পরোক্ষ গণতন্ত্র কাকে বলে
Contents
পরোক্ষ গণতন্ত্র কাকে বলে
পরোক্ষ বা প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র বলতে সেই গণতন্ত্রকে বোঝায় যেখানে জনগণ তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে দেশ শাসনের কাজে অংশগ্রহণ করে । রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মিলের বক্তব্য অনুসারে , যে শাসন ব্যবস্থায় সমস্ত জনগণ বা জনগণের সংখ্যা গরিষ্ঠ অংশ নিজেদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে শাসন ক্ষমতাকে ব্যবহার করে থাকেন তাকে পরোক্ষ গণতন্ত্র বলা হয় ।
পরোক্ষ গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য
পরোক্ষ বা প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলি হলোㅡ
জনগণের পরোক্ষ অংশগ্রহণ :
পরোক্ষ গণতন্ত্রে জনগণ শাসনকাজে সরাসরি অংশগ্রহণ করে না । এখানে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণ পরোক্ষভাবে শাসনকাজে অংশ নিয়ে থাকে ।
রাষ্ট্রপতি শাসিত অথবা মন্ত্রী পরিষদ চালিত শাসন ব্যবস্থা :
পরোক্ষ বা প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের শাসন ব্যবস্থা রাষ্ট্রপতি শাসিত বা মন্ত্রীপরিষদ চালিত হতে পারে । রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি জনগণের দ্বারা পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হন । এক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি দেশের প্রকৃত শাসক হিসেবে কাজ করেন ।
অন্যদিকে মন্ত্রীপরিষদ চালিত শাসন ব্যবস্থায় প্রকৃত শাসক হল মন্ত্রী পরিষদ , কিন্তু এখানে একজন নিয়মতান্ত্রিক শাসকেরও অস্তিত্ব থাকে । এক্ষেত্রে মন্ত্রীপরিষদ বা দেশের প্রকৃত শাসক জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন । অন্যদিকে নিয়মতান্ত্রিক শাসক জনগণের প্রতিনিধিদের দ্বারা পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হন । রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থার উদাহরণ হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র । অন্যদিকে মন্ত্রীপরিষদ চালিত শাসন ব্যবস্থার উদাহরণ হল ভারত , গ্রেট ব্রিটেন প্রভৃতি ।
সংখ্যা গরিষ্ঠের সরকার :
পরোক্ষ বা প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রে মন্ত্রীপরিষদ চালিত শাসন ব্যবস্থায় আইন সভার নির্বাচিত সদস্যরা একটি নির্দিষ্ট কার্যকালের মেয়াদে সংখ্যা গরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সরকার গঠন করে থাকেন । এই কার্যকালের মেয়াদ শেষ হলে পুনরায় সাধারণ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয় । অবশ্য বিশেষ কারণে কার্যকালের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই মধ্যবর্তী নির্বাচনের প্রয়োজন দেখা দিতে পারে ।
প্রাপ্ত বয়স্কদের ভোটাধিকার :
পরোক্ষ গণতন্ত্রে সার্বিক প্রাপ্ত বয়স্কের ভোটাধিকার প্রথা চালু রয়েছে ।
জনগণের কাছে দায়বদ্ধতা :
পরোক্ষ গণতন্ত্রে সরকার তার যাবতীয় কাজকর্মের জন্য নির্বাচকমণ্ডলীর কাছে দায়বদ্ধ থাকে ।
একাধিক দলের উপস্থিতি :
পরোক্ষ গণতন্ত্রে একাধিক রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব অপরিহার্য ।
গণতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা :
পরোক্ষ গণতন্ত্রে গণসার্বভৌমিকতার আদর্শকে বাস্তবায়িত করার জন্য গণভোট , গণ উদ্যোগ , পদচ্যূতি প্রভৃতি প্রত্যক্ষ গণতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা থাকতে পারে ।