ভারতে অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার
Contents
ভারতে অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার
ভারতের ভূগর্ভে মূল্যবান খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের সঞ্চয়ের পরিমাণ খুবই কম । কয়লা থাকলেও তা মাত্র কয়েকটি অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ । সম্ভাব্য জলবিদ্যুৎ শক্তির পরিমাণ বেশি হলেও অর্থনৈতিক সামর্থ্যের অভাবে তার উন্নতি ও ব্যবহার সীমিত ।
যেহেতু অচিরাচরিত বা অপ্রচলিত শক্তির উৎস ক্ষুদ্রাকারে ব্যবহার করা যায় , অর্থাৎ প্রচুর মূলধনের প্রয়োজন হয় না এবং এগুলি ব্যবহারে পরিবেশ দূষিত হয় না , তাই বর্তমানে সৌরশক্তি , বায়ুশক্তি , জোয়ার ভাটার শক্তি প্রভৃতি অফুরন্ত শক্তির উৎসগুলি ব্যবহারের ওপর বেশি গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে । ফলে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এইসব শক্তির উৎসগুলির ব্যবহার শুরু হয়েছে , যেমন—
সৌরশক্তি
শুধু সোলার কুকার বা সৌর লণ্ঠন নয় , বর্তমানে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বাণিজ্যিক ভাবে এটির ব্যবহার শুরু হয়েছে । যেমন — উত্তরপ্রদেশের মউ এবং কল্যাণপুরে দুটি ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন সৌরশক্তি প্রকল্প স্থাপিত হয়েছে ।
বায়ুশক্তি
বর্তমানে ভারতের বিভিন্ন অংশে প্রায় ১৮৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বায়ুশক্তির সাহায্যে উৎপাদিত হয় । এর মধ্যে গুজরাতের লম্ব-তে এশিয়ার বৃহত্তম বায়ুশক্তি চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে । এর উৎপাদন ক্ষমতা ২৮ মেগাওয়াট । পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন এলাকার বিভিন্ন দ্বীপে বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় । প্রসঙ্গত , ভারত সরকারের বিজ্ঞান ও কারিগরি বিভাগের সমীক্ষা অনুসারে , দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বায়ুপ্রবাহের যে সুবিধাজনক অবস্থা আছে , তাতে হাওয়া কল বা ‘ উইন্ড মিল ‘ এর মাধ্যমে প্রতি বছর প্রায় ৪৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যেতে পারে ।
জোয়ার ভাটার শক্তি
ভারতের বিস্তীর্ণ উপকূলভাগ থাকায় জোয়ার ভাটার সাহায্যে প্রায় ৯০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদন করা সম্ভব । কেরালা এবং গুজরাতে ইতিমধ্যেই এর ব্যবহার শুরু হয়েছে । আগামী দিনে সুন্দরবন অঞ্চলেও জোয়ার ভাটার সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে ।
সামুদ্রিক ঢেউয়ের শক্তি
সামুদ্রিক ঢেউ বা তরঙ্গশক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কেরালার উপকূলে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে ।
ভূতাপ শক্তি
ভূতাপ শক্তির সাহায্যে হিমাচল প্রদেশের মানিকরণ এলাকায় একটি ৫ কিলোওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে ।
জৈব শক্তি
গ্রামাঞ্চলে ইতিমধ্যেই জৈব গ্যাস বা গোবর গ্যাস প্লান্টের সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়েছে ।