রাষ্ট্র বিজ্ঞান

ভারতীয় নাগরিকদের জীবন ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকার 

ভারতীয় নাগরিকদের জীবন ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকার 

ভারতীয় সংবিধানের ২১ নং ধারায় বলা হয়েছে আইন নির্দিষ্ট পদ্ধতি ছাড়া কোনো ব্যক্তিকে তার জীবন ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না । কিন্তু ‘ আইন নির্দিষ্ট পদ্ধতি ‘ এবং ‘ ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ‘ ধারণা ও প্রকৃতি নিয়ে যথেষ্ট মতবিরোধ রয়েছে । আজ পর্যন্ত এ সম্বন্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছোনো যায়নি । ‘ ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ’ অর্থ সংকীর্ণ ও ব্যাপক দু রকমই হতে পারে । ভারতীয় সংবিধানে এটি সংকীর্ণ অর্থে স্বীকার করা হয়েছে বলে সংবিধান বিশেষজ্ঞরা মনে করেন । 

১৯৭৮ সালে সুপ্রিমকোর্ট মানেকা গান্ধি বনাম ভারত ইউনিয়ন মামলার রায়ে ঘোষণা করে যে , ব্যক্তির জীবন ও স্বাধীনতা লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে ‘ আইন নির্দিষ্ট পদ্ধতি ’ অনুসরণ করা হয়েছে কি না তা দেখার ক্ষমতা আদালতের রয়েছে । তা ছাড়া সংশ্লিষ্ট আইনটি যুক্তিসংগত বা ন্যায়সংগত কি না তা বিচার করার ক্ষমতাও আদালতের আছে । তবে ‘ আইন নির্দিষ্ট পদ্ধতি ‘ কথাটির অর্থ নিয়ে জটিলতা থেকে গেছে । 

ভারতীয় সংবিধানের রচয়িতারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে বর্ণিত ‘ আইনের যথাবিহিত পদ্ধতি’র পরিবর্তে জাপানি সংবিধানের আইন নির্দিষ্ট পদ্ধতি ‘ কথাটিকে সংবিধানে লিপিবদ্ধ করেন । ‘ আইন নির্দিষ্ট পদ্ধতি ‘ অনুযায়ী আদালত কোনো আইন ন্যায়নীতি বিরোধী কি না তা বিচার করতে পারে না , শুধুমাত্র যে আইন অনুযায়ী ব্যক্তি স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করা হবে । সেই আইনটি বিধিসম্মতভাবে আইনসভা কর্তৃক প্রণীত কি না তা বিচারের ক্ষমতা আদালতের থাকবে । 

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে , বর্তমানে সংবিধানের ২১ নং ধারায় উল্লিখিত জীবন ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকার ১৯৭৮ সালের ৪৪ তম সংবিধান সংশোধনীর পর একটি বিশেষ মর্যাদা লাভ করেছে । এই সংশোধনী অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি কোনো অবস্থাতেই ২১ নং ধারায় উল্লিখিত জীবন ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকার স্থগিত রাখতে পারবেন না ।

সম্প্রতি ২০০২ সালে ৮৬ তম সংবিধান সংশোধনী আইনের ফলে ২১ ( ক ) নামে নতুন একটি ধারা সংযোজিত করে । শিক্ষার অধিকারকে মৌলিক অধিকারের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে । এই ধারায় ঘোষণা করা হয়েছে যে , রাষ্ট্র ৬-১৪ বছর বয়সি বালক বালিকাদের জন্য অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষার ব্যবস্থা করবে । 

error: Content is protected !!