন প্রদত্ত বিজ্ঞপ্তি অনুসারে কোনো দল রাজ্যের লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনে মোট বৈধ ভোটের অন্তত ৬ শতাংশ পেলেই সেই দলকে আঞ্চলিক দল হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া যেতে পারে । ভারতের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় আঞ্চলিক দলগুলির উদ্ভবের নেপথ্যে নিম্নলিখিত কারণগুলি সক্রিয় রয়েছে ।
জাতপাত ও সাম্প্রদায়িক প্রভাব
ভারতে জাতপাতকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু আঞ্চলিক দল গড়ে উঠেছে । এই ধরনের আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল মুসলিম লিগ , গোর্খা লিগ , শিরোমণি অকালি দল , শিবসেনা , রামরাজ্য পরিষদ প্রভৃতি ।
ভাষাগত দাবিদাওয়া
স্বাধীনতার পরবর্তীকালে , বিশেষত হিন্দিকে সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরে , দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে ভাষাভিত্তিক যে আন্দোলন মাথাচাড়া দেয় তা থেকে বিভিন্ন ভাষাগত আঞ্চলিক দল গড়ে ওঠে । এ ধরনের দলগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল তামিলনাড়ুর ডি.এম.কে. , এ. আই. এ.ডি.এম. কে. , অন্ধ্রের তেলেঙ্গানা প্রজা সমিতি এবং পশ্চিমবঙ্গের গোর্খা লিগ প্রভৃতি ।
আঞ্চলিক সমস্যা ও বঞ্চনা
ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের অসম উন্নতির জন্য কোনো কোনো অঞ্চলের অধিবাসীরা নিজেদের বঞ্চিত মনে করে । তাদের সেই ক্ষোভকে কেন্দ্র করে তাদের দাবিদাওয়ার নিরিখে বিভিন্ন আঞ্চলিক দল গড়ে উঠেছে ।
এ ধরনের আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল তামিলনাড়ুর ডি.এম.কে ., এ. আই. এ.ডি.এম.কে ; জম্মু ও কাশ্মীরের ন্যাশনাল কনফারেন্স ; কর্ণাটকের ক্রান্তিরঙ্গ ; হরিয়ানার হরিয়ানা বিকাশ পার্টি , ঝাড়খণ্ডের ঝাড়গণ্ড মুক্তি মোর্চা ; পশ্চিমবাংলার জি এন এল এফ . গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা প্রভৃতি ।
অন্তর্কলহ ও ভাঙন
ভারতের অধিকাংশ জাতীয় দলের মধ্যে গণতান্ত্রিক মানসিকতার অভাব দেখা যায় , ফলে অন্তর্দলীয় সংঘাত অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায় । অনেক সময় কোনো জাতীয় দলের নেতা বা নেত্রীর দল থেকে বহিষ্কারের ঘটনার পরে নতুন একটি আঞ্চলিক দলের উদ্ভব ঘটে । ভারতের দল ব্যবস্থায় এই প্রবণতা বহু আগে থেকেই সক্রিয় রয়েছে ।
উদাহরণ হিসেবে তামিলনাড়ুর জি. কে. মুপানরের নেতৃত্বে তামিল মানিলা কংগ্রেস , পশ্চিমবাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস , বিহারে লালুপ্রসাদ যাদবের নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয় জনতা দলের উদ্ভবের কথা বলা যায় ।
সংখ্যালঘু স্বার্থরক্ষা
সংখ্যালঘু স্বার্থরক্ষাকে মৌল নীতি হিসেবে তুলে ধরে সংখ্যালঘুদের প্রভাবিত ও ঐক্যবদ্ধ করে নতুন আঞ্চলিক দলের উদ্ভব ঘটতে দেখা গেছে ।
উদাহরণ স্বরূপ নাগাল্যান্ডে নাগা ন্যাশনাল পার্টি , মণিপুরে মণিপুর পিপলস পার্টি , মণিপুরের কুকী জাতীয় পরিষদ , ত্রিপুরার উপজাতি যুব সমিতির কথা বলা যায় ।