রাষ্ট্র বিজ্ঞান

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের বর্ণিত মানবাধিকার

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের বর্ণিত মানবাধিকার

মানবাধিকার হল এমন এক অধিকার যা জন্মসূত্রে সব নাগরিকের সমান অধিকার ও সমমর্যাদার নীতি ঘোষণা করে । প্রতিটি মানুষের আত্মমর্যাদা সংবলিত জীবন ধারণের অধিকার , স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার এবং সমতা ও সমমর্যাদার অধিকারকে মানবাধিকার বলা হয় । 

জাতিপুঞ্জে অঙ্গীকার 

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সম্পাদিত বিভিন্ন শান্তি চুক্তির মধ্যে মানবাধিকার সংরক্ষণের অভিপ্রায় ব্যক্ত করা হয় । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি অত্যাচার ও নিপীড়নের মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা যুদ্ধোত্তর পর্বে বিশ্বের শান্তিকামী মানুষকে মানবিক অধিকার সংরক্ষণে এক আন্তর্জাতিক আন্দোলনে সামিল হতে অনুপ্রাণিত করে । ১৯৪৫ সালে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ প্রতিষ্ঠিত হলে সনদের ১ ( iii ) নং ধারায় জাতি-ধর্ম-ভাষা স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের সমান মানবিক অধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার অঙ্গীকার গ্রহণ করা হয় । 

জাতিপুঞ্জে ঘোষণা 

১৯৪৮ সালে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের উদ্যোগে ‘ মানবাধিকার সংক্রান্ত বিশ্বজনীন ঘোষণা ‘ গৃহীত হয় । এই ঘোষণাপত্রে যেসব অধিকারকে মানবাধিকারের অন্তর্ভুক্ত করা হয় তার প্রথম অংশে রয়েছে — জীবনের অধিকার , স্বাধীনতা ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তার অধিকার , দাসত্ব ও অত্যাচার থেকে মুক্তি , আইনের চোখে সমানাধিকার , চিন্তা-বিবেক-ধর্ম-মতামত বক্তব্য প্রকাশের মৌলিক অধিকার , ন্যায়বিচারের অধিকার প্রভৃতি । 

অন্যদিকে দ্বিতীয় অংশে রয়েছে— কাজের অধিকার , সমান কাজের জন্য সমান মজুরির অধিকার , জীবনযাত্রার উপযুক্ত মানের অধিকার , শিক্ষার অধিকার প্রভৃতি । এ ছাড়া মানবাধিকার সংক্রান্ত জাতিপুঞ্জের কিছু আন্তর্জাতিক দলিল রয়েছে । এইসব দলিলে লিপিবদ্ধ অধিকারের মধ্যে রয়েছে বাঁচার অধিকার , সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের মৌল অধিকার , যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ ও শরণার্থীদের মানবিক অধিকার , শিশুদের অধিকার , আদিবাসীদের মৌলিক অধিকার প্রভৃতি । 

error: Content is protected !!