রাষ্ট্র বিজ্ঞান

জাতি কাকে বলে

জাতি কাকে বলে

লাতিন Natio শব্দ থেকে আসা ইংরেজি ‘ Nation ‘ শব্দটির বাংলা প্রতিশব্দ কী হওয়া উচিত তা নিয়ে মতবিরোধ থাকলেও শব্দটি বাংলায় ‘ জাতি ’ প্রতিশব্দের রূপ পেয়েছে । কিন্তু বাংলায় জাতপাত , বর্ণভেদ , ধর্ম , কুল ইত্যাদি বোঝাতে ‘ জাতি ‘ শব্দের প্রচলন রয়েছে । এই কারণে রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং ইংরেজি ‘ নেশন ‘ শব্দটি সরাসরি বাংলায় ব্যবহারের পক্ষপাতী ছিলেন । তাই , রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরিভাষা রূপে ‘ জাতি ‘ শব্দটির অর্থ ব্যাপক । 

বস্তুতপক্ষে ‘ জাতি ‘ হল সাধারণভাবে ‘ জনসমাজ ’ এর একটি চূড়ান্ত বিকশিত রূপ । জনসমাজের মধ্যে এক গভীর স্বাতন্ত্র্যবোধ দেখা দিলে জাতীয় জনসমাজের উদ্ভব ঘটে । অর্থাৎ ঐক্যবদ্ধ একটি জনগোষ্ঠী যখন অন্যান্য জনগোষ্ঠী থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র মনে করে তখন জাতীয় জনসমাজ গঠিত হয় । 

পরে জাতীয় জনসমাজের মধ্যে সুগভীর রাজনৈতিক চেতনার জন্ম হলে জাতীয় জনসমাজ জাতিতে রূপান্তরিত হয় । ক্রমে নিজেদের জন্য স্বতন্ত্র একটি রাষ্ট্র গঠনের ভিতর দিয়ে জাতির পূর্ণতা প্রাপ্তি ঘটে । লর্ড ব্রাইসের মতে , জাতি বলতে বোঝায় রাষ্ট্রনৈতিকভাবে সংগঠিত এমন এক জনসমাজ যা বহিঃশাসন থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত অথবা মুক্ত হওয়ার জন্য সচেষ্ট । 

কাজেই কোনো জাতীয় জনসমাজ যখন স্বতন্ত্র একটি রাষ্ট্র গঠনের আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়িত করতে সক্ষম হয় অথবা বাস্তবায়িত করার জন্য সচেষ্ট হয় তখনই জাতির আত্মপ্রকাশ ঘটে । রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হায়েসের মতে , একটি ঐক্যবদ্ধ জাতীয় জনসমাজ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমিকতা অর্জন করলে জাতি হিসেবে পরিগণিত হয় । 

error: Content is protected !!