গ্লাইকোলাইসিস কাকে বলে

গ্লাইকোলাইসিস কাকে বলে

শ্বসনের যে পর্যায়ে গ্লুকোজ অণু বিভিন্ন উৎসেচকের সহায়তায় ধারাবাহিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে অক্সিজেনের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতিতে আংশিক ভাবে জারিত হয়ে পাইরুভিক অ্যাসিড উৎপন্ন করে , তাকে গ্লাইকোলাইসিস বলে । 

গ্লাইকোলাইসিস কোশের সাইটোপ্লাজমে ঘটে । এম্বডেন ( Embden ) , মেয়ারহফ ( Mayerhof ) এবং পার্নেস ( Parnes ) নামক তিন বিজ্ঞানী প্রথম এর বিক্রিয়াটিকে পর্যবেক্ষণ করেন বলে তাঁদের নামানুসারে গ্লাইকোলাইসিস পর্যায়টিকে E.M.P পথ বলে । 

এই পর্যায়ে এক অণু 6 কার্বনযুক্ত যৌগ গ্লুকোজ বিভিন্ন উৎসেচকের সহায়তায় এবং কতকগুলি ধারাবাহিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে জারিত হয়ে 2 অণু 3 কার্বন যুক্ত পাইরুভিক অ্যাসিড এবং 2 অণু ATP উৎপন্ন করে । গ্লাইকোলাইসিসে উৎপন্ন পাইরুভিক অ্যাসিড শ্বসন প্রক্রিয়ার ( সবাত এবং অবাত ) একটি অন্তঃমধ্যবর্তী পদার্থ ।

গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়া

গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়াটির বিক্রিয়াগুলিকে প্রধান তিনটি পর্যায়ে ভাগ করা যেতে পারে— 

1. প্রথম পর্যায় : এই পর্যায়ে এক অণু গ্লুকোজ উৎসেচকের সহায়তায় এক অণু 6 কার্বন যুক্ত ফ্রুকটোজ -1 , 6 – ডাই ফসফেট তৈরি করে । পর্যায়টি সম্পন্ন করতে 2 অণু ATP প্রয়োজন হয় । 

2. দ্বিতীয় পর্যায় : এই পর্যায়ে ফ্রুকটোজ -1 , 6 – ডাইফসফেট ভেঙে এক অণু 3 – কার্বন যুক্ত 3 – ফসফোগ্লিসার‍্যালডিহাইড ও এক অণু 3 – কার্বনযুক্ত ডাইহাইড্রক্সি অ্যাসিটোন ফসফেট তৈরী করে । 

3. তৃতীয় পর্যায় : এই পর্যায়ে 3 – ফসফোগ্লিসার‍্যালডিহাইড ভেঙে 2 – ফসফোগ্লিসারিক অ্যাসিডের মাধ্যমে 2 অণু 3 কার্বন যুক্ত পাইরুভিক অ্যাসিড এবং 2 অণু ATP উৎপন্ন হয় । 

গ্লাইকোলাইসিস এর তাৎপর্য

( i ) এই প্রক্রিয়ায় গ্লুকোজ অণুতে আবদ্ধ ATP শক্তি মুক্ত হয় 

 ( ii ) এই প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন অন্তবর্তী পদার্থ পাইরুভিক অ্যাসিড , ক্রেবস চক্রের প্রাথমিক উপাদান রূপে ব্যবহৃত হয় । 

( iii ) গ্লাইকোলাইসিসে যে অল্প পরিমাণ তাপ নির্গত হয় তা অবাত শ্বসনকারী জীবের বিপাকীয় কার্য চালানোর প্রয়োজনীয় শক্তির উৎস ।

আরো পড়ুন : শ্বসন কাকে বলে

সবাত শ্বসন কাকে বলে

শ্বসন ও দহনের মধ্যে পার্থক্য

error: Content is protected !!