অধিকার কাকে বলে
Contents
অধিকার কাকে বলে
অধ্যাপক হ্যারল্ড ল্যাস্কির মতে , অধিকার হল সমাজ জীবনের সেইসব সুযোগসুবিধা যেগুলি ছাড়া কোনো ব্যক্তি সাধারণভাবে তার ব্যক্তিত্বের প্রকৃষ্টতম বিকাশ ঘটাতে পারে না । বার্কারের মতে , সবচেয়ে অধিক সংখ্যক লোকের সর্বাধিক বিকাশ সাধনের জন্য যেসব সুযোগসুবিধা বা শর্ত আইন কর্তৃক স্বীকৃত ও সংরক্ষিত হয় তাকে নাগরিক অধিকার বলা হয় । বার্কারের বিশ্লেষণ অনুযায়ী দুটি শর্ত পূরণ করলে কোনো সুযোগসুবিধাকে অধিকার বলে অভিহিত করা যেতে পারে –
1. সুযোগ সুবিধাগুলি প্রত্যেকের ব্যক্তিত্ব বিকাশের সহায়ক হবে এবং
2. সুযোগ সুবিধাগুলি রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত ও সংরক্ষিত হবে ।
অধিকারের প্রকৃতি
অধিকারের প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে বলা যায় –
1. শুধুমাত্র সমাজবদ্ধ জীব হিসেবে ব্যক্তি অধিকার ভোগ করতে পারে । মানব সমাজের বাইরে অধিকারের কোনো অস্তিত্ব নেই ।
2. অধিকারের একটি আইনগত দিক আছে । রাষ্ট্র আইনের মাধ্যমে অধিকারকে স্বীকৃতি দেয় ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে ।
3.সমাজের সমস্ত মানুষের অধিকার ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্য অধিকার অপরিহার্য ।
4. সমাজ কল্যাণের সঙ্গে অধিকারের ধারণা জড়িত থাকে । বস্তুত , সামাজিক স্বার্থের বিরোধী হওয়া উচিত নয় ।
5. সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের সঙ্গে অধিকার পরিবর্তিত হয় ।
6. অধিকারের সঙ্গে কর্তব্য সম্পাদনের বিষয়টি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত । কর্তব্য পালন ছাড়া অধিকার ভোগ করা যায় না ।
অধিকার কয় প্রকার
প্রকৃতিগতভাবে অধিকারকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায় । এর মধ্যে একটি হল নৈতিক অধিকার এবং অন্যটি হল আইনগত অধিকার ।
নৈতিক অধিকার :
যেসব অধিকার সামাজিক ন্যায় নীতিবোধের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে তাদের নৈতিক অধিকার বলা হয় । প্রসঙ্গত বলা যায় , নৈতিক অধিকার ভঙ্গ করলে রাষ্ট্র কোনো শাস্তি দিতে পারে না । নৈতিক অধিকার রাষ্ট্রের দ্বারা স্বীকৃত এবং সংরক্ষিত নয় ।
আইনগত অধিকার :
যেসব অধিকার আইনের মাধ্যমে স্বীকৃত এবং সংরক্ষিত হয় তাদের আইনগত অধিকার বলে । আইনগত অধিকার লঙ্ঘিত হলে রাষ্ট্র শাস্তি দিতে পারে । যেমন ভোটদান করার অধিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অধিকার । এই অধিকারে কেউ হস্তক্ষেপ করলে রাষ্ট্র তাকে শাস্তি দিতে পারে ।
আইনগত অধিকারকে প্রধানত চারটি ভাগে বিভক্ত করা হয় । সেগুলি হল— ( 1 ) পৌর অধিকার , ( 2 ) রাজনৈতিক অধিকার , ( 3 ) অর্থনৈতিক অধিকার এবং ( 4 ) সামাজিক ও কৃষ্টিগত অধিকার ।